গর্ভকালীন সময়ে মায়ের কিছু সমস্যা ও দূর্বলতার দিক । সন্তান গঠনে মায়ের ভূমিকা-১২

গর্ভাবস্থায় সবচেয়ে বেশী কমন সমস্যা অনেকে বলেন, গ্যাসের সমস্যা।

গ্যাসের সমস্যা সমাধানে করণীয়ঃ

  • নিয়মিত একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে প্রতিদিন খেতে হবে কোনভাবেই খাবারে অনিয়ম করা যাবেনা
  • একটু পর পর অল্প অল্পকরে খেতে হবে মহান আল্লাহর নাম নিয়ে প্রতিবার খেতে হবে খাবার শেষে আলহামদুলিল্লাহ বলবেন
  • খাবার খাওয়ার সম তাড়াহুড়া না করে ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ চাবিয়ে খাবার খেতে হবে যাতে হজমে সমস্যা না হয়
  • খাবার খাওয়ার কিছুক্ষন পরে বেশি করে পানি পান করতে হবে
  • কার্বোনেটেড ড্রিঙ্কস পরিহার করতে হবে
  • এই সময় টাইট ফিটিং সব কাপড়চোপড় বা বেল্ট পড়া এবং উচু হিলের সেন্ডেল এড়িয়ে চলতে হবে
  • চুইংগাম যথাসম্ভব না খাওয়াই ভালো
  • কৃত্রিম রঙ এবং চিনিযুক্ত প্যকেটজাত খাবার পরিহার করতে হবে
  • প্রতিদিন ব্যায়াম করতে হবে নিয়ম করে
  • পুদিনা পাতা দিয়ে চা খেলে এই সমস্যা থেকে অনেক সময় রেহাই পাওয়া যায়

গর্ভবতী মায়ের জন্য সবচেয়ে বেশি ভারী বোধ হয় তাঁর পা দুটো৷ তাই সকালে বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থাতেই দুই পা খানিকটা উঁচু করে একটু একটু করে ঘোরাবেন৷ এতে রক্তসঞ্চালন ভালো হয়৷ রাতে যদি পা দুটোকে ভারী মনে হয়, তাহলে একটি বাটিতে ঠান্ডা পানি দিয়ে সামান্য লেবুর রস দিন৷ এতে ছোট টাওয়েল ভিজিয়ে পানিটা চিপে উঁচু করা পায়ে দুই মিনিট পেচিয়ে রাখুন৷ নিচের আর্টিকেলগুলো দেখতে পারেন আরো জানার জন্য

http://www.webmd.com/baby/ss/slideshow-fetal-development

http://www.webmd.com/baby/ss/slideshow-what-not-to-eat-when-pregnant

http://www.webmd.com/baby/video/eddleman-understanding-pre-natal-screening-tests

http://www.webmd.com/baby/guide/pregnancy-discomforts-causes

সন্তান গর্ভে আসায় হরমোনের কারনেই অনেকের খাওয়া দাওয়া সুন্দরভাবে করতে পারেন না আবার অনেকে এমনও আছেন গন্ধের জন্য খাবারের কাছেও যেতে পারেন না, অনেকে কাছে যেয়ে খেতে পারলেও বমি করে ফেলেন একটু পরেই ইত্যাদি নানা সমস্যা থাকতে পারে কারো কারো বেলায়, অনেকে আবার বেশ ভালো খাওয়া দাওয়া করে সুস্থ্য থাকেন সব অবস্থাই সত্য তবে এ ক্ষেত্রে যার যে রকম অবস্থা হোক না কেন বোনেরা আমার একটু খেয়াল করুন আপনি মা হতে যাচ্ছেন কত বড় মর্যাদা আল্লাহ আপনাকে দিতে যাচ্ছেন সেটা বরন করতে একটু কষ্ট হওয়াটা স্বাভাবিক দুনিয়ার জীবনে একটি জিনিষ পেতে হলে কত পরিশ্রম করতে হয়,আর আপনি একজন সন্তানের মা হতে যাচ্ছেন, হবে আপনারই একান্ত আদরের, যাকে দেয়া হচ্ছে আপনার জীবনকে আরো আনন্দময় করে দেয়ার জন্য,আপনার চোখ ও মনকে প্রশান্তি দিয়ে ভরে দেয়ার জন্য, দুনিয়ার সব পঙ্কিলতার মাঝে আশার আলো এনে দেয়ার জন্য, দুনিয়া থেকে চলে যেতে হলেও আপনার প্রতিনিধী রেখে যাচ্ছেন যে সদকায়ে জারিয়া হয়ে কাজ করবে ও দোয়া করবে, যার জন্মের কারনে আপনাকে মর্যাদার উচ্চ আসন দেয়া হয়েছে দুনিয়াতেও এবং আখেরাতেও। এরপরও রয়েছে সেই হাদীসের শিক্ষা যে, মুমিনের জন্য একটি কাঁটার আঘাতও গুনাহ মাফের কারন, সুবহানাল্লাহ। এতো বিনিময় রয়েছে সামনে,তাহলে সবর করাটা কতটা জরুরী বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। অন্যকে যতটা সমস্যা না করে নিজেকে সামাল দেয়া যায় সেটাই উত্তম, নিজের অন্তরে একটা তৃপ্তি ও সাহস আসে এবং এর মাধ্যমে মহান রবের উপর ভরসা আরো বেড়ে যায়। নিজের পিতামাতার কথা ভেবে দোয়া করুন বেশী করে। এই অবস্থাটা ভোগ করেই আজ আপনি এতদূর আসতে পেরেছেন। এখানে স্বামীকেও মনে কৃ্তজ্ঞতাবোধ আনা প্রয়োজন এই কারনে যে, স্ত্রীর মা বাবার কষ্টের ফলে আজ এই স্ত্রীকে পেয়েছেন যিনি তার সন্তানকে উপহার দিতে যাচ্ছে। তাদের প্রতি সম্মান দেখানোটা প্রয়োজন। মহান আল্লাহ বলেছেন-

