১। মানসিকভাবে প্রশান্তিতে থাকা:
নিজেকে শান্ত রাখার এটাই সবচেয়ে উত্তম উপায় তা হলো, মহান আল্লাহর হুকুম যা আছে তা হবেই, মহান আল্লাহ কারো সাধ্যের বাইরে দায়িত্ব দেন না। যে সন্তানটিকে আপনার মাধ্যমে এই দুনিয়াতে মহান আল্লাহ পাঠানোর পরিকল্পনা করেছেন, তা ইন শা আল্লাহ সহজ ও সুন্দরভাবে আসবে, তবে সেই জন্য মহান রবের রহমতে থাকার কাজগুলো করার প্রচেষ্টা রাখতে হবে। বিশ্বাস ও নির্ভরতা তাঁর উপর রেখে আপনার করনীয় করে যান।
সবচেয়ে উত্তম কাজ হলো ওয়াক্ত মতো নামাজে ধীর স্থিরতার সাথে দাড়ানো এবং নিজের সমস্যা থাকলে তা মহান আল্লাহর কাছে পেশ করা ও সাহায্য চাওয়া।
বোনেরা, মহান আল্লাহর কাছে পুরু ভরসা করে দৃঢ়তার সাথে এই বিশ্বাস রাখা যে, মহান আল্লাহই আমাকে শান্তি ও সব সমস্যার সুন্দর সমাধান করে দিবেন দোয়া করলে অবশ্যই আল্লাহতা’আলা সেই দোয়া কবুল করবেন। কারন মহান আল্লাহ বান্দার হাত ফিরিয়ে দেন না।
আল্লাহতা’আলা বলেছেন—
“হে নবী,আমার বান্দাহ যদি তোমার নিকট আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে তবে তাদের বলে দাও যে, আমি তাদের অতি নিকটে। আমাকে যে ডাকে আমি তার ডাক শুনি এবং তার উত্তর দিয়ে থাকি। কাজেই আমার আহবানে সাড়া দেয়া এবং আমার প্রতি ঈমান আনা তাদের কর্তব্য।” সূরা আল বাকারা: ১৮৬
তোমাদের কেউ দোয়া করলে দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে করবে। দোয়ায় এরুপ বলবে না যে, হে আল্লাহ! যদি তুমি চাও তবে আমাকে দাও। কেননা আল্লাহকে বাধ্য করার কেউ নেই। সহিহ বুখারী
তোমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে এসে গেছে এক জ্যোতি এবং একখানি সত্য দিশারী কিতাব, যার মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর সন্তোষকামী লোকদেরকে শান্তি ও নিরাপত্তার পথপ্রদর্শন করেন এবং নিজ ইচ্ছাক্রমে তাদেরকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোকের দিকে নিয়ে আসেন এবং সরল-সঠিক পথের দিকে পরিচালিত করে। সূরা মায়েদা-১৬
২। সবসময় বেশি ভালো চিন্তা করা—-
একটি ভাল কাজ করার কথা মনে আনলেই সওয়াব পাওয়া যায় আর সেটা বাস্তবে আমল করলেতো আরো বেশী সওয়াব হবে।
৩। কোর’আন শুনা বা নিজে পড়া—
“তুমি যদি আল্লাহর কিতাব থেকে একটি আয়াত শেখ,তবে সেটা তোমার জন্য একশত রাকাত(নফল) নামায পড়ার চেয়ে উত্তম। আর যদি তুমি ইসলামী জ্ঞানের একটি অধ্যায় ও মানুষকে শিখাও, তবে তা তোমার জন্য এক হাজার রাকাত নফল নামাজ পড়ার চেয়েও উত্তম,চাই তদনুসারে আমল করা হোক বা না হোক.” (ইবনে মাজাহ)
বেশী বেশী অনলাইনেও ইসলামিক লেকচার, তেলাওয়াত শুনতে সময় দেয়া। পরিকল্পিতভাবে বিশেষ কোন আয়াত বা সূরা মুখস্ত করা।
৪। আদর্শ মানুষের জীবনী পড়া—
