২য় রুকুতে এসেছে মুত্তাকীদের পরিনতি সম্পর্কে উল্লেখ এসেছে।
দুনিয়াতে যা ছিল আখেরাতে জান্নাতেও সেই সকল থাকবে তবে আরো উন্নত ও পরিচ্ছন্নভাবে। এমন কিছু আরো থাকবে যা কোন মন কল্পনা করতে পারেনি।
চিরস্থায়ী আনন্দের জন্য যার যা প্রয়োজন মহান আল্লাহ তা জান্নাতের অতিথির জন্য প্রস্তুত রেখেছেন। সুবহান আল্লাহ।
বাগান, ফল মূল,চির যৌবনা সংগীকে পাবে। এতো সুন্দর লোভনীয় করে মহান আল্লাহ সত্য উপহারগুলো জানিয়ে দিয়েছেন যা ব্যক্তি মুত্তাকী হলেই অবশ্যই পাবে, অথচ দুনিয়ার শয়তানের লোভে সাময়িক আনন্দ লাভের জন্য অবৈ্ধ প্রেম পরকীয়া বা বিপরীত লিংগের সাথে অশ্লিল সম্পর্কের জন্য প্রতিদিন কত আবাল বৃদ্ধ বনিতা নিজেদের ধ্বংস করে দিচ্ছে এবং পরিবারে অশান্তি নিয়ে আসছে। মহান আল্লাহ এই সমাজকে হেফাজত করুন।
হাশরের ময়দানে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে যাবে।
কখনো নয়, যখন পৃথিবীকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করা হবে পরিপূর্ণভাবে। আর তোমার রব ও ফেরেশতাগণ উপস্থিত হবেন সারিবদ্ধভাবে। আর সেদিন জাহান্নামকে উপস্থিত করা হবে, সেদিন মানুষ স্মরণ করবে, কিন্তু সেই স্মরণ তার কী উপকারে আসবে? সে বলবে, হায়! যদি আমি কিছু আগে পাঠাতাম আমার এ জীবনের জন্য!’(সূরা আল ফাজর, আয়াত ২১-২৪)
আল্লাহ তাআলা বলেন:
সেদিন তারা আহ্বানকারীর (ফেরেশতার) অনুসরণ করবে। এর কোন এদিক সেদিক হবে না এবং পরম করুণাময়ের সামনে সকল আওয়াজ নিচু হয়ে যাবে। তাই মৃদু আওয়াজ ছাড়া তুমি কিছুই শুনতে পাবে না।
(সূরা তা-হা, আয়াত ১০৮)
আর চিরঞ্জীব, চিরপ্রতিষ্ঠিত সত্তার সামনে সকলেই অবনত হবে। আর সে অবশ্যই ব্যর্থ হবে যে যুল্ম বহন করবে। এবং যে মুমিন অবস্থায় ভাল কাজ করবে সে কোন জুলুম বা ক্ষতির আশংকা করবে না।
(সূরা তা-হা আয়াত ১১১-১১২)
সাহল ইবনে সাআদ রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: কেয়ামতের দিবসে মানুষকে সাদা পোড়ামাটি রংয়ের উদ্ভিদহীন একটি যমীনে একত্র করা হবে। যেখানে কারো জন্য কোন আলামত থাকবে না। (বর্ণনায়: মুসলিম, হাদীস নং ২১৫০)
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলতে শুনেছি তিনি বলতেন: কেয়ামতের দিন মানুষকে উলঙ্গ, খালি পায়ে ও খতনাবিহীন অবস্থায় একত্র করা হবে। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! পুরুষ ও নারী সকলকে একত্র করা হবে আর একজন অপর জনের দিকে তাকাবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: হে আয়েশা! সেদিন অবস্থা এমন ভয়াবহ হবে যে একজন অপর জনের দিকে তাকানোর ফুরসত পাবে না। (বর্ণনায়: বুখারী ও মুসলিম)
এখানে রুহ বলতে জিবরাঈল আ. কে বুঝানো হয়েছে। মহান রবের দরবারে তাঁর মর্যাদা উন্নত হওয়ার কারনে অন্যান্য ফেরেশতা থেকে আলাদা করে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইয়া তাকাল্লামুনা يَتَكَلَّمُونَ অর্থ কথা বলতে পারা কিন্তু সূরাতে এটার পূর্বে লা শব্দ দিয়ে না বাচক করে দিয়েছে অর্থাৎ কেউ কোন কথা বলতে পারবে না সেই হাশরের ময়দানে ও ছোয়াওয়াবা صَوَابًا বলতে সঠিক কথা-ই বুঝানো হয়েছে।
এখানে যে বিষয়কে তুলে ধরা হয়েছে তা হলো হাশরের মাঠে সুপারিশের কথা যা একমাত্র মহান রবের অনুমতি দিলেই হতে পারে এবং তা হবে সঠিক সুপারিশ যোগ্যতাসম্পন্ন লোকের জন্য।