আমি মানুষকে এই মর্মে নির্দেশনা দিয়েছি যে, তারা যেন পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহার করে তার মা কষ্ট করে তাকে গর্ভে ধারণ করেছিলো এবং কষ্ট করেই তাকে প্রসব করেছিলো তাকে গর্ভে ধারণ ও দুধপান করাতে ত্রিশ মাস লেগেছে এমন কি যখন সে পূর্ণ যৌবনে পৌঁছেছে এবং তারপর চল্লিশ বছর বয়সে উপনীত হয়েছে তখন বলেছেঃ হে আমার রব, তুমি আমাকে ও আমার পিতামাতাকে যেসব নিয়ামত দান করেছো আমাকে তার শুকরিয়া আদায় করার তাওফীক দাও আর এমন সৎ কাজ করার তাওফীক দাও যা তুমি পছন্দ করো আমার সন্তানদেরকে সৎ বানিয়ে আমাকে সুখ দাও আমি তোমার কাছে তাওবা করছি আমি নির্দেশের অনুগত (মুসলিম) বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত।         সূরা আহকাফ:১৫

এই আয়াতে মায়ের কষ্ট করার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে কত আবেগপ্রবনভাবে। একজন মা সন্তানকে পেটে রেখে দিনে দিনে কিভাবে চলাফেরা করছে, একটু কেউ চিন্তা করলেই কিছুটা হলেও অনুভব করতে পারে।

https://www.youtube.com/watch?v=9pBudFmOoLA

সন্তানদের  মা-বাবা উভয়েরই সেবা করতে হবে কিন্তু গুরুত্বের দিক দিয়া মায়ের অধিকার এ কারণে বেশী যে, সে সন্তানের জন্য বেশী কষ্ট স্বীকার করে। এ আয়াত এ দিকই ইঙ্গিত করে।  হাদিসে এসেছে—( কিছুটা শাব্দিক পার্থক্যসহ হাদীসটি বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনে মাজা, মুসনাদে আহমদ এবং ইমাম বুখারীর আদাবুল মুফরাদে)

এক ব্যক্তি নবীকে ﷺ জিজ্ঞেস করলো, আমার ওপর কার খেদমতের হক সবচেয়ে বেশি? নবী (সা.) বললেনঃ তোমার মা’র; সে বললোঃ তারপর কে? তিনি বললেনঃ তোমার মা। সে বললোঃ তারপর কে? তিনি বললেনঃ তোমার মা। সে আবারো জিজ্ঞেস করলোঃ তারপর কে? তিনি বললেনঃ তোমার বাপ। নবীর ﷺ এই বাণী হুবহু এ আয়াতেরই ব্যাখ্যা। কারণ, এতেও মায়ের তিনগুণ বেশী অধিকারের প্রতি ইঙ্গিত দেয়া হয়েছেঃ (১) কষ্ট করে মা তাকে গর্ভে ধারণ করেছে। (২) কষ্ট করেই তাকে প্রসব করেছে এবং (৩) গর্ভধারণ ও দুধ পান করাতে ৩০ মাস লেগেছে।

