রামাদান মাসের জন্য প্রয়োজনীয় দু’আ

 

১। নতুন চাঁদ দেখে পড়ার দো‘আ

اللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُمَّ أَهِلَّهُ عَلَيْنَا بِالْأَمْنِ وَالْإِيمَانِ، وَالسَّلاَمَةِ وَالْإِسْلاَمِ، وَالتَّوْفِيقِ لِمَا تُحِبُّ رَبَّنَا وَتَرْضَى، رَبُّنَا وَرَبُّكَ اللَّهُ».

(আল্লা-হু আকবার, আল্লা-হুম্মা আহিল্লাহু ‘আলাইনা বিলআমনি ওয়ালঈমানি ওয়াস্‌সালা-মাতি ওয়াল-ইসলা-মি, ওয়াত্তাওফীকি লিমা তুহিব্বু রব্বানা ওয়া তারদ্বা, রব্বুনা ওয়া রব্বুকাল্লাহ)

“আল্লাহ সবচেয়ে বড়। হে আল্লাহ! এই নতুন চাঁদকে আমাদের উপর উদিত করুন নিরাপত্তা, ঈমান, শান্তি ও ইসলামের সাথে; আর হে আমাদের রব্ব! যা আপনি পছন্দ করেন এবং যাতে আপনি সন্তুষ্ট হন তার প্রতি তাওফীক লাভের সাথে। আল্লাহ আমাদের রব্ব এবং তোমার (চাঁদের) রব্ব।” সহীহুত তিরমিযী, ৩/১৫৭।

.২। ইফতারের সময় রোযাদারের দো‘আ

ذَهَبَ الظَّمَأُ وَابْتَلَّتِ العُرُوقُ، وَثَبَتَ الْأَجْرُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ

ক)  (যাহাবায-যামাউ ওয়াবতাল্লাতিল ‘উরূকু ওয়া সাবাতাল আজরু ইনশা-আল্লা-হু)।

 “পিপাসা মিটেছে, শিরাগুলো সিক্ত হয়েছে এবং আল্লাহ্‌ চান তো সওয়াব সাব্যস্ত হয়েছে।” আবূ দাউদ ২/৩০৬, নং ২৩৫৯, সহীহুল জামে‘৪/২০৯।

اللَّهُمَّ  إِنِّي أَسْأَلُكَ بِرَحْمَتِكَ الَّتِي وَسِعَتْ كُلَّ شَيْءٍ أَنْ تَغْفِرَ لِي

খ)  (আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা বিরহ্‌মাতিকাল্লাতী ওয়াসি‘আত কুল্লা শাই’ইন আন তাগফিরা লী)।

 “হে আল্লাহ! আপনার যে রহমত সকল কিছু পরিব্যাপ্ত করে রেখেছে তার উসীলায় আবেদন করি, আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।” ইবন মাজাহ্‌ ১/৫৫৭, নং ১৭৫৩; যা মূলত আবদুল্লাহ ইবন আমর রা দো‘আ।

৩। খাওয়ার পূর্বে দো‘আ

সেহরীর জন্য আলাদা কোন দু’আ জানা যায় না। এই দু’আটি খাওয়ার পূর্বে বলার জন্য।

 “যখন তোমাদের কেউ আহার শুরু করে তখন সে যেনো বলে,

«بِسْمِ اللَّهِ» (বিসমিল্লাহ)“আল্লাহর নামে।” আর শুরুতে বলতে ভুলে গেলে যেন বলে,

بسمِ اللَّهِ فِي أَوَّلِهِ وَآخِرِهِ» (বিস্‌মিল্লাহি ফী আওওয়ালিহী ওয়া আখিরিহী)।

“এর শুরু ও শেষ আল্লাহ্‌র নামে।” সহীহুত তিরমিযী, ২/১৬৭।

৪। আহার শেষ করার পর দো‘আ

 «الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَطْعَمَنِي هَذَا، وَرَزَقَنِيهِ، مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِنِّي وَلاَ قُوَّةٍ».

(আলহামদু লিল্লা-হিল্লাযী আত‘আমানী হা-যা ওয়া রাযাকানীহি মিন গাইরি হাউলিম মিন্নী ওয়ালা কুওয়াতিন)।

 “সকল প্রশংসা আল্লাহ্‌র জন্য, যিনি আমাকে এ আহার করালেন এবং এ রিযিক দিলেন যাতে ছিল না আমার পক্ষ থেকে কোনো উপায়, ছিল না কোনো শক্তি-সামর্থ্য।” সহীহুত তিরমিযী ৩/১৫৯।

৫। রোযাদারকে কেউ গালি দিলে যা বলবে

إِنِّي صَائِمٌ، إِنِّي صَائِمٌ (ইন্নি সা‘ইমুন, ইন্নি সা’ইমুন)

 “নিশ্চয় আমি রোযাদার, নিশ্চয় আমি রোযাদার।”বুখারী, (ফাতহুল বারীসহ) ৪/১০৩, নং ১৮৯৪

৬।  কোনো পরিবারের কাছে ইফতার করলে তাদের জন্য দো‘আ

أَفْطَرَ عِنْدَكُمُ الصَّائِمُونَ، وَأَكَلَ طَعَامَكُمُ الْأَبْرَارُ، وَصَلَّتْ عَلَيْكُمُ الْمَلاَئِكَةُ».

