চলুন পর্দাকে জানি ও মানি এবং পরিবারে প্রতিষ্ঠিত করি তথা সমাজকে পবিত্র, শান্তিময় করি-১

 

মহান রাব্বুল আ’লামীন মানুষকে অত্যন্ত সুন্দর ও ভারসাম্যপূর্ণরূপে সৃষ্টি করে এই দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন।

আমি সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতর অবয়বে।  সুরা আত-তীন: ৪

এর অর্থ হচ্ছে মানুষকে এমন উন্নত পর্যায়ের চিন্তা, উপলব্ধি, জ্ঞান ও বুদ্ধি দান করা হয়েছে, যা অন্য কোন সৃষ্টিকে দেয়া হয়নি। আল্লাহ তা’লা বলেছেন:

হে মানুষ, কিসে তোমাকে তোমার মহামহিম পালনকর্তা সম্পর্কে বিভ্রান্ত করল? যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাকে সুবিন্যস্ত করেছেন এবং সুষম করেছেন। যিনি তোমাকে তাঁর ইচ্ছামত আকৃতিতে গঠন করেছেন। সুরা আল-ইনফিতার: ৬-৮

আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের মায়ের গর্ভ থেকে বের করেছেন। তোমরা কিছুই জানতে না। তিনি তোমাদেরকে কর্ণ, চক্ষু ও অন্তর দিয়েছেন, যাতে তোমরা অনুগ্রহ স্বীকার কর। সূরা আন-নাহল: ৭৮

মহান আল্লাহ এভাবেই আমাদের উন্নত করে সৃষ্টি করেছেন অত্যন্ত ভালবেসে ও যত্নের সাথে। সেই দয়ালু পালনকর্তাই আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রের জন্য কল্যাণকর বিধান আল-কুরআন ও আল্লাহর রাসূল সা:এর জীবনীতে বাস্তবভাবে পাঠিয়েছেন।

মহান আল্লাহ তা’লা বলেছেন:

এটি আল্লাহর কিতাব, এর মধ্যে কোন সন্দেহ নেই। এটি হিদায়াত সেই ‘মুত্তাকী’দের জন্য… সূরা আল-বাকারা: ২

অতঃপর যদি তোমাদের নিকট আমার পক্ষ থেকে কোন হিদায়াত পৌঁছে, তবে যে ব্যক্তি আমার সে হিদায়াত অনুসারে চলবে, তার উপর না কোন ভয় আসবে, না (কোন কারণে) তারা চিন্তাগ্রস্ত ও সন্তপ্ত হবে। আর যে ব্যক্তি তা অস্বীকার করবে এবং আমার নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার প্রয়াস পাবে, তারাই হবে জাহান্নামবাসী; অনন্তকাল সেখানে থাকবে। সূরা আল-বাকারা: ৩৮-৩৯

তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছেন এবং একে অন্যের উপর মর্যাদা সমুন্নত করেছেন, যাতে তোমাদেরকে এ বিষয়ে পরীক্ষা করেন, যা তোমাদেরকে দিয়েছেন। আপনার প্রতিপালক দ্রুত শাস্তি দাতা এবং তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, দয়ালু। সূরা আনআ’ম: ১৬৫

মহান রাব্বুল আ’লামীন আমাদের উন্নত করে সৃষ্টি করে এই দুনিয়ায় একটা উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে আমাদের পাঠিয়েছেন। মহান আল্লাহ তা’লা আমাদের কত বড় মর্যাদা দান করেছেন – একটু চিন্তা করে দেখুন। প্রতিনিধির কাজ হলো – সে যার প্রতিনিধি, তার আনুগত্য করে চলবে, তার আজ্ঞানুবর্তীতা, তার শাসন এবং তার উচ্চ ক্ষমতাকে মেনে নিয়ে সেই ভাবে চলবে। এই প্রতিনিধিত্বের মর্যাদা মহান আল্লাহ তা’লার কাছ থেকে প্রতিটি মানুষ ব্যক্তিগতভাবে লাভ করেছে। এজন্যে প্রতিটি ব্যক্তি নিজ নিজ স্থানে এই পদমর্যাদার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।

মহান আল্লাহ তা’লা বলেছেন:

ঐ দিনকে ভয় কর, যে দিন তোমরা আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে। অতঃপর প্রত্যেকেই তার কর্মের ফল পুরোপুরি পাবে এবং তাদের প্রতি কোন রূপ অবিচার করা হবে না। সূরা আল-বাকারা: ২৮১

যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রাসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে। সূরা আল-আহযাব: ২১

আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন কাজের আদেশ করলে কোন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন ক্ষমতা নেই যে, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আদেশ অমান্য করে সে প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় পতিত হয়।

