মহান আল্লাহ সুন্দর, সুস্থ্য, পবিত্র পরিবার গঠনের জন্য যে সকল দিক নির্দেশনা দিয়ে রেখেছেন, আমরা যারা আগে জানতাম না, তারা অন্তত পরের প্রজন্মকে শুরু থেকেই দিকনির্দেশনা দিতে থাকুন।
সন্তান গঠনের পূর্বে বাবা মা নিজেকে পরিপূর্ণ মুসলিম হিসেবে প্র্যাক্টিসিং হতে হবে।
বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা যেন শরীয়ার মধ্যে হয় যেন সংসারের শুরুটাই হয় মহান আল্লাহর আনুগত্যের প্রতিক দিয়ে। প্রচলিত ও বর্তমানের সকল রকম ফাহেশা ও বিজাতীয় অনুকরন থেকে সরে এসে নব দম্পত্তিকে কুর’আন ও সুন্নাতের ছায়ায় সংসার শুরু করতে সহযোগীতা করুন।
সমাজ ও মানুষ কি বলবে তা না চিন্তা করে আপনারা নবদম্পত্তির দুনিয়া ও পরকালীন জীবনের কল্যানের কথা ভাবুন এবং মহান রবের অনুগ্রহ লাভের যোগ্যতায় পরিবার গঠন শুরু করার ভিত্তি স্থাপন করতে দিন। সমাজ ও অন্য মানুষ এসে আপনার পরিবারে শান্তি ও রহমত এনে দিতে পারবে না, মহান আল্লাহর আনুগত্যেই দিতে পারে সব রকমের শান্তি ও সফলতা।
বিবাহের সময় দু’রাকাআত নামায পড়া সম্পর্কে কোন সহিহ হাদীস নেই। তবে কোন কোন সাহাবী বাসর রাতে দু’রাকাআত নামায আদায় করেছেন, এরকম বর্ণনা পাওয়া যায়। অবশ্য বাসর রাতে শরীয়ত সম্মত কাজ হচ্ছে, নববধুর কপাল ধরে এই দু’আ পাঠ করবেঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا وَخَيْرَ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَمِنْ شَرِّ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ
“হে আল্লাহ্! আপনার কাছে এর কল্যাণ এবং একে যে স্বভাবের উপর সৃষ্টি করেছেন তার কল্যাণ প্রার্থনা করছি। আর আশ্রয় কামনা করছি এর অকল্যাণ থেকে এবং একে যে স্বভাবের উপর সৃষ্টি করেছেন তার অকল্যাণ থেকে।”
এরকম করলে স্ত্রী ভীত হবে বা অপছন্দ করবে এমন আশংকা থাকলে- তার নিকটবর্তী হওয়ার ভান করে আলতো করে কপালে হাত রাখবে এবং তাকে না শুনিয়েই চুপে চুপে উক্ত দু‘আটি পাঠ করবে। কেননা ইসলামী জ্ঞানে অজ্ঞ থাকার কারণে কোন কোন নারী এরকম খেয়াল করতে পারে যে, আমার মধ্যে কি অকল্যাণ আছে? এতে সে বিষয়টিকে অন্য খাতে নিতে পারে। সুতরাং ঝামেলা এড়ানোর জন্য নীরবে ও না জানিয়ে দু’আ পাঠ করাই ভাল।
ইসলামি আদবের একটি হচ্ছে মুসলিম তার স্ত্রীর নিকট আসার সময় বলবে :
بِاسْمِ اللَّهِ اللَّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ وَجَنِّبْ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا ” . رواه البخاري فتح رقم
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহ্। আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়তান ও জান্নিবিশ শায়তানা মা রাযাকতানা।
অর্থ: আল্লাহর নামে শুরু করছি। হে আল্লাহ, আমাদেরকে শয়তান হতে বাঁচান এবং আমাদেরকে যদি কোন সন্তান দেন তাকেও শয়তান হতে বাঁচান।
(সহিহ বুখারী, ফাতহুল বারি হাদিস নং ১৩৮)
আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম বলেনঃ
তোমাদের কেউ যদি স্ত্রী সহবাসের সময় এই দুআ পড়েঃ
باسْمِ اللَّهِ أَللَُّهُمَّ جَنِّبْنِي الشَّيْطَانَ وَجَنِّبْ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا
“বিসমিল্লাহ্। আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়তান ও জান্নিবিশ শায়তানা মা রাযাকতানা।
অর্থাৎ, “আল্লাহুর নামে (মিলন) করছি, হে আল্লাহ্! তুমি আমাকে শয়তান থেকে দূরে রাখ এবং আমাদেরকে যে সন্তান তুমি দান করবে তার থেকেও শয়তানকে দূরে রাখ।”
অতঃপর এ সহবাসের মাধ্যমে কোন সন্তান দেয়া হলে শয়তান কখনও তার কোন ক্ষতি করতে সক্ষম হবে না। (বুখারী)
একই রাতে যদি কেউ তার স্ত্রীর সাথে একাধিকবার সহবাস করতে চায়, তাহলে এ ক্ষেত্রে উত্তম হচ্ছে, প্রত্যেক সহবাসের পূর্বে অযু করে পবিত্রতা অর্জন করা। সে হিসাবে তাকে প্রত্যেকবারই দুআ পড়তে হবে।
আর যদি বিনা অযুতেই একাধিকবার সহবাস করতে চায়, তাহলে দুআ না পড়াই শ্রেয়। সে ক্ষেত্রে প্রথমবারের দুআই যথেষ্ট। এ ক্ষেত্রে যেকোন সহবাসের মাধ্যমে সন্তান জন্ম গ্রহণ করলে শয়তানের ক্ষতি হতে রেহাই পাবে ইনশা-আল্লাহ। কেননা বিনা অযুতে আল্লাহর যিকির করা ঠিক নয়। এর উপকারিতা হচ্ছে, তাদের উভয়ের মাঝে কোন সন্তানের ফয়সালা হলে, শয়তান তার অনিষ্ট করতে করবে না।