সদ্য প্রসূত শিশুর অর্থপূর্ণ নাম রাখা। সন্তান গঠনে মায়ের ভূমিকা-২০

৭। অর্থপূর্ণ নাম রাখাটা জরুরী।

আজকাল যে সমস্ত নাম রাখা হয় যার কোন ভালো অর্থ থাকে না এবং পরবর্তিতে আবার দেখা যায় নাম বাদ দিয়ে উপনাম দিয়ে সম্বোধন করা হয় যা অনেক সময় খারাপ অর্থ হয়ে যায়-এটা অনুচিত। অনেক সময় বাচ্চাকে আদর করে নামকে এমন পরিবর্তন করে ফেলেন, যা অনেক সময় নামের অর্থকে বিকৃত করে দেয়।

শিশুর জন্মের পর তার জন্য একটি সুন্দর ইসলামী নাম রাখা প্রত্যেক মুসলিম পিতা-মাতার কর্তব্য। বাচ্চার জন্য সুন্দর নাম নির্বাচন করা পিতা-মাতার অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য। নাম অর্থবহ হওয়া নামের সৌন্দর্য। কেননা, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন অনেক অসুন্দর নাম পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন। (আবু দাউদ ৪৯৫২-৪৯৬১)

আমাদের পড়াশুনা একেবারে অপ্রতুল। তাই ইসলামী নাম রাখার আগ্রহ থাকার পরও অজ্ঞতাবশত আমরা এমনসব নাম নির্বাচন করে ফেলি যেগুলো আদৌ ইসলামী নামের আওতাভুক্ত নয়। শব্দটি আরবী অথবা কুরআনের শব্দ হলেই নামটি ইসলামী হবে তাতো নয়। কুরআনে তো পৃথিবীর নিকৃষ্টতম কাফেরদের নাম উল্লেখ আছে। ইবলিস, ফেরাউন, হামান, কারুন, আবু লাহাব ইত্যাদি নাম তো কুরআনে উল্লেখ আছে; তাই বলে কী এসব নামে নাম বা উপনাম রাখা সমীচীন হবে!?

ব্যক্তির নাম তার স্বভাব চরিত্রের উপর ইতিবাচক অথবা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বলে বর্ণিত আছে।

শাইখ বকর আবু যায়েদ বলেন, “ঘটনাক্রমে দেখা যায় ব্যক্তির নামের সাথে তার স্বভাব ও বৈশিষ্ট্যের মিল থাকে। এটাই আল্লাহর তা‘আলার হেকমতের দাবী। যে ব্যক্তির নামের অর্থে চপলতা রয়েছে তার চরিত্রেও চপলতা পাওয়া যায়। যার নামের মধ্যে গাম্ভীর্যতা আছে তার চরিত্রে গাম্ভীর্যতা পাওয়া যায়। খারাপ নামের অধিকারী লোকের চরিত্রও খারাপ হয়ে থাকে। ভাল নামের অধিকারী ব্যক্তির চরিত্রও ভাল হয়ে থাকে।”

ইবনুল কাইয়্যেম, তুহফাতুল মাওদুদ, পৃষ্ঠা-১/১২১।

রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কারো ভাল নাম শুনে আশাবাদী হতেন। হুদাইবিয়ার সন্ধিকালে মুসলিম ও কাফের দুইপক্ষের মধ্যে টানাপোড়নের এক পর্যায়ে আলোচনার জন্য কাফেরদের প্রতিনিধি হয়ে সুহাইল ইবনে ‘আমর নামে এক ব্যক্তি এগিয়ে এল তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুহাইল নামে আশাবাদী হয়ে বলেন: “সুহাইল তোমাদের জন্য সহজ করে দিতে এসেছেন।”আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং- ৯১৫;

সুহাইল শব্দটি সাহলুন (সহজ) শব্দের ক্ষুদ্রতানির্দেশক রূপ। যার অর্থ হচ্ছে- অতিশয় সহজকারী।

বিভিন্ন কবিলার ভাল অর্থবোধক নামে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশাবাদী হওয়ার নজির আছে। তিনি বলেছেন:

“গিফার (ক্ষমা করা) কবিলা তথা গোত্রের লোকদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দিন। আসলাম (আত্মসমর্পণকারী/শান্তিময়) কবিলা বা গোত্রের লোকদেরকে আল্লাহ শান্তি দিন।” সহীহ বুখারী: ৯৫১; সহীহ মুসলিম: ১০৯৬।