আযাবান ক্বরীবা عَذَابًا قَرِيبًا বলতে নিকটতম আযাব বুঝানো হয়েছে। মৃত্যুকালীন সময়ে মানুষের দুনিয়ার জীবনের সময়কে নিতান্ত নগন্য মনে হবে। মৃত্যুর পর যখন শুধু রহ থাকবে তখন থেকে হাশরে আবার জাগ্রত হওয়া পর্যন্ত সময় সম্পর্কে কোন চেতনা ও অনুভূতি থাকবেনা।হাজার হাজার বছর পরে হাশরের ময়দানে তাকে জীবিত করা হয়েছে তাও তার অনুভূত হবে না সে মনে করবে এই মাত্র তার ঘুম ভেংগেছে।
মহান আল্লাহ বলেছেন-
আর শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে, তৎক্ষণাৎ তারা কবর থেকে তাদের রবের দিকে ছুটে আসবে। তারা বলবে, হায় আমাদের দুর্ভোগ! কে আমাদেরকে আমাদের নিদ্রাস্থল থেকে উঠালো? (তাদেরকে বলা হবে) এটা তো তা যার ওয়াদা পরম করুনাময় করেছিলেন এবং রাসূলগণ সত্য বলেছিলেন। তা ছিল শুধুই একটি বিকট আওয়াজ, ফলে তৎক্ষণাৎ তাদের সকলকে আমার সামনে উপস্থিত করা হবে। সুতরাং আজ কাউকেই কোন যুলম করা হবে না এবং তোমরা যা আমল করছিলে শুধু তারই প্রতিদান তোমাদের দেয়া হবে।
(সূরা ইয়াসীন, আয়াত ৫১-৫৪)
হাশরের মাঠের ভয়াবহতা দেখে তখন যারা কাফির অন্যায়কারী অবিশ্বাসী ছিল তারা বলতে থাকবে কেন দুনিয়ায় জন্ম নিয়েছিলাম বা মাটি হয়ে যেতাম এখন।
প্রশ্ন ও উত্তর
সূরা আন নাবা
২য় রুকু
১। এই সূরার ২য় রুকুর বিষয় বস্তু কি?
২। জান্নাতের কোন কোন নি’আমতের উল্লেখ এসেছে এখানে?
৩। কোথায় সকলে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে যাবে?
৪। রুহ বলতে কাকে নির্দেশ করা হয়েছে?
৫। এখানে ইয়া তাকাল্লামুনা يَتَكَلَّمُونَ ও ছোয়াওয়াবা صَوَابًا বলতে কি বুঝানো হয়েছে?
৬। এখানে আযাবান ক্বরীবা عَذَابًا قَرِيبًا বলতে কি বুঝানো হয়েছে?
৭। إِنَّا أَنْذَرْنَاكُمْ عَذَابًا قَرِيبًا يَوْمَ يَنْظُرُ الْمَرْءُ مَا قَدَّمَتْ يَدَاهُ وَيَقُولُ الْكَافِرُ يَا لَيْتَنِي كُنْتُ تُرَابًا শেষের আয়াতে কি বলা হয়েছে?
৮। এই রুকু থেকে কি শিক্ষা পাওয়া যায়?
৯। আমাদের করনীয় কি এই শিক্ষার আলোকে?
দয়াময় মেহেরবান আল্লাহ’তায়ালার নামে
উত্তরঃ সূরা আন নাবা -২য় রুকু
১। ২য় রুকুতে এসেছে মুত্তাকীদের পরিনতি সম্পর্কে উল্লেখ এসেছে।
২। দুনিয়াতে যা ছিল আখেরাতে জান্নাতেও সেই সকল থাকবে তবে আরো উন্নত ও পরিচ্ছন্নভাবে। এমন কিছু আরো থাকবে যা কোন মন কল্পনা করতে পারেনি।
চিরস্থায়ী আনন্দের জন্য যার যা প্রয়োজন মহান আল্লাহ তা জান্নাতের অতিথির জন্য প্রস্তুত রেখেছেন। সুবহান আল্লাহ।
বাগান, ফল মূল,চির যৌবনা সংগীকে পাবে। এতো সুন্দর লোভনীয় করে মহান আল্লাহ সত্য উপহারগুলো জানিয়ে দিয়েছেন যা ব্যক্তি মুত্তাকী হলেই অবশ্যই পাবে, অথচ দুনিয়ার শয়তানের লোভে সাময়িক আনন্দ লাভের জন্য অবৈ্ধ প্রেম পরকীয়া বা বিপরীত লিংগের সাথে অশ্লিল সম্পর্কের জন্য প্রতিদিন কত আবাল বৃদ্ধ বনিতা নিজেদের ধ্বংস করে দিচ্ছে এবং পরিবারে অশান্তি নিয়ে আসছে। মহান আল্লাহ এই সমাজকে হেফাজত করুন।
৩। হাশরের ময়দানে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে যাবে।
কখনো নয়, যখন পৃথিবীকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করা হবে পরিপূর্ণভাবে। আর তোমার রব ও ফেরেশতাগণ উপস্থিত হবেন সারিবদ্ধভাবে। আর সেদিন জাহান্নামকে উপস্থিত করা হবে, সেদিন মানুষ স্মরণ করবে, কিন্তু সেই স্মরণ তার কী উপকারে আসবে? সে বলবে, হায়! যদি আমি কিছু আগে পাঠাতাম আমার এ জীবনের জন্য!’(সূরা আল ফাজর, আয়াত ২১-২৪)
