১। সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে আল্লাহর প্রশংসা করা, তার শুকরিয়া আদায় করা ও সন্তানের জন্য দোয়া করা।
পবিত্র কুরআনে ইবরাহিম আ. সম্পর্কে বলা হয়েছে, সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর তিনি বলেন,
সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি বৃদ্ধ বয়সে আমাকে ইসমাঈল ও ইসহাককে দান করেছেন। নিশ্চয় আমার রব দোআ শ্রবণকারী। হে আমার রব, আমাকে সালাত কায়েমকারী বানান এবং আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও, হে আমাদের রব, আর আমার দোআ কবুল করুন। (সূরা ইবরাহিম : ৩৯-৪১)
তদ্রুপ আত্মীয় ও শুভানুধ্যায়ীদের সুসংবাদ প্রদান করা, সন্তানের জনক-জননীকে মোবারকবাদ দেয়া ও তাদের খুশিতে অংশ গ্রহণ করা। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে,
আর তার (ইবরাহিমের) স্ত্রী দাঁড়ানো ছিল, সে হেসে উঠল। অতঃপর আমি তাকে সুসংবাদ দিলাম ইসহাকের ও ইসহাকের পরে ইয়াকুবের। (সূরা হুদ : ৭১)
হে যাকারিয়্যা, আমি তোমাকে একটি পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দিচ্ছি, তার নাম ইয়াহইয়া। ইতিপূর্বে কাউকে আমি এ নাম দেইনি। (সূরা মারইয়াম : ৭)
সন্তান (ছেলে বা মেয়ে) জন্মের পর খুশি হওয়া, আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা এবং সন্তানের জন্য দোয়া করা ইসলামের আদর্শ, বরং সওয়াবের কাজ। লক্ষণীয় ইবরাহিম আলাইহিস সালাম এ সময়ও পিতা-মাতা ও মুমিনদের জন্য দোয়া করতে ভুলেননি।
ইবনুল কাইয়ুম রহ. বলেন, সন্তান জন্মের সংবাদ পেলে সন্তানের জন্য কল্যাণ ও বরকতের দোয়া করা কর্তব্য। (তুহফাতুল মওলূদ)
সন্তান লাভকারীকে অভিনন্দন ও তার জবাব
«بَارَكَ اللَّهُ لَكَ فِي الْمَوْهُوبِ لَكَ، وَشَكَرْتَ الْوَاهِبَ، وَبَلَغَ أَشُدَّهُ، وَرُزِقْتَ بِرَّهُ».
(বা-রাকাল্লা-হু লাকা ফিল মাউহুবি লাক, ওয়া শাকারতাল ওয়া-হিবা, ওয়া বালাগা আশুদ্দাহু, ওয়া রুযিক্তা বিররাহু)।
“আল্লাহ আপনাকে যা দিয়েছেন তাতে আপনার জন্য বরকত দান করুন, সন্তান দানকারীর শুকরিয়া আদায় করুন, সন্তানটি পরিপূর্ণ বয়সে পদার্পণ করুক এবং তার সদ্ব্যবহার প্রাপ্ত হোন।”
এটি হাসান বসরী রাহিমাহুল্লাহর বাণী হিসেবে উল্লেখিত হয়েছে। দেখুন, তুহফাতুল মাওদূদ লি ইবনিল কাইয়্যেম,
অভিনন্দনের জবাবে বলবে
«بَارَكَ اللَّهُ لَكَ وَبَارَكَ عَلَيْكَ، وَجَزَاكَ اللَّهُ خَيْراً، وَرَزَقَكَ اللَّهُ مِثْلَهُ، وَأَجْزَلَ ثَوَابَكَ».
(বা-রাকাল্লা-হু লাকা ওয়া বা-রাকা ‘আলাইকা, ওয়া জাযা-কাল্লা-হু খাইরান, ওয়া রাযাক্বাকাল্লা-হু মিসলাহু ওয়া আজযালা সাওয়া-বাকা)।
“আল্লাহ আপনাকে বরকত দান করুন, আর আপনার উপর বরকত নাযিল করুন। আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন, আর আপনাকেও অনুরূপ দান করুন এবং আপনার সওয়াব বহুগুণ বৃদ্ধি করুন।”
এটি ইমাম নাওয়াবী তার আল-আযকার গ্রন্থে পৃ. ৩৪৯ উল্লেখ করেছেন।
যা দ্বারা শিশুদের জন্য আশ্রয় প্রার্থনা করা হয়
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান ও হুসাইন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা-এর জন্য এই বলে (আল্লাহ্র) আশ্রয় প্রার্থনা করতেন-
– «أُعِيذُكُمَا بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ».
(উ‘ইযুকুমা বিকালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মাতি মিন কুল্লি শাইতানিওঁয়া হা-ম্মাহ্, ওয়ামিন কুল্লি আইনিল্লা-ম্মাহ্)।
“আমি তোমাদের দু’জনকে আল্লাহ্র পরিপূর্ণ কালেমাসমূহের আশ্রয়ে নিচ্ছি যাবতীয় শয়তান ও বিষধর জন্তু থেকে এবং যাবতীয় ক্ষতিকর চক্ষু (বদনযর) থেকে।”
বুখারী ৪/১১৯, নং ৩৩৭১; ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমার হাদীস থেকে।
https://www.youtube.com/watch?v=S0p8uoPAgjg&nohtml5=False
https://www.youtube.com/watch?v=upm3V2z5nuk&nohtml5=False
নতুন সদস্য বা সদস্যাকে নিয়ে যখন সবাই খুব ব্যস্থ হয়ে যান তখন মায়ের যত্নের প্রতি যেন অবহেলা না হয়ে যায় সেজন্য বিশেষ সজাগ দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন। অপারেশন হলেতো হাসপাতালে থাকেন বিধায় যত্নটা সহজে পেয়ে থাকেন একজন মা কিন্তু যাদের স্বাভাবিক ডেলিভারী হয় তারা সেদিন বা পরেরদিন বাসায় চলে আসার পর যেন, সব কাজের দায়িত্ব চলে আসে এই সদ্য প্রসূত সন্তানের মায়ের উপর। এটা অত্যন্ত কষ্ট ও বোঝা হয়ে যায় এই মুহুর্তের শরীরে। দীর্ঘদিন সন্তানকে পেটে রাখার ফলে যে পরিবর্তন এসেছে, এখন আবার সন্তান প্রসবের পর আরেক পর্বের পরিবর্তনে মা চলে আসেন। এই সময়ে বিশেষ যত্ন থাকতে হবে যেন শরীরের অবস্থান আগের মত সুস্থ্য স্বাভাবিক হয়ে আসে। বিশেষ করে বাবাদের এই সময় মূখ্য ভূমিকা রাখা প্রয়োজন।