সূরা লোকমানের ১৪ আয়াত এসেছে—

আর প্রকৃতপক্ষে আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার হক চিনে নেবার জন্য নিজেই তাকিদ করেছি। তার মা দুর্বলতা সহ্য করে তাকে নিজের গর্ভে ধারণ করে এবং দু’বছর লাগে তার দুধ ছাড়তে। (এ জন্য আমি তাকে উপদেশ দিয়েছি) আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো এবং নিজের পিতা-মাতার প্রতিও, আমার দিকেই তোমাকে ফিরে আসতে হবে।

 

একটি মামলায় হযরত আলী ও হযরত ইবনে আব্বাস সেই বিষয়টিই তুলে ধরেছিলেন এবং তার ওপর ভিত্তি করে হযরত উসমান (রা:) তাঁর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছিলেন। ঘটনাটা হচ্ছে, হযরত উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুর খিলাফত যুগে এক ব্যক্তি জুহায়না গোত্রের একটি মেয়েকে বিয়ে করে এবং বিয়ের ছয় মাসের মধ্যেই তার গর্ভ থেকে একটি সুস্থ ও ত্রুটিহীন শিশু ভুমিষ্ঠ হয়। লোকটি হযরত উসমানের কাছে ঘটনাটা পেশ করে। তিনি উক্ত মহিলাকে ব্যভিচারিণী ঘোষণা করে তাকে রজম করার নির্দেশ দেন। হযরত আলী (রা.) এই ঘটনা শোনা মাত্র হযরত উসমানের (রা.) কাছে পৌঁছেন এবং বলেনঃ আপনি এ কেমন ফয়সালা করলেন? জবাবে হযরত উসমান বললেন, বিয়ের ছয় মাস পরেই সে জীবিত ও সুস্থ সন্তান প্রসব করেছে। এটা কি তার ব্যভিচারিণী হওয়ার সুস্পষ্ট প্রমাণ নয়? হযরত আলী (রা.) বললেনঃ না, এর পর তিনি কুরআন মজীদের উপরোক্ত আয়াত তিনটি ধারাবাহিভাবে পাঠ করলেন। সূরা বাকারায় আল্লাহ বলেছেনঃ “যে পিতা দুধ পানের পূর্ণ সময় পর্যন্ত দুধ পান করাতে চায় মায়েরা তার সন্তানকে পূর্ণ দুই বছর দুধ পান করাবে।” সূরা লোকমানে বলেছেনঃ “তার দুধ ছাড়তে দুই বছর লেগেছে। সূরা আহক্বাফে বলেছেনঃ “তাকে গর্ভে ধারণ ও দুধ পান করাতে ত্রিশ মাস লেগেছে।” এখন ত্রিশ মাস থেকে যদি দুধ পানের দুই বছর বাদ দেয়া হয় তাহলে গর্ভে ধারণকাল ছয় মাস মাত্র অবশিষ্ট থাকে। এ থেকে জানা যায়, গর্ভ ধারণের স্বল্পতম মেয়াদ ছয় মাস।

এই সময়ের মধ্যে সুস্থ ও পূর্ণাঙ্গ বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হতে পারে। অতএব, যে মহিলা বিয়ের ছয় মাস পরে সন্তান প্রসব করেছে তাকে ব্যভিচারিণী বলা যায় না। হযরত আলীর (রা.) এই যুক্তি-প্রমাণ শুনে হযরত উসমান বললেনঃ আমার মন-মস্তিষ্কে এ বিষয়টি আদৌ আসেনি। এরপর তিনি মহিলাটিকে ডেকে পাঠালেন এবং তাঁর সিদ্ধান্ত পরবর্তন করলেন। একটি বর্ণনাতে আছে, হযরত ইবনে আব্বাসও এ বিষয়ে হযরত আলীর মতকে সমর্থন করেছিলেন এবং তারপর হযরত উসমান তাঁর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছিলেন। (ইবনে জারীর, আহকামুল কুরআন জাসসাস, ইবনে কাসীর)।