আল্লাহ তাআলা বলেন:
সেদিন তারা আহ্বানকারীর (ফেরেশতার) অনুসরণ করবে। এর কোন এদিক সেদিক হবে না এবং পরম করুণাময়ের সামনে সকল আওয়াজ নিচু হয়ে যাবে। তাই মৃদু আওয়াজ ছাড়া তুমি কিছুই শুনতে পাবে না। (সূরা তা-হা, আয়াত ১০৮)
আর চিরঞ্জীব, চিরপ্রতিষ্ঠিত সত্তার সামনে সকলেই অবনত হবে। আর সে অবশ্যই ব্যর্থ হবে যে যুল্ম বহন করবে। এবং যে মুমিন অবস্থায় ভাল কাজ করবে সে কোন জুলুম বা ক্ষতির আশংকা করবে না।
(সূরা তা-হা আয়াত ১১১-১১২)
সাহল ইবনে সাআদ রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: কেয়ামতের দিবসে মানুষকে সাদা পোড়ামাটি রংয়ের উদ্ভিদহীন একটি যমীনে একত্র করা হবে। যেখানে কারো জন্য কোন আলামত থাকবে না। (বর্ণনায়: মুসলিম, হাদীস নং ২১৫০)
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলতে শুনেছি তিনি বলতেন: কেয়ামতের দিন মানুষকে উলঙ্গ, খালি পায়ে ও খতনাবিহীন অবস্থায় একত্র করা হবে। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! পুরুষ ও নারী সকলকে একত্র করা হবে আর একজন অপর জনের দিকে তাকাবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: হে আয়েশা! সেদিন অবস্থা এমন ভয়াবহ হবে যে একজন অপর জনের দিকে তাকানোর ফুরসত পাবে না। (বর্ণনায়: বুখারী ও মুসলিম)
৪। এখানে রুহ বলতে জিবরাঈল আ. কে বুঝানো হয়েছে। মহান রবের দরবারে তাঁর মর্যাদা উন্নত হওয়ার কারনে অন্যান্য ফেরেশতা থেকে আলাদা করে উল্লেখ করা হয়েছে।
৫। ইয়া তাকাল্লামুনা يَتَكَلَّمُونَ অর্থ কথা বলতে পারা কিন্তু সূরাতে এটার পূর্বে লা শব্দ দিয়ে না বাচক করে দিয়েছে অর্থাৎ কেউ কোন কথা বলতে পারবে না সেই হাশরের ময়দানে ও ছোয়াওয়াবা صَوَابًا বলতে সঠিক কথা-ই বুঝানো হয়েছে।
এখানে যে বিষয়কে তুলে ধরা হয়েছে তা হলো হাশরের মাঠে সুপারিশের কথা যা একমাত্র মহান রবের অনুমতি দিলেই হতে পারে এবং তা হবে সঠিক সুপারিশ যোগ্যতাসম্পন্ন লোকের জন্য।
৬। আযাবান ক্বরীবা عَذَابًا قَرِيبًا বলতে নিকটতম আযাব বুঝানো হয়েছে। মৃত্যুকালীন সময়ে মানুষের দুনিয়ার জীবনের সময়কে নিতান্ত নগন্য মনে হবে। মৃত্যুর পর যখন শুধু রহ থাকবে তখন থেকে হাশরে আবার জাগ্রত হওয়া পর্যন্ত সময় সম্পর্কে কোন চেতনা ও অনুভূতি থাকবেনা।হাজার হাজার বছর পরে হাশরের ময়দানে তাকে জীবিত করা হয়েছে তাও তার অনুভূত হবে না সে মনে করবে এই মাত্র তার ঘুম ভেংগেছে। মহান আল্লাহ বলেছেন-
আর শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে, তৎক্ষণাৎ তারা কবর থেকে তাদের রবের দিকে ছুটে আসবে। তারা বলবে, হায় আমাদের দুর্ভোগ! কে আমাদেরকে আমাদের নিদ্রাস্থল থেকে উঠালো? (তাদেরকে বলা হবে) এটা তো তা যার ওয়াদা পরম করুনাময় করেছিলেন এবং রাসূলগণ সত্য বলেছিলেন। তা ছিল শুধুই একটি বিকট আওয়াজ, ফলে তৎক্ষণাৎ তাদের সকলকে আমার সামনে উপস্থিত করা হবে। সুতরাং আজ কাউকেই কোন যুলম করা হবে না এবং তোমরা যা আমল করছিলে শুধু তারই প্রতিদান তোমাদের দেয়া হবে। (সূরা ইয়াসীন, আয়াত ৫১-৫৪)
৭। হাশরের মাঠের ভয়াবহতা দেখে তখন যারা কাফির অন্যায়কারী অবিশ্বাসী ছিল তারা বলতে থাকবে কেন দুনিয়ায় জন্ম নিয়েছিলাম বা মাটি হয়ে যেতাম এখন।