সূরা আল-আহযাব: ৩৬

সাহাবী আজমাঈনদের জীবনের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় তাঁরা আখিরাতের ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাস এবং মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ভালবাসার মাধ্যমে আল্লাহ সুবহানা ওয়াতা’লা ও রাসূল সা: এর প্রতি আনুগত্যের উত্তম উদাহরণ রেখে গিয়েছেন। যার ফলে এই দুনিয়াতে থাকা অবস্থায়ই মহান আল্লাহ তা’লা তাঁদের জান্নাত প্রদানের ঘোষণা দিয়েছিলেন। সুবহানআল্লাহ। সাহাবী রা:গণ কিন্তু এত ব্যাখ্যা জানতে চাননি। যখনই কোন বিধান নাযিল হয়েছে তাঁরা “আমরা শুনলাম এবং মানলাম” এই মনোভাব নিয়ে আমল করে গিয়েছেন। মহান আল্লাহ তা’লা বলেছেন:

মুমিনদের বক্তব্য কেবল এ কথাই – যখন তাদের মধ্যে ফয়সালা করার জন্যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে তাদেরকে আহবান করা হয়, তখন তারা বলে: আমরা শুনলাম ও আদেশ মান্য করলাম। তারাই সফলকাম। যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে আল্লাহকে ভয় করে ও তাঁর শাস্তি থেকে বেঁচে থাকে তারাই কৃতকার্য। সূরা আন-নূর: ৫১-৫২

আর যখন আপনি তাদেরকে বলবেন, আল্লাহর নির্দেশের দিকে এসো – যা তিনি রাসূলের প্রতি নাযিল করেছেন, তখন আপনি মুনাফিকদেরকে দেখবেন, ওরা আপনার কাছ থেকে সম্পূর্ণভাবে সরে যাচ্ছে।

সূরা আন-নিসা: ৬১

না, হে মুহাম্মাদ! তোমার রবের কসম, এরা কখনো মু’মিন হতে পারে না যতক্ষণ এদের পারস্পরিক মতবিরোধের ক্ষেত্রে এরা তোমাকে ফায়সালাকারী হিসেবে মেনে না নেবে, তারপর তুমি যা ফায়সালা করবে তার ব্যাপারে নিজেদের মনের মধ্য কোনো প্রকার কুণ্ঠা ও দ্বিধার স্থান দেবে না, বরং সর্বান্তকরণে মেনে নেবে। সূরা আন-নিসা: ৬৫

মহান আল্লাহ তা’লাই পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন যে রাসূলের সা: দেয়া নির্দেশনা না মানলে পরিপূর্ণ মু’মিন হওয়া যাবে না। প্রিয় বোনেরা, এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা দিক যা আমাদের অবশ্যই অন্তরে ধারন ও বাস্তবে প্রতিফলন ঘটাতে হবে।

যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সা:এর আনুগত্য করবে তাঁদের দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণের কথা আল্লাহ তা’লা জানাচ্ছেন:

তোমাদের মধ্যে যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অনুগত হবে এবং সৎকর্ম করবে, আমি তাকে দু’বার পুরস্কার দেব এবং তার জন্য আমি সম্মানজনক রিযিক প্রস্তুত রেখেছি। সূরা আল-আহযাব: ৩১

আল্লাহ‌ ও রাসূলের হুকুম মেনে নাও, আশা করা যায় তোমাদের ওপর রহম করা হবে।সূরা আল-ইমরান: ১৩২

আর যে কেউ আল্লাহর হুকুম এবং তাঁর রাসূলের হুকুম মান্য করবে, তাহলে যাদের প্রতি আল্লাহ নেয়ামত দান করেছেন, সে তাদের সঙ্গী হবে। তারা হলেন নবী, ছিদ্দীক, শহীদ ও সৎকর্মশীল ব্যক্তিবর্গ। আর তাদের সান্নিধ্যই হল উত্তম।সূরা আন-নিসা: ৬৯

হে ঈমানদারগণ, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশ মান্য কর এবং শোনার পর তা থেকে বিমুখ হয়ো না। আর তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না, যারা বলে যে, আমরা শুনেছি, অথচ তারা শোনেনা। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’লার নিকট সমস্ত প্রাণীর তুলনায় তারাই মূক ও বধির, যারা উপলদ্ধি করে না।সূরা আনফাল: ২০-২২

নবী সা: বলেছেন, আমার উম্মতের সকলেই জান্নাতে প্রবেশ করবে, তবে যারা অস্বীকার করেছে (তারা ব্যতিত)। (উপস্থিত সাহাবাগণ) জিজ্ঞেস করলেন, কে অস্বীকার করে? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি আমার (দ্বীনের) আনুগত্য করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে, আর যে ব্যক্তি আমাকে অমান্য করবে সে-ই অস্বীকার করে। সহীহ বুখারী: ৬৭৭১

