দুনিয়ার জীবন-২ (উত্তর)

 

 

মহান আল্লাহ এই দুনিয়ার জীবনের চিত্র কেমন হওয়া দরকার বা আমাদের কাছে দুনিয়ার জীবনের অবস্থান কিরুপ হওয়া প্রয়োজন, তার দিকনির্দেশনা বিভিন্ন সূরায় উপমার সাহায্যে সুন্দর ও সহজবোধ্য করে উপস্থাপন করেছেন।

মহান আল্লাহ আমাদের সৃষ্টিকর্তা, তিনি জানেন কিভাবে আমাদেরকে বুঝাতে হবে এবং দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যান কোন পথে।

ছবি ব্লগ-২ এর উত্তর সূরা হাদীদের ২০নং আয়াত।

এই সূরার  পূর্বের কিছু আয়াত তুলে ধরা হলো যা মুমিন ও মুনাফিক নর-নারীর মাঝে কথোপকথন মহান আল্লাহ তুলে ধরেছেন।

ছোট্ট একটি বাস্তব উদাহরন দেই, আপনি যখন দুনিয়াতে কষ্ট করে একটি সম্মাননা পেতে যাচ্ছেন এবং বড় একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত করা হয়েছে আপনাকে, তখন আপনারই খুব কাছের বন্ধু বা কলিগ বললো আমাকে একটু শরীক করে নাও তোমার সাথে, তখন আপনি যেমন বলে উঠবেন, না! তোমাকে কত বলেছি একটু কষ্ট করে কাজ করো তাহলে তুমিও পাবে, তখনতো আমার কথা শুননাই, হেলা করে সময় নষ্ট করেছো, এখন তুমি নিজের পথে যাও, আমি কিছু দিতে পারবো না ইত্যাদি।

চূড়ান্ত ফয়সালার দিনটি হবে আরো কঠিন তখন সবাই বুঝবে যে এই জীবন থেকে আর ফিরে যাওয়া যাবে না, তাই এখানে কোনভাবেই নিজের লাভ কাউকে দিবে না। যারা দুনিয়ার জীবনে সুযোগ সন্ধানী হয়ে দুনিয়ার লাভ লোকসানের হিসেব কষতে যেয়ে আখেরাতের কথা চিন্তা করেনি, পরে করবো ইত্যাদি বলে আল্লাহর স্মরন ও পথ থেকে নিত্যদিনের অবস্থায় দূরে থেকেছে তারা মুমিনদের কাছে কি চাইবে দেখুন মহান আল্লাহ পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন এই সূরায়। এটা জানানোর পর দুনিয়ার জীবনের চিত্র তুলে ধরেছেন যা ছবি ব্লগের ২০নং আয়াতে আছে। চলুন এবার মুমিন ও মুনাফিকের কথাগুলো জানি এবং সময় থাকতেই নিজেদের সংশোধন করে নেই। আল্লাহ জানিয়েছেন–

“যেদিন আপনি দেখবেন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীদেরকে, তাদের সম্মুখ ভাগে ও ডানপার্শ্বে তাদের জ্যোতি ছুটোছুটি করবে বলা হবেঃ আজ তোমাদের জন্যে সুসংবাদ জান্নাতের, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত, তাতে তারা চিরকাল থাকবে। এটাই মহাসাফল্য।

যেদিন কপট বিশ্বাসী(মুনাফিক) পুরুষ ও কপট বিশ্বাসিনী(মুনাফিক) নারীরা মুমিনদেরকে বলবেঃ তোমরা আমাদের জন্যে অপেক্ষা কর, আমরাও কিছু আলো নিব তোমাদের জ্যোতি থেকে। বলা হবেঃ তোমরা পিছনে ফিরে যাও ও আলোর খোঁজ কর। অতঃপর উভয় দলের মাঝখানে খাড়া করা হবে একটি প্রাচীর, যার একটি দরজা হবে। তার অভ্যন্তরে থাকবে রহমত এবং বাইরে থাকবে আযাব। তারা মুমিনদেরকে ডেকে বলবেঃ আমরা কি তোমাদের সাথে ছিলাম না? তারা বলবেঃ হ্যাঁ কিন্তু তোমরা নিজেরাই নিজেদেরকে বিপদগ্রস্ত করেছ। প্রতীক্ষা করেছ, সন্দেহ পোষণ করেছ এবং অলীক আশার পেছনে বিভ্রান্ত হয়েছ, অবশেষে আল্লাহর আদেশ পৌঁছেছে। এই সবই তোমাদেরকে আল্লাহ সম্পর্কে প্রতারিত করেছে।

অতএব, আজ তোমাদের কাছ থেকে কোন মুক্তিপন গ্রহণ করা হবে না। এবং কাফেরদের কাছ থেকেও নয়। তোমাদের সবার আবাসস্থল জাহান্নাম। সেটাই তোমাদের সঙ্গী। কতই না নিকৃষ্ট এই প্রত্যাবর্তন স্থল।

যারা মুমিন, তাদের জন্যে কি আল্লাহর স্মরণে এবং যে সত্য অবর্তীর্ণ হয়েছে, তার কারণে হৃদয় বিগলিত হওয়ার সময় আসেনি? তারা তাদের মত যেন না হয়, যাদেরকে পূর্বে কিতাব দেয়া হয়েছিল। তাদের উপর সুদীর্ঘকাল অতিক্রান্ত হয়েছে, অতঃপর তাদের অন্তঃকরণ কঠিন হয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশই পাপাচারী।

তোমরা জেনে রাখ, আল্লাহই ভূ-ভাগকে তার মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবিত করেন। আমি পরিস্কারভাবে তোমাদের জন্যে আয়াতগুলো ব্যক্ত করেছি, যাতে তোমরা বোঝ।

নিশ্চয় দানশীল ব্যক্তি ও দানশীলা নারী, যারা আল্লাহকে উত্তমরূপে ধার দেয়, তাদেরকে দেয়া হবে বহুগুণ এবং তাদের জন্যে রয়েছে সম্মানজনক পুরস্কার।

আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে তারাই তাদের পালনকর্তার কাছে সিদ্দীক ও শহীদ বলে বিবেচিত। তাদের জন্যে রয়েছে পুরস্কার ও জ্যোতি এবং যারা কাফের ও আমার নিদর্শন অস্বীকারকারী তারাই জাহান্নামের অধিবাসী হবে। (সূরা হাদীদ ১২-১৯)

https://www.youtube.com/watch?v=1oLj6yPGXic

https://www.youtube.com/watch?v=oeTqSjKYWbc