এ তিনটি আয়াতে একত্রিত করে পাঠ করলে যেসব আইনগত বিধান পাওয়া যায় তা হচ্ছেঃ

একঃ যে মহিলা বিয়ের পর ছয় মাসের কম সময়ের মধ্যে সুস্থ ও পূর্ণাঙ্গ সন্তান প্রসব করবে (অর্থাৎ তা যদি গর্ভপাত না হয়, বরং স্বাভাবিক প্রসব হয়) সে ব্যভিচারিণী সাব্যস্ত হবে এবং এবং তার স্বামীর বংশ পরিচয় তার সন্তান পরিচিত হবে না।

দুইঃ যে মহিলা বিয়ের ছয় মাস পর বা তার চেয়ে বেশী সময় পর জীবিত ও সুস্থ সন্তান প্রসব করবে শুধু এই সন্তান প্রসব করার কারণে তাকে ব্যভিচারের অভিযুক্ত করা যাবে না। তার স্বামীকে তার প্রতি অপবাদ আরোপের অধিকার দেয়া যেতে পারে না এবং তার স্বামী ঐ সন্তানের বংশ পরিচয় অস্বীকার করতে পারে না। সন্তান তারই বলে স্বীকার করা হবে এবং মহিলাকে শাস্তি দেয়া যাবে না।

তিনঃ দুধপান করানোর সর্বাধিক মেয়াদ দুই বছর। এই বয়সের পর যদি কোন শিশু কোন মহিলার দুধ পান করে তাহলে সে তার দুধ মা হবে না .

সর্বাধুনিক মেডিকেল গবেষণা অনুসারে একটি শিশুকে পরিপুষ্টি ও পরিবৃদ্ধি লাভ করে জীবন্ত ভূমিষ্ঠ হওয়ার উপযোগী হতে হলে কমপক্ষে ২৮ সপ্তাহ মাতৃগর্ভে অবস্থান প্রয়োজন। এটা সাড়ে ছয় মাস সময়ের সামান্য বেশী। ইসলামী আইনে আরো প্রায় অর্ধ মাস সুযোগ দেয়া হয়েছে। কারণ, একজন মহিলার ব্যভিচারিণী প্রমাণিত হওয়া এবং একটি শিশুর বংশ পরিচয় থেকে বঞ্চিত হওয়া বড় গুরুতর ব্যাপার। মা ও শিশুকে আইনগত এই কঠিন পরিণাম থেকে রক্ষা করার জন্য বিষয়টির নাজুকতা আরো বেশি সুযোগ পাওয়ার দাবী করে। তাছাড়া গর্ভ কোন্ সময় স্থিতি লাভ করেছে তা কোন ডাক্তার, কোন বিচারক এবং এমনকি মহিলা নিজে এবং তাকে গর্ভদানকারী পুরুষও সঠিকভাবে জানতে পারে না। এ বিষয়টিও গর্ভধারণেরা স্বল্পতম আইনগত মেয়াদ নির্ধারণে আরো কয়েক দিনের অবকাশ দাবী করে।

According to Wikipedia–

As the word is used in United States constitutional law since Roe v. Wade, viability is the potential of the fetus to survive outside the uterus after birth, natural or induced, when supported by up-to-date medicine. Fetal viability depends largely on the fetal organ maturity, and environmental conditions

There is no sharp limit of development, age, or weight at which a human fetus automatically becomes viable. According to studies between 2003 and 2005, 20 to 35 percent of babies born at 23 weeks of gestation survive, while 50 to 70 percent of babies born at 24 to 25 weeks, and more than 90 percent born at 26 to 27 weeks, survive. It is rare for a baby weighing less than 500 g (17.6 ounces) to survive. A baby’s chances for survival increases 3-4% per day between 23 and 24 weeks of gestation and about 2-3% per day between 24 and 26 weeks of gestation. After 26 weeks the rate of survival increases at a much slower rate because survival is high already.

https://www.youtube.com/watch?v=1CDE-uHC9uE

https://www.youtube.com/watch?v=UHcaq4jYomo

কিছু দূর্বলতার দিক

হাদীস থেকে আপনারা জানেন মায়ের পায়ের নীচে সন্তানের জান্নাত। কথাপ্রসংগে বলে নেই যে, মায়ের পায়ের নিচে ছেলে মেয়ে উভয়ের জান্নাত, তাই স্ত্রী যেমন স্বামীকে সাহায্য করবে যেন মায়ের খেদমত করতে পারেন, তেমনি স্বামীকেও সচেতন থাকতে হবে যেন, স্ত্রী তার মায়ের সন্তুষ্টি নিয়ে থাকতে পারেন। এই উভয়ের জান্নাতের ব্যাপারে পারস্পরিক প্রতিযোগীতা লাগিয়ে সহযোগীতা করা দরকার, তাহলে এই পরিবারের সন্তানটিও ইন শা আল্লাহ তেমনিভাবে ভূমিকা রাখবে।