হে ঈমানদারগণ, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশ মান্য কর, যখন তোমাদের সে কাজের প্রতি আহবান করা হয়, যাতে রয়েছে তোমাদের জীবন। জেনে রেখো, আল্লাহ মানুষের এবং তার অন্তরের মাঝে অন্তরায় হয়ে যান। বস্তুতঃ তোমরা সবাই তাঁরই নিকট সমবেত হবে। আর তোমরা এমন ফাসাদ থেকে বেঁচে থাক যা বিশেষতঃ শুধু তাদের উপর পতিত হবে না যারা তোমাদের মধ্যে জালেম এবং জেনে রেখ যে, আল্লাহর আযাব অত্যন্ত কঠোর।

সূরা আনফাল: ২৪-২৫

‘ফাসাদ’ দ্বারা একটি সর্বব্যাপী সামাজিক অনাচারকে বুঝানো হয়েছে। এ অনাচার মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়ে মানুষের জীবনে দুর্ভাগ্য ও ধ্বংস ডেকে আনে। শুধুমাত্র যারা গোনাহ করে তারাই এ দুর্ভাগ্য ও ধ্বংসের শিকার হন না বরং এর শিকার তারাও হন, যারা এ পাপাচারে জর্জরিত সমাজে নির্লিপ্ত থেকে বসবাস করাকে সহ্য করে নেন।

উদাহরণস্বরূপ ধরে নেয়া যেতে পারে, যখন কোন শহরে ময়লা-আবর্জনা যেখানে সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে জমে থাকে তখন তার প্রভাবও থাকে সীমাবদ্ধ। এ অবস্থায় শুধুমাত্র যেসব লোক নিজেদের শরীরে ও ঘরোয়া পরিবেশে ময়লা আবর্জনা ভরে রেখেছে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু যখন সেখানে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ ব্যাপকভাবে জমে উঠতে থাকে এবং সারা শহরে ময়লার প্রতিকার ও নিষ্কাশন ব্যবস্থার জন্য একটি গোষ্ঠীও থাকে না তখন মাটি, পানি ও বাতাসের সর্বত্রই এর বিষক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে। ফলে এতে যে মহামারী দেখা দেয় তাতে যারা ময়লা-আবর্জনা ছড়ান, যারা নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন থাকেন এবং যারা ময়লা ও আবর্জনাময় পরিবেশে বসবাস করেন তারা সবাই আক্রান্ত হন। নৈতিক ময়লা ও আবর্জনার বেলায়ও ঠিক একই ব্যাপার ঘটে। যদি তা ব্যক্তিগত পর্যায়ে কিছু ব্যক্তির মধ্যে থাকে এবং সৎ ও সত্যনিষ্ঠ সমাজের প্রতিপত্তির চাপে কোণঠাসা ও নিস্তেজ অবস্থায় থাকেন, তাহলে তার ক্ষতিকর প্রভাব সীমাবদ্ধ থাকেন। কিন্তু যখন সমাজের সামষ্টিক বিবেক দুর্বল হয়ে পড়ে, নৈতিক অনিষ্টগুলোকে দমিয়ে রাখার ক্ষমতা তার আর থাকে না। সমাজ অঙ্গনে অসৎ, নির্লজ্জ ও দুশ্চরিত্র লোকেরা নিজেদের ভেতরের ময়লাগুলো প্রকাশ্যে উৎক্ষিপ্ত করতে ও ছড়াতে থাকেন। সৎলোকেরা নিষ্কর্মা হয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত সততা ও সদগুণাবলী নিয়েই সন্তুষ্ট থাকেন এবং সামাজিক ও সামষ্টিক দুষ্কৃতির ব্যাপারে নীরব থাকেন। তখন সামগ্রিকভাবে গোটা সমাজের ওপর দুর্ভোগ নেমে আসে। এ সময় এমন ব্যাপক দুর্যোগের সৃষ্টি হয়, যার ফলে বড়-ছোট, সবল-দুর্বল সবাই সমানভাবে বিপর্যস্ত ও বিধ্বস্ত হন।

আজ সেরকমই একটি বিষয় পর্দা বা শালীনতা নিয়ে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ; যা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানের অভাব ও বাস্তবে পালন না করা এবং অশ্লীলতা দমনে বাস্তব পদক্ষেপ না থাকার কারনে বেহায়াপনার যে ভয়াবহতা আমাদের সমাজে ছড়িয়ে পড়েছে এবং পড়ছে তা নিয়ে নিশ্চয়ই আপনি-আমি-সকলেই কম-বেশী বিপর্যস্ত ও চিন্তিত।

মহান আল্লাহ বলেছেন:

যারা পছন্দ করে যে, ঈমানদারদের মধ্যে ব্যভিচার প্রসার লাভ করুক, তাদের জন্যে ইহকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না।সূরা আন নূর: ১৯