(আফত্বারা ইন্দাকুমুস সা-ইমূন, ওয়া আকালা ত্বা‘আ-মাকুমুল আবরা-রু, ওয়াসাল্লাত আলাইকুমুল মালা-ইকাহ)

 “আপনাদের কাছে রোযাদাররা ইফতার করুন, আপনাদের খাবার যেন সৎলোকেরা খায়, আর আপনাদের জন্য ফিরিশতারা ক্ষমা প্রার্থনা করুন।” সুনান আবি দাউদ ৩/৩৬৭, নং ৩৮৫৬

৭। শবে কদরের রাতে পড়ার দু’আ

اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي

আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আ’ফুউউন তুহিব্বুল আ’ফওয়া ফা’ফু আ’ন্নী

আয়েশা রা. বলেছেন: হে রাসূলুল্লাহ! যদি আমি জানি কোন রাতে লাইলাতুল ক্বদর তবে আমি সেই রাতে কি বলবো? তিনি সা. বললেন, বল: আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আ’ফুউউন তুহিব্বুল আ’ফওয়া ফা’ফু আ’ন্নী

হে আল্লাহ! তুমি বড়ই ক্ষমাকারী, বড়ই অনুগ্রহশীল।মাফ করে দেয়াই তুমি পছন্দ কর। তাই তুমি আমার গুনাহ মাফ করে দাও। আল জামে আত তিরমিযী

৮। তাহাজ্জুদ সালাতে দু’আ

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، سَمِعْتُ سُلَيْمَانَ بْنَ أَبِي مُسْلِمٍ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا قَامَ مِنَ اللَّيْلِ يَتَهَجَّدُ قَالَ ‏

 “‏ اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ، أَنْتَ نُورُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَمَنْ فِيهِنَّ، وَلَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ قَيِّمُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَمَنْ فِيهِنَّ، وَلَكَ الْحَمْدُ، أَنْتَ الْحَقُّ وَوَعْدُكَ حَقٌّ، وَقَوْلُكَ حَقٌّ، وَلِقَاؤُكَ حَقٌّ، وَالْجَنَّةُ حَقٌّ، وَالنَّارُ حَقٌّ، وَالسَّاعَةُ حَقٌّ، وَالنَّبِيُّونَ حَقٌّ، وَمُحَمَّدٌ حَقٌّ، اللَّهُمَّ لَكَ أَسْلَمْتُ وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ وَبِكَ آمَنْتُ، وَإِلَيْكَ أَنَبْتُ، وَبِكَ خَاصَمْتُ، وَإِلَيْكَ حَاكَمْتُ، فَاغْفِرْ لِي مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ، وَمَا أَسْرَرْتُ، وَمَا أَعْلَنْتُ، أَنْتَ الْمُقَدِّمُ وَأَنْتَ الْمُؤَخِّرُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ ـ أَوْ ـ لاَ إِلَهَ غَيْرُكَ ‏”‏‏.‏

 

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাহাজ্জুদের সলাতে দাঁড়াতেন, তখন বলতেনঃ হে আল্লাহ! সমস্ত প্রশংসা আপনারই জন্য, আপনি রক্ষক আসমান ও যমীনের এবং যা কিছু এগুলোর মধ্যে আছে, আপনিই তাদের নূর। আর যাবতীয় প্রশংসা শুধু আপনারই। আসমান যমীন এবং এ দু’এর মধ্যে যা আছে, এসব কিছুকে সুদৃঢ় ও কায়িম রাখার একমাত্র মালিক আপনিই। আর সমূহ প্রশংসা একমাত্র আপনারই। আপনিই সত্য, আপনার ওয়াদা সত্য, আখিরাতে আপনার সাক্ষাৎ লাভ করা সত্য, বেহেশ্‌ত সত্য, দোযখ সত্য, ক্বিয়ামাত সত্য, পয়গম্বরগণ সত্য এবং মুহাম্মাদ সত্য। হে আল্লাহ! আপনারই কাছে আত্মসমর্পণ করেছি। আমি একমাত্র আপনারই উপর ভরসা রাখি। একমাত্র আপনারই উপর ঈমান এনেছি। আপনারই দিকে ফিরে চলছি। শত্রুদের সঙ্গে আপনারই সন্তুষ্টির জন্য শত্রুতা করি। আপনারই নিকট বিচার চাই। অতএব আমার আগের পরের এবং লুক্কায়িত প্রকাশ্য গুনাহসমূহ আপনি ক্ষমা করে দিন। আপনি কোন ব্যক্তিকে অগ্রসরমান করেন, আর কোন ব্যক্তিকে পশ্চাদপদ করেন, আপনি ব্যতীত সত্যিকারের কোন মাবূদ নেই। সহিহ বুখারি(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৭২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৬৫)

 ঘুম থেকে উঠে  সূরা আলে ইমরানের শেষের ১০ আয়াত পাঠ করা সুন্নত। (বুখারী ১৮৩নং, মুসলিম, সহীহ)