ছবিযুক্ত কাপড়ে সালাত আদায় হবে কি না?

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘আয়িশা (রাঃ)-এর নিকট একটা বিচিত্র রঙের পাতলা পর্দার কাপড় ছিল। তিনি তা ঘরের একদিকে পর্দা হিসেবে ব্যবহার করছিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমার সামনে থেকে তোমার এই পর্দা সরিয়ে নাও। কারণ সালাত আদায়ের সময় এর ছবিগুলো আমার সামনে ভেসে ওঠে। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৭)

আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: “আয়েশা—রাদিয়াল্লাহু আনহা—র ‘কিরাম’ ছিল, অর্থাৎ নকশি কাপড় ছিল, কারো মতে ‘কিরাম’ অর্থ রঙ্গিন কাপড়, সেটা দিয়ে তিনি ঘরের এক পাশ ঢেকে রেখেছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,

«أميطي -أزيلي- عني فإنه لا تزال تصاويره تعرض لي في صلاتي».

‘এটা আমার কাছ থেকে দূরে সরাও, কারণ তার ছবিগুলো আমার সালাতে ভেসে উঠছিল।”সহীহ বুখারির ব্যাখ্যা গ্রন্থ ‘ফতহুল বারি’: ১০/৩৯১।

আবুল কাসিম রহ. বলেন, “আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার কাছে ছবিযুক্ত একটা রঙিন কাপড় ছিল, সেটা তিনি ছোট রোম সৃষ্টিকারী ঘরের মাঝের (পার্টিশনের) দেয়ালের সঙ্গে টাঙ্গিয়ে রেখেছিলেন, যে দিকে ফিরে সালাত পড়তেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। একদা তিনি বললেন,

«أخّريه عني فإنه لا تزال تصاويره تعرض لي في صلاتي فأخرته فجعلته وسائد».

‘এটা আমার থেকে পেছনে হটাও, কারণ তার ছবিগুলো আমার সালাতে ভেসে উঠছিল, ফলে আয়েশা সেটা পেছনে সরিয়ে নেন এবং তা দিয়ে বালিশ তৈরি করেন।”সহীহ মুসলিম: ৩/১৬৬৮।

একই অর্থের আরেকটি ঘটনা, আবু দাউদ রহ. বলেন, “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাত পড়ার জন্যে কা‘বায় প্রবেশ করেন, সেখানে তিনি ভেড়ার দু’টি শিং দেখতে পান, সালাত শেষ করে উসমান আল-হাজাবিকে বলেন,

«إني نسيت أن آمرك أن تخمر القرنين فإنه ليس ينبغي أن يكون في البيت شيء يشغل المصلي».

‘আমি তোমাকে শিং দু’টি ঢেকে রাখার হুকুম দিতে ভুলে গিয়েছি। মনে রেখ, কাবার ভেতর এমন জিনিস থাকা বাঞ্ছনীয় নয় যা মুসল্লিকে অন্যমনস্ক করে।”আবু দাউদ, হাদীস নং ২০৩০। ‘সহীহ আল-জামি’, হাদীস নং ২৩০৪।

ইমাম মুসলিম বর্ণিত হাদীসে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটা ছবিযুক্ত ‘খামিসায়’ অর্থাৎ সেলাই করা চতুষ্কোণ বিশিষ্ট ছবিযুক্ত কাপড়ে সালাত পড়তে দাঁড়ালেন, কাপড়ের ছবিতে তার চোখ আটকে গেল, তাই সালাত শেষে বললেন,

«اذهبوا بهذه الخميصة إلى أبي جهم بن حذيفة و أتوني بأنبجانيّه -كساء ليس فيه تخطيط ولا تطريز ولا أعلام-، فإنها ألهتني آنفًا في صلاتي».» وفي رواية: ««شغلتني أعلام هذه».» وفي رواية: «كانت له خميصة لها علم، فكان يتشاغل بها في الصلاة».

‘তোমরা কাপড়টা আবু জাহাম ইবন হুযায়ফার কাছে নিয়ে যাও এবং একটা আনবিজানিয়া অর্থাৎ কারুকার্য বিহীন সাদাসিদে কাপড় নিয়ে আস। কারণ, এক্ষণে এটা আমাকে আমার সালাতে অন্যমনস্ক করে দিয়েছে।’ অপর বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেন, ‘এটার নকশাগুলি আমাকে অন্যমনস্ক করে দিয়েছে।’ অপর বর্ণনায় এসেছে, আয়েশা বলেন, ‘তার নকশাওয়ালা একটা কাপড় ছিল, সালাতে সেটা নিয়ে তিনি অন্যমনস্ক হয়ে যান।সহীহ মুসলিম: ১/৩৯১, হাদীস নং ৫৫৬। সবক’টি বর্ণনা সহীহ মুসলিম থেকে গৃহীত।