আজ পরিকল্পিতভাবে আমাদের সমাজে অশ্লীলতার ব্যাপক প্রসার ঘটানো হচ্ছে। নবী-জীবনীর দিকে তাকালে দেখা যায়, মক্কায় রাসূল সা:এর দেয়া ইসলামের দিকে আহবানের প্রতি যেন লোকেরা মনোযোগ না দিতে পারে, আকৃষ্ট হতে না পারে, সে জন্য নাচ-গানের ও মদের আসর বসিয়ে দিতো ইসলামের শত্রুরা। আজ বাইরে যাওয়া লাগে না, প্রতিটি ঘরে ঘরে সেই ধরনের আসরই সবসময়ের জন্য আয়োজন করা সম্ভব এবং চলছেও। ঘরে বসেই মা-বাবা, সন্তানরা একটির পর আরেকটি টিভি চ্যানেল পাল্টিয়ে সেই আসরেই মত্ত থাকতে পারেন। একটুও কি মনে পড়ে না যে, ঐ মুহূর্তেই মৃত্যুর ফেরেশতা যদি রূহ কবয করতে আসেন তাহলে আমাদের সেই মৃত্যু কি ঈমানের সাথে হবে?

 

জীবিত থাকাবস্থায় তাদের চোখে-কানে-অন্তরে ইসলামের পবিত্র সুন্দর স্নিগ্ধতা স্থান করে নিতে পারে না। হয়তো কেউ একটু নিজের ইচ্ছে মত নামাযটা আদায় করেন, একটু কুরআন তিলাওয়াত করেন যেন কোনরকম নিজের সন্তুষ্টি আসে যে, আমি তো মুসলমান। কিন্তু মুসলমান বলতে কি বুঝায়, মহান আল্লাহ কি বলেছেন, তাঁর সাথে গভীর সম্পর্ক তৈরী করতে হলে কিভাবে চলা উচিত, নামাযে কি করতে হবে ইত্যাদি কোন কিছুই তাঁদের চিন্তাধারায় আসে না বা শয়তানই তা আসতে দেয় না।

আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন:

ঈমানের শাখা হচ্ছে সত্তরের কিছু বেশী এবং লজ্জা হলো ঈমানের একটি (বিশেষ) শাখা। সহীহ মুসলিম: ৬০

এটি কিন্তু একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সহীহ হাদীস।

হায়া বা লজ্জাশীলতা ঈমানের একটি অঙ্গ। ঈমানের একটি শাখা অপূর্ণ থাকলে ঈমান অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।

আজ আমাদের সমাজে শয়তান ঠিক এর বিপরীত শিক্ষা ছড়িয়ে দিচ্ছে। লজ্জাশীল ব্যক্তি তিনি নারী বা পুরুষ যিনিই হোন তাঁকে আনস্মার্ট বলে আখ্যায়িত করা হয়। গাইর মাহরাম (যার সাথে বিয়ে জায়েজ)-এর সাথে কথা না বললে বা প্রয়োজনে যদি শরীয়তের বিধান মেনে কথা বলে তখনি বলা হয় – সে তো কথাই বলতে পারে না – গেঁয়ো।

পরিবারগুলোতে ছেলে-মেয়েদের ছোটবেলা থেকেই বিজাতীয় অনুকরণে পোশাক পরিয়ে নাচ-গান, অভিনয়ে উৎসাহ দেয়া হয়; কোন অভিনেতা বা অভিনেত্রীর অশ্লীল সংলাপ বলতে পারাটা গর্বের সাথে উপস্থাপন করা হয়। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের অশ্লীল অনুষ্ঠান থেকে অপসংস্কৃতির অনুকরণে মা-বাবারা সন্তানদের সাথে একাত্ম হয়ে ব্যস্ত হয়ে যান সেই পোশাক কেনা-কাটায়। আমাদের কিছু মায়েরা সন্তানদের বাইরে মাঠে খেলতে পাঠান এমন পোশাক পরিয়ে যা শয়তানের কাজকে আরো সহজ করে দেয়। আপনারা নিশ্চয়ই একমত হবেন যে আজকাল শিশু সন্তানও যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। যৌন নির্যাতনের অনেকগুলো কারণের মধ্যে পোশাকের ধরন একটি অন্যতম কারণ। তাই লজ্জাশীলতা ও পর্দার বাস্তব উদাহরণ পরিবার থেকেই শিশু-কিশোর সন্তানদেরকে দিতে হবে।

নারী-পুরুষের পর্দার বিধান নিয়ে আমরা আলোচনাটি কয়েকটি পর্বে ভাগ করে নেই:

 

১। নারী ও পুরুষের পোশাক

২। নারী ও পুরুষের সতর

৩। নারী ও পুরুষের পর্দা