সন্তান আমাদের জন্য কত বড় একটি নি’আমত। ইচ্ছা করলেই সন্তান পাওয়া যায়না। সন্তান একটি পরিবারের বন্ধনকে আরো শক্তিশালী, মজবুত ও দৃঢ় করে। পরিবারে নিয়ে আসে আনন্দ উৎফুল্লের ফল্গুধারা।
আজকাল অনেক পিতা-মাতা ভ্রুন হত্যা করেন দ্বিধাহীন চিত্তে। একটু ভয় হয় না । আল্লাহ যেই সন্তানকে দিয়েছেন তাকে নিজ হাতে মেরে ফেলা কত বড় ভয়ংকর ব্যপার। আল্লাহ সেই সমস্ত পিতা-মাতাদের হেদায়েত দান করুন।
ইসলাম গোটা মানব গোষ্ঠীর জীবনের নিরাপত্তা বিধানে সামান্যতম শৈথিল্য প্রদর্শন করে নি। জীবনের নিরাপত্তার ব্যপারে মহান আল্লাহ বলেছেন—
আল্লাহ যে প্রাণকে মর্যাদা দান করেছেন ন্যায় সংগতভাবে ছাড়া তাকে ধ্বংস করো না ৷ সূরা আল আন’আম:১৫১
এটাই হলো সাধারন নীতি।
নরহত্যা অথবা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করা ছাড়া অন্য কোন কারণে যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করলো সে যেন দুনিয়ার সমস্ত মানুষকে হত্যা করলো ৷ আর যে ব্যক্তি কারো জীবন রক্ষা করলো সে যেন দুনিয়ার সমস্ত মানুষের জীবন রক্ষা করলো ৷ সূরা আল মায়েদা:৩২
অন্ধকার যুগে লোকেরা সন্তান হত্যা করত, বিশেষ করে কন্যা সন্তান। ইসলামে এই সন্তান হত্যাকে কঠোরভাবে নিন্দা ও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বর্তমানেও অনেক পরিবারে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে দেখা যায়।
দারিদ্রের আশংকায় নিজেদের সন্তান হত্যা করো না ৷ আমি তাদেরকেও রিযিক দেবো এবং তোমাদেরকেও ৷ আসলে তাদেরকে হত্যা করা একটি মহাপাপ। সূরা বনী ইসরাইল:৩১
হে মুহাম্মাদ! এদেরকে বলো, এসো আমি তোমাদের শুনাই তোমাদের রব তোমাদের ওপর কি বিধি-নিষেধ আরোপ করেছেন ৷তাঁর সাথে কাউকে শরীক করো না ৷ পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহার করো৷ দারিদ্রের ভয়ে নিজের সন্তানদেরকে হত্যা করো না, আমি তোমাদেরকে জীবিকা দিচ্ছি এবং তাদেরকেও দেবো ৷প্রকাশ্যে বা গোপনে অশ্লীল বিষয়ের ধারে কাছেও যাবে না ৷ সূরা আন’আম:১৫১
নিঃসন্দেহে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যারা নিজেদের সন্তানদেরকে নির্বুদ্ধিতা ও অজ্ঞতাবশত হত্যা করেছে এবং আল্লাহর দেয়া জীবিকাকে আল্লাহর সম্পর্কে মিথ্যা ধারণাবশত হারাম গণ্য করেছে নিসন্দেহে তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং তারা কখনোই সত্য পথ লাভকারীদের অন্তরভুক্ত ছিল না ৷ সূরা আন’আম:১৪০
সন্তান হচ্ছে মহান আল্লাহতা’আলার দেয়া পিতা-মাতার নিকট একটি আমানত। যে আমানত সম্পর্কে পিতা-মাতাকে জিজ্ঞাসা করা হবে।
যখন প্রাণসমূহকে ( দেহের সাথে ) জুড়ে দেয়া হবে ৷ যখন জীবিত পুঁতে ফেলা মেয়েকে জিজ্ঞেস করা হবে, কোন অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছে? যখন আমলনামাসমূহ খুলে ধরা হবে। যখন আকাশের পর্দা সরিয়ে ফেলা হবে ৷ যখন জাহান্নামের আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হবে এবং জান্নাতকে নিকটে আনা হবে৷ সে সময় প্রত্যেক ব্যক্তি জনতে পারবে সে কি নিয়ে এসেছে ৷ সূরা আত তাকভীর ৭-১৩
যে সন্তানটি গর্ভে এসেছে সেতো আপনারই সন্তান, সে চায় এই পৃথিবীর মুখ দেখতে, উপভোগ করতে চায় মহান আল্লাহর দেয়া নেয়ামতের স্বাদ নিতে –মা-বাবার আদর পেতে, পিতা-মাতা সহ সমাজকে শান্তির পথ দেখাতে—কেন আপনি এই সন্তানের অধিকার রুদ্ধ করতে চান????? আর যে সন্তানকে মহান আল্লাহ এই দুনিয়া উপভোগ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন তাকে রোধ করার কোন শক্তি নেই। তাই মহান আল্লাহর সিদ্ধান্তের কাছে আত্মসমর্পনেই শান্তি -এই দুনিয়াতেও ও পরকালের স্থায়ী জীবনেও।
তাই আমরা সবাই নিজেরাও সচেতন হই এবং অন্যদের সচেতন করি । মহান আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।
পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহার করো ৷ দারিদ্রের ভয়ে নিজের সন্তানদেরকে হত্যা করো না, আমি তোমাদেরকে জীবিকা দিচ্ছি এবং তাদেরকেও দেবো ৷ প্রকাশ্যে বা গোপনে অশ্লীল বিষয়ের ধারে কাছেও যাবে না ৷ আল্লাহ যে প্রাণকে মর্যাদা দান করেছেন ন্যায় সংগতভাবে ছাড়া তাকে ধ্বংস করো না ৷ তিনি তোমাদের এ বিষয়গুলোর নির্দেশ দিয়েছেন, সম্ভবত তোমরা ভেবে-চিন্তে কাজ করবে ৷ আন’আম–১৫১
তাই আল্লাহর ফয়সালার কাছে নিজেদের সঁপে দেয়া দরকার। তাহলে আল্লাহ তাঁর সহায়ক হয়ে অনেক সহজ ও সুন্দর জীবনের পদ্ধতি তাকে বের করে দেন। সবকিছুই বরকতময় করে দেন।
তোমাদের সম্পদ এবং তোমাদের সন্তান তোমাদের জন্য পরীক্ষা স্বরুপ।–আত তাগাবুন(১৫)
এই পরীক্ষায় আমাদের উত্তীর্ণ হতে হলে মহান আল্লাহর দেয়া নীতি অনুসরন করে এই আমানতের ব্যবহার করা আমাদের জন্য খুবই জরুরী।
https://www.youtube.com/watch?v=gwvvYZBAZqg