নবজাতকের নাম রাখার ক্ষেত্রে অনুসরণযোগ্য কিছু নীতিমালা——

এক: নবজাতকের নাম রাখার সময়কালের ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে তিনটি বর্ণনা রয়েছে। শিশুর জন্মের পরপরই তার নাম রাখা। শিশুর জন্মের তৃতীয় দিন তার নাম রাখা। শিশুর জন্মের সপ্তম দিন তার নাম রাখা। এর থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, ইসলাম এ বিষয়ে মুসলিমদেরকে অবকাশ দিয়েছে। যে কোনোটির উপর আমল করা যেতে পারে। বকর আবু যায়দ, তাসমিয়াতুল মাওলুদ, পৃষ্ঠা- ১/১০।

এমনকি কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা কোনো কোনো নবীর নাম তাঁদের জন্মের পূর্বে রেখেছেন মর্মে উল্লেখ আছে। সূরা আলে ইমরানে ৩৯ নং আয়াতে ইয়াহইয়া (আঃ) এর জন্মের পূর্বেই তাঁর নাম উল্লেখ করে আল্লাহ তাঁর জন্মের সুসংবাদ দিয়েছেন।

দুই: আল্লাহর নিকট সবচেয়ে উত্তম নাম হচ্ছে আব্দুল্লাহ ও আব্দুর রহমান। সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন – “তোমাদের নামসমূহের মধ্যে আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় হচ্ছে- আব্দুল্লাহ (আল্লাহর বান্দা) ও আব্দুর রহমান (রহমানের বান্দা)।” সহীহ মুসলিম: ৩৯৭৫।

এ নামদ্বয় আল্লাহর প্রিয় হওয়ার কারণ হল- এ নামদ্বয়ে আল্লাহর দাসত্বের স্বীকৃতি রয়েছে। তাছাড়া আল্লাহর সবচেয়ে সুন্দর দুটি নাম এ নামদ্বয়ের সাথে সম্বন্ধিত আছে। একই কারণে আল্লাহর অন্যান্য নামের সাথে আরবী ‘আব্দ’ (বান্দা বা দাস) শব্দটিকে সমন্ধিত করে নাম রাখাও উত্তম।

তিন: যে কোনো নবীর নামে নাম রাখা ভাল। যেহেতু তাঁরা আল্লাহর মনোনীত বান্দা। হাদিসে এসেছে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

“তোমরা আমার নামে নাম রাখ। আমার কুনিয়াতে (উপনামে) কুনিয়ত রেখো না।” বুখারী, আল-আদাবুল মুফরাদ:৮৩৭; শাইখ আলবানী হাদিসটিকে সহীহ  বলেছেন।

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কুনিয়ত ছিল- আবুল কাসেম। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নিজের সন্তানের নাম রেখেছিলেন ইব্রাহিম। কুরআনে কারীমে ২৫ জন নবী-রাসূলের নাম বর্ণিত আছে মর্মে আলেমগণ উল্লেখ করেছেন।জালালুদ্দিন সুয়ুতি,এর থেকে পছন্দমত যে কোনো নাম নবজাতকের জন্য নির্বাচন করা যেতে পারে।

চার:  নেককার ব্যক্তিদের নামে নাম রাখাও উত্তম। এর ফলে সংশ্লিষ্ট নামের অধিকারী ব্যক্তির স্বভাবচরিত্র নবজাতকের মাঝে প্রভাব ফেলার ব্যাপারে আশাবাদী হওয়া যায়। এ ধরনের আশাবাদ ইসলামে বৈধ। এটাকে তাফাউল (تَفَاؤُلٌ) বলা হয়। নেককার ব্যক্তিদের শীর্ষস্থানে রয়েছেন রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবায়ে কেরাম। তারপর তাবেয়ীন। তারপর তাবে-তাবেয়ীন। এরপর আলেম সমাজ।বকর আবু যায়দ, তাসমিয়াতুল মাওলুদ, পৃষ্ঠা- ১/১৬।

পাঁচ: আমাদের দেশে শিশুর জন্মের পর নাম রাখা নিয়ে আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে একটা প্রতিযোগিতা দেখা যায়। দাদা এক নাম রাখলে নানা অন্য একটা নাম পছন্দ করেন। বাবা-মা শিশুকে এক নামে ডাকে। খালারা বা ফুফুরা আবার ভিন্ন নামে ডাকে। এভাবে একটা বিড়ম্বনা প্রায়শঃ দেখা যায়। এ ব্যাপারে শাইখ বাকর আবু যায়দ বলেন, “নাম রাখা নিয়ে পিতা-মাতার মাঝে বিরোধ দেখা দিলে শিশুর পিতাই নাম রাখার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।

“তোমরা তাদেরকে তাদের পিতৃপরিচয়ে ডাক। এটাই আল্লাহর কাছে ন্যায়সঙ্গত।”[সূরা আহযাব ৩৩:৫]

শিশুর পিতার অনুমোদন সাপেক্ষে আত্মীয়স্বজন বা অপর কোনো ব্যক্তি শিশুর নাম রাখতে পারেন। তবে যে নামটি শিশুর জন্য পছন্দ করা হয় সে নামে শিশুকে ডাকা উচিত। আর বিরোধ দেখা দিলে পিতাই পাবেন অগ্রাধিকার। বকর আবু যায়দ, তাসমিয়াতুল মাওলুদ, পৃষ্ঠা- ১/১২।