নবী ও সাহাবাসহ ভালো মানুষদের জীবন ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়া।
৫। ভাল কথা বলা ও শুনা—
সব সময় সুন্দর কথা শুনা ও বলা, গীবত বা নাটক সিনেমার গল্পে লিপ্ত না হয়ে বাস্তব মুখী গল্প করা। সব সময় পজিটিভ চিন্তা করা। আল্লাহ অবশ্যই ভালো করবেন-আল্লাহই সাহায্যকারী
৬। মেজাজ ঠাণ্ডা রাখা / উত্তেজিত না হওয়া–
কোন ভাবেই উত্তেজিত না হওয়া এবং এ ব্যপারে স্বামী ও পরিবারের অন্যদের সহযোগীতা করা দরকার। রাগ আসলে বুঝতে হবে এটা শয়তান করাচ্ছে , তখন হাদীসের আলোকে আমল করতে হবে।রক্ত চাপ ঠিক রাখার জন্য এটা খুব জরুরী।
৭। পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া ও বিশ্রাম নেয়া। অন্য সময়ের তুলনায় এইসময় বেশী খাবার দরকার। শরীরে শক্তি ও পুষ্টি থাকলে মেজাজও ভালো থাকবে। গর্ভের সন্তানের জন্য বেশী প্রয়োজন। তাই প্রতিটা খাবার নেয়ার সময় আল্লাহতা’আলার কাছে বরকতের দোয়া করে খেলে ভালো হবে। হালাল রুজির খাওয়াটা সবচেয়ে বেশী জরুরী। তাতে অল্প খাবারেও আল্লাহতা’আলা বরকত দিবেন ইনশা’আল্লাহ।
৮। পুরো শরীরে আস্তে আস্তে অলিভ অয়েল মাসাজ করে নিন৷
অন্য তেলও অবশ্য মালিশ করা যেতে পারে, তবে অলিভ অয়েলে সন্তান জন্মের পর সাধারণত পেটে আর কোনো দাগ থকে না৷’’ এমনটাই বলেন জার্মান ধাত্রী হাইকে শোয়ার্ৎস৷
৯। গর্ভকালীন হালকা ব্যায়ামঃ
ডাক্তারের পরামর্শক্রমে করা দরকার।
১০। পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করাঃ
একজন সুস্থ গর্ভবতীর দিনে কম পক্ষে দেড় থেকে দুই লিটার পানি পান করা উচিত৷ তাই মাঝে মাঝেই অল্প অল্প পানি পান করে নেবেন৷ এতে শরীরটা সারা দিন ঝরঝরে লাগবে ।
১১। নিয়মিত ডাক্তারের চেক আপ করানো।
১২। অন্তরকে সবসময় হিংসা, কুচিন্তা, না সূচক চিন্তামুক্ত রাখা।
বর্তমান করনীয়কে প্রাধান্য দেয়া। বিশেষ করে মিডিয়া থেকে খারাপ ও ভয়ঙ্কর জিনিষ দেখা থেকে দূরে থাকা। শরীয়তের বাইরে বাজনা, সিনেমা ইত্যাদি থেকে দূরে থাকা প্রয়োজন।
১৩।নিজের অবস্থানকে তুলে ধরাঃ
পরিবারের অন্য সদস্যদের বুঝতে দিন কখন আপনার খারাপ লাগে, ভুল যেন বুঝতে না পারে নিজেই নিজের কোন অপ্রত্যাশিত আচরনের কারনে দুঃখিত বলা। এই সময় পরিবারের সবাইকেই সহযোগীতা করা প্রয়োজন।
মহান আল্লাহর কাছে সব সময় দোয়া করা।
তিনি মায়ের পেটে থাকা অবস্থায় যেভাবে ইচ্ছা তোমাদের আকৃতি গঠন করেন ৷এই প্রবল পরাক্রান্ত মহাজ্ঞানের অধিকারী সত্তা ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই ৷ –আল ইমরান ৬
‘‘হে আমার রব ! আমার পেটে এই যে সন্তানটি আছে এটি আমি তোমার জন্য উৎসর্গ করলাম ৷ সুতরাং তুমি আমার নিকট হতে উহা কবুল করে নাও ৷ তুমি সবকিছু শোনো ও জানো ৷’’ –আল-ইমরান-৩৫
https://www.youtube.com/watch?v=A04auckGBSg