দুনিয়ার জীবন-১ (উত্তর)

 

 

 

জীবনের কত মূল্যবান সময় বিভিন্ন ঘটনায় চলে গিয়ে স্মৃতির পাতায় জমে যাচ্ছে। অনেকে এই স্মৃতিগুলোকে এতোবেশী আগলে রেখে চলেন যে, বাস্তব জীবনের বর্তমানকে এড়িয়ে যেতে চান বা মানতে পারেন না।

ইসলাম স্মৃতিকে ধরে জীবনের চলমান গতিকে রোধ করার শিক্ষা দেয় নি। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে বর্তমানকে সুন্দর অর্থবহ করে মহান রবের আরো অনুগত হয়ে চলার মাধ্যমেই স্মৃতির শিক্ষা। ভুলকে ভুল বলেই শুধরে নিতে হবে এবং অবশ্যই তা হবে অহীর জ্ঞানের আলোকে।

ছবি ব্লগের দুনিয়ার জীবন সম্পর্কিত  আয়াতের প্রশ্নের উত্তর সূরা মুমিনুন ( ১১২-১১৫)।

সেই আয়াতের পূর্বের ও পরের কিছু অংশ তুলে ধরা হলো। সূরা মুমিনুন ৯৯-১১৮ নং আয়াত।

এখানে মহান আল্লাহ এতো সুন্দর ও সহজ করে আমাদের সামনে দুটো গ্রুপের অবস্থা তুলে ধরেছেন। একটি গ্রুপ যারা দুনিয়াকে সব চাওয়া পাওয়ার জায়গা হিসেবে নিয়ে মহান আল্লাহর নির্দেশনার কথা,আখেরাতে আবার মহান রবের সামনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর কথা ভুলে গিয়েছিলো ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়। তাদের কথা আল্লাহ এইভাবে বলেছেন–

যখন তাদের কারও কাছে মৃত্যু আসে, তখন সে বলেঃ হে আমার পালণকর্তা! আমাকে পুনরায় (দুনিয়াতে ) প্রেরণ করুন। যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি, যা আমি করিনি। কখনই নয়, এ তো তার একটি কথার কথা মাত্র। তাদের সামনে পর্দা আছে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত। অতঃপর যখন শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে, সেদিন তাদের পারস্পরিক আত্নীয়তার বন্ধন থাকবে না এবং একে অপরকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে না। যাদের পাল্লা ভারী হবে, তারাই হবে সফলকাম, এবং যাদের পাল্লা হাল্কা হবে তারাই নিজেদের ক্ষতিসাধন করেছে, তারা দোযখেই চিরকাল বসবাস করবে। আগুন তাদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে এবং তারা তাতে বীভৎস আকার ধারন করবে। তোমাদের সামনে কি আমার আয়াত সমূহ পঠিত হত না? তোমরা তো সেগুলোকে মিথ্যা বলতে। তারা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা দূর্ভাগ্যের হাতে পরাভূত ছিলাম এবং আমরা ছিলাম বিভ্রান্ত জাতি। হে আমাদের পালনকর্তা! এ থেকে আমাদেরকে উদ্ধার কর; আমরা যদি পুনরায় তা করি, তবে আমরা গোনাহগার হব।

আল্লাহ বলবেনঃ তোমরা ধিকৃত অবস্থায় এখানেই পড়ে থাক এবং আমার সাথে কোন কথা বলো না। (৯৯-১০৮)

লক্ষ্য করুন এতো সুন্দর কথোপকথন যা আমাদের বর্তমান অবস্থার সাথে একদম মিলে যায়। নিজেদের অবস্থাকে এই আয়াতগুলোর সাথে মিলিয়ে দেখি এবং সচেতন হই,আশাহত না হয়ে মহান আল্লাহর উপর ভরসা করে সবরের পথে অটল থাকি!

আল্লাহ বলেছেন-

“আমার বান্দাদের একদল বলতঃ হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। অতএব তুমি আমাদেরকে ক্ষমা কর ও আমাদের প্রতি রহম কর। তুমি তো দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু।

অতঃপর তোমরা তাদেরকে ঠাট্টার পাত্ররূপে গ্রহণ করতে। এমনকি, তা তোমাদেরকে আমার স্মরণ ভুলিয়ে দিয়েছিল এবং তোমরা তাদেরকে দেখে পরিহাস করতে। আজ আমি তাদেরকে তাদের সবরের কারণে এমন প্রতিদান দিয়েছি যে, তারাই সফলকাম।

আল্লাহ বলবেনঃ তোমরা পৃথিবীতে কতদিন অবস্থান করলে বছরের গণনায়? তারা বলবে, আমরা একদিন অথবা দিনের কিছু অংশ অবস্থান করেছি। অতএব আপনি গণনাকারীদেরকে জিজ্ঞেস করুন।

আল্লাহ বলবেনঃ তোমরা তাতে অল্পদিনই অবস্থান করেছ, যদি তোমরা জানতে? তোমরা কি ধারণা কর যে, আমি তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার কাছে ফিরে আসবে না? অতএব শীর্ষ মহিমায় আল্লাহ, তিনি সত্যিকার মালিক, তিনি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই। তিনি সম্মানিত আরশের মালিক। যে কেউ আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যকে ডাকে, তার কাছে যার সনদ নেই, তার হিসাব তার পালণকর্তার কাছে আছে। নিশ্চয় কাফেররা সফলকাম হবে না।

বলূনঃ হে আমার পালনকর্তা, ক্ষমা করুন ও রহম করুন। রহমকারীদের মধ্যে আপনি শ্রেষ্ট রহমকারী”। (১০৯-১১৮)

চলুন আমরাও মহান আল্লাহর শেখানো এই দু’আ পড়ি-

وَقُلْ رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ

বলূনঃ হে আমার পালনকর্তা, ক্ষমা করুন ও রহম করুন। রহমকারীদের মধ্যে আপনি শ্রেষ্ট রহমকারী।

So say: “O my Lord! grant Thou forgiveness and mercy for Thou art the Best of those who show mercy!”