ছয়: কোনো ব্যক্তির প্রতি সম্মান দেখানোর জন্য তাকে তার সন্তানের নাম দিয়ে গঠিত কুনিয়ত বা উপনামে ডাকা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে বড় সন্তানের নামের পূর্বে আবু বা পিতা শব্দটি সম্বন্ধিত করে কুনিয়ত রাখা উত্তম। যেমন- কারো বড় ছেলের নাম যদি হয় “উমর” তার কুনিয়ত হবে আবু উমর (উমরের পিতা)। এক্ষেত্রে বড় সন্তানের নাম নির্বাচন করার উদাহরণ রাসূল সা. এর আমল থেকে পাওয়া যায়। এক সাহাবীর কুনিয়াত ছিল আবুল হাকাম। যেহেতু হাকাম আল্লাহর খাস নাম তাই রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা পরিবর্তন করে দিলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন: তোমার ছেলে নেই? সাহাবী বললেন: শুরাইহ, মুসলিম ও আব্দুল্লাহ। তিনি বললেন: এদের মধ্যে বড় কে? সাহাবী বললেন: শুরাইহ। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তোমার নাম হবে: আবু শুরাইহ।”আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং- ৮১১; শাইখ আলবানী হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন

সাত: যদি কারো নাম ইসলামসম্মত না হয়; বরঞ্চ ইসলামী শরিয়তে নিষিদ্ধ এমন নাম হয় তাহলে এমন নাম পরিবর্তন করা উচিত। সালেহ ফাওযান, ইআনাতুল মুসতাফিদ বি শারহি কিতাবিত তাওহিদ, পৃষ্ঠা- ২/১৮৫।

যেমন- ইতিপূর্বে উল্লেখিত হাদিস হতে আমরা জানতে পেরেছি একজন সাহাবীর সাথে ‘হাকাম’ শব্দটি সংশ্লিষ্ট হয়েছিল, কিন্তু হাকাম আল্লাহর খাস নামসমূহের একটি; তাই রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা পরিবর্তন করে দিয়ে তাঁর নাম রেখেছেনআবু শুরাইহ।

মহিলা সাহাবী যয়নব রাদিয়াল্লাহু আনহা এর নাম ছিল বার্‌রা (بَرَّةٌ -পূর্ণবতী)। তা শুনে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন তুমি কি আত্মস্তুতি করছ? তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নামও পরিবর্তন করে ‘যয়নব’ রাখলেন।( ইবনে মাজাহ, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং- ৩৭৩২, শাইখ আলবানী হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন)

আট: সাম্প্রতিককালে আমাদের দেশে বাংলা শব্দে নাম রাখার প্রবণতা দেখা যায়। ইসলামী নীতিমালা লংঘিত না হলে এবং এতদ অঞ্চলের মুসলিমদের ঐতিহ্যের সাথে সাংঘর্ষিক না হলে এমন নাম রাখাতে দোষের কিছু নেই। ‘আল-মাউসু‘আ আলফিকহিয়া কুয়েতিয়া’ তথা ‘কুয়েতস্থ ফিকহ বিষয়ক বিশ্বকোষ’ গ্রন্থে বলা হয়েছে- “নাম রাখার মূলনীতি হচ্ছে- নবজাতকের যে কোনো নাম রাখা জায়েয; যদি না শরিয়তে এ বিষয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকে।”( আল-মাউসুআ আলফিকহিয়া আলকুয়েতিয়া, খণ্ড ১১, পৃষ্ঠা- ৩৩১।)

কিন্তু অনন্ত, চিরঞ্জীব, মৃত্যুঞ্জয় এ অর্থবোধক নাম কোনো ভাষাতেই রাখা কোনো অবস্থায় জায়েয নয়। কারণ নশ্বর সৃষ্টিকে অবিনশ্বর সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর গুণাবলীতে ভূষিত করা জায়েয নেই।

ইসলামে যেসব নাম রাখা হারাম

১। আল্লাহর নাম নয় এমন কোনো নামের সাথে গোলাম বা আব্দ (বান্দা) শব্দটিকে সম্বন্ধ করে নাম রাখা হারাম।

যেমন- আব্দুল ওজ্জা (ওজ্জার উপাসক), আব্দুশ শামস (সূর্যের উপাসক)।

তবে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে দেখা যায় নামের মধ্যে ‘আব্দ’ শব্দটা থাকলেও ডাকার সময় ‘আব্দ’ শব্দটা ছাড়া ব্যক্তিকে ডাকা হয়। যেমন আব্দুর রহমানকে ডাকা হয় রহমান বলে। আব্দুর রহীমকে ডাকা হয় রহীম বলে। এটি অনুচিত।