যাক এবার আরো কিছু দূর্বলতার দিক তুলে ধরবো যা সন্তান গর্ভে থাকা অবস্থায় হবু মায়েরা করে থাকেন বা পরিবার ও সমাজের অন্যান্যদের দিয়ে হয়ে থাকে।

অনেকে বিভিন্ন কারনে অস্থির হয়ে পড়েন এবং সন্তান পেটে থাকার কারনে অনেকে আবার চলাফেরা স্বাভাবিকভাবে করতে চান না এবং অন্যদের বুঝাতে চান যে সে অসুস্থ। আসলে এটা নিজের জন্যই ক্ষতিকর। নিজেকে শান্ত ও সুস্থভাবে চলাফেরার যোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করে চলতে হবে এবং কোনভাবেই অস্থির হওয়া যাবে না। কারো কারো বমি করার বা ভাব থাকার অবস্থা হয়ে থাকে,এই ক্ষেত্র এই অস্থিরতা থেকে বমি ভাব আরো বেড়ে যায় তাই মানসিক প্রশান্তি দরকারনিজেকে প্রায়ই self psychotherapy  দিতে হবে।

তবে আপনাদের জন্য আমার কিছু টিপস এখানে উল্লেখ করলাম যা বমিভাবকে নিয়ন্ত্রণ করতে সহজ হবে ইন শা আল্লাহ।

১।খাবারের আগে হাত ধূয়ে ও কাঁচা খাবার ভাল করে ধূয়ে খাবেন

২। অবশ্যই মহান আল্লাহর নাম নিয়ে খাবেন, একটু একটু করে বার বার খাবেন এবং প্রতিবারই দোয়া করবেন

যাদের বেশী বমি হয় তাদের অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে

গন্ধকে অতিক্রম করার জন্য আপনার পছন্দের ঘ্রানের জিনিষটি হাতের কাছেই রাখুনযেমন অনেকে লেবু, এলাচ, লবংগ বা কোন আতর ইত্যাদি

বমি যদি আসতেই চায় তখন কিছু সময়ের জন্য এমন কোন কিছুতে ব্যস্ত করুন নিজেকে যেন সেটা ভুলে যেতে পারেনযেমন কারো সাথে ভালো আলাপ করা বা বাতাসের নীচে বসে কোন বই পড়া বা কিছু শুনা

বমি বমি ভাব আসতে থাকলেই আপনি একটু স্বাভাবিক বা ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ, বিশেষ করে ঘাড় ও মাথায় হালকা ভাবে মুছে বাতাসে বসুন

যাদের জমজমের পানি আছে তারা সেটা আল্লাহর নামে তাঁরই কাছে সাহায্য চেয়ে খেয়ে নিতে পারেন

যে খাবারটা খেতে আপনি পারেন না সেটা আপাতত না খেয়ে একই খাবারের উপাদান আছে অন্য খাবার দিয়ে তা পূরন করতে পারেন

অনেকে ডিম খেতে পারেন না ডিম দিয়ে তৈ্রী পুডিং বা অন্য নাস্তা খেতে পারেন, বা মুরগী /গরু / খাসী যে কোন একটা অথবা ডাল খেতে পারেন

অনেক সময় এসিডিটি থেকে বমি ভাব আসতে পারেতাই ভাজা খাবার বাদ  দিয়ে দিন প্রয়োজনে,  তরল এন্টাসিড খেতে পারেন

১০ আমাদের দেশে আমরা তেলে ভেজে ভেজে সব তরকারী রান্না করি যা স্বাস্থ্যকর নয় এবং এসিডিটি বেড়ে যায় তাই রান্নার প্রনালী প্রয়োজনে পরিবর্তন করে নিতে হবে

১১ অনেক সময় বমি হলে আবার হতে চায় সেটা ইলেক্ট্রোলাইট imbalance এর জন্য হয় তখন একটু স্যালাইন খেয়ে নিন

১২ খাবারের ৬টি উপাদান যেন শরীরে প্রতিদিন যায় সেভাবে খেতে চেষ্টা করবেন

১৩ যখন বমি হতেই চায় তখন আপনারা দাঁড়িয়ে থাকবেন না, বসে নিজেকে নিরাপদ জায়গায় রাখুন বমি হওয়ার সময় অনেক চাপ পড়ে শরীরের ভিতরে  বিশেষ করে নীচের পেটে

১৪ অনেক সময় অস্বাভাবিক গর্ভ্ধারনে অতিরিক্ত বমি হতে পারে তাই সে ক্ষেত্রে শুরুতেই চিকিৎসকের চেকআপ প্রয়োজন

   ##  প্রথম ৩মাসের মধ্যে একটি আলট্রাসনোগ্রাম করিয়ে স্বাভাবিক অবস্থানে গর্ভধারন হয়েছে কিনা বা প্লাসেন্টা(যাকে ফুল বলে) পজিসন কি? তা জেনে নিলে ভাল

রাসূল(সঃ) বলেছেনযে ব্যক্তি ধৈর্য্যের পথে অগ্রসর হয় আল্লাহ তাকে ধৈর্য্য ধারনের ক্ষমতা দান করেন বস্তত; আল্লাহর দেয়া অবদানগুলোর মধ্যে ধৈর্য্য শক্তির চেয়ে উত্তম ও প্রশস্ত অবদান আর কিছু নেই

সহিহ মুসলিম ৩য় খণ্ড ২২৯৩ বড় হাদীসের কিয়দংশ

গর্ভবতী মায়েদের খাদ্য তালিকায় খেজুর থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খেজুর এমন একটি খাবার যাতে রয়েছে অভাবনীয় কার্যকরি ক্ষমতা।

খেজুরে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি উপাদান, ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান যা গর্ভের সন্তানের স্বাভাবিক বেড়ে উঠাতে অত্যন্ত সহায়ক। হজমে অত্যন্ত সহায়ক। সেজন্য ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভবতী মায়েদের জন্য এটি অত্যন্ত নিরাপদ। এমনকি ডায়াবেটিক আক্রান্ত মায়েদের ক্ষেত্রেও।

খেজুরে রয়েছে পলিফেনোলিক এ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা বিভিন্ন ধরনের সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করে। এছাড়াও এটি প্রাকৃতিক এ্যান্টাসিড হিসাবে কাজ করে। এছাড়াও এতে রয়েছে সহজে দ্রুত রক্তপাত প্রবণতা রোধ করার ক্ষমতা, যা গর্ভবতী মাকে অনেকটাই সুরক্ষিত রাখে।

খেজুরের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি১২ কেরোটিন বা এ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা গর্ভবতী মায়েদের দেহে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার যেমন কোলন ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার, প্যানক্রায়েটিক ক্যান্সারের এ্যান্টিবডিক হিসেবে কাজ করে।

খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ যা হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ সঠিক রাখতে সহায়তা করে। এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম যা শিশুর হাড় ও মাংসপেশী গঠনে সহায়ক।

গর্ভকালীন সময়ে মায়েদের বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ যেমন কোষ্ঠকাঠিন্যতা, রুক্ষ্মতা এবং পানি শূন্যতা দুর করতে খেজুর খুবই কার্যকরি।

খেজুর গর্ভবতী মায়েদের প্রসূতিকালীন ব্যাথা সংক্ষিপ্ত করতে সহায়তা করে

২০১১ সালের Journal of Obstetnics and Gynocology নামক পত্রিকায় এক প্রতিবেদনে গবেষণার এই মত প্রকাশ পায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ৯ মাসের গর্ভবতী মায়েদের প্রতিদিন ৬টি করে খেজুর খাওয়ালে খেজুর না খাওয়া মায়েদের তুলনায় তাদের প্রসূতিকালীন ব্যাথা অনেক কম সময় থাকে। তাদের এই গবেষণা ৭০% গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এই ফলাফল প্রযোজ্য হয়।

আমলকী হচ্ছে এমন একটি খাবার, যেটি গর্ভাবস্থায় খাওয়া ভালো। আমলকীতে থাকে সলিউবল ফাইবার, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন-সি। গর্ভাবস্থায় মুড ভালো করতে আমলকীর একটি চমৎকার ভূমিকা রয়েছে। গর্ভাবস্থায় এটি খেলে সময়ের আগে প্রসব হওয়ার ঝুঁকি কমে।

এটি শিশুর স্মৃতিশক্তি ভালো করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে থাকা আয়রন রক্তস্বল্পতার সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, রক্তচাপ কমায়।

সকালের ক্লান্তিভাব–সকালের ক্লান্তিভাব গর্ভাবস্থার একটি বড় সমস্যা। আমলকী শক্