এমনকি অনেক সময় আল্লাহর নামকে বিকৃত করে ডাকার প্রবণতাও দেখা যায়। এ বিকৃতির উদ্দেশ্য যদি হয় আল্লাহকে হেয় করা তাহলে ব্যক্তির ঈমান থাকবে না। আর এই উদ্দেশ্য না থাকলেও এটি করা অনুচিত।

২।: অনুরূপভাবে যেসব নামকে কেউ কেউ আল্লাহর নাম মনে করে ভুল করেন অথচ সেগুলো আল্লাহর নাম নয় সেসব নামের সাথে আব্দ বা দাস শব্দকে সম্বন্ধিত করে নাম রাখাও হারাম। যেমন- আব্দুল মাবুদ (মাবুদ শব্দটি আল্লহর নাম হিসেবে কুরআন ও হাদীছে আসেনি; বরং আল্লাহর বিশেষণ হিসেবে এসেছে), আব্দুল মাওজুদ (মাওজুদ শব্দটি আল্লাহর নাম হিসেবে কুরআন ও হাদীছে আসেনি)।

৩।: মানুষ যে উপাধির উপযুক্ত নয় অথবা যে নামের মধ্যে মিথ্যাচার রয়েছে অথবা অসার দাবী রয়েছে এমন নাম রাখা হারাম। যেমন- শাহেনশাহ (জগতের বাদশাহ) বা মালিকুল মুলক (রাজাধিরাজ) নাম বা উপাধি হিসেবে নির্বাচন করা। সহীহ বুখারী, কিতাবুল আদাব, বাব: আবগাদুল আসমা ইনদাল্লাহ, হাদিস নং- ৫৮৫৩।

সাইয়্যেদুন নাস (মানবজাতির নেতা) নাম রাখা। ইবনুল কাইয়্যেম, তুহফাতুল মাওদুদ, পৃষ্ঠা-১/ ১১৫।একই অর্থবোধক হওয়ার কারণে মহারাজ নাম রাখাকেও হারাম বলা হয়েছে। মুহায্যাবু মু’জাম মানাহি আল-লাফযিয়া, পৃষ্ঠা- ১৮৩।

৪।: যে নামগুলো আল্লাহর জন্য খাস সেসব নামে কোন মাখলুকের নাম রাখা বা কুনিয়ত রাখা হারাম। যেমন- আল্লাহ, আর-রহমান, আল-হাকাম, আল-খালেক ইত্যাদি। তাই এসব নামে কোন মানুষের নাম রাখা সমীচীন নয়। মোস্তফা আদাওয়ি, সিলসিলাতুত তাফসির, পৃষ্ঠা- ৬/৬২।

পক্ষান্তরে আল্লাহর নামসমূহের মধ্যে যেগুলো শুধু আল্লাহর জন্য খাস নয়; বরং সেগুলো আল্লাহর নাম হিসেবেও কুরআন হাদিসে এসেছে এবং মাখলুকের নাম হিসেবেও এসেছে সেসব নাম দিয়ে মাখলুকের নাম রাখা যেতে পারে। কুরআনে এসেছে-

قَالَتِ امْرَأَةُ الْعَزِيزِ

অর্থ- “আলআযিযের স্ত্রী বলেছেন”[সূরা ইউসুফ, আয়াত: ৫১] অর্থাৎ আল্লাহর কিছু নাম আছে তা একমাত্র তাঁর জন্যই ব্যবহৃত হয়, যেমন রহমান, রাযযাক, খালেক ইত্যাদি সেগুলোতে কোনো ক্রমেই কাউকে (আব্দ) শব্দ বাদ দিয়ে নাম রাখা বা ডাকা যাবে না। পক্ষান্তরে কিছু নাম রয়েছে যেগুলো ‘আলিফ-লাম’ যুক্ত করে শুধু আল্লাহর জন্য প্রযোজ্য, ‘আলিফ-লাম’ বাদ অন্যদের গুণবাচক নাম হতে পারে, যেমন রহীম, রাউফ, হামীদ ইত্যাদী। এমতাবস্থায় আল্লাহর নামের সাথে মিল রেখে কারও নাম রাখলে তখন অবশ্যই তার আগে (আব্দ) শব্দ উল্লেখ করে তাকে ডাকতে হবে। আর যদি আল্লাহর নাম উদ্দেশ্য না হয়ে লোকটির কোনো গুণ হিসেবে নাম রাখা হয়, তখন তাকে এসব নামে (আব্দ) শব্দ উল্লেখ করা ব্যতীতই ডাকা যাবে। ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া

https://www.youtube.com/watch?v=bPQpigomkc0&nohtml5=False

https://www.youtube.com/watch?v=EQQZwg-UC78&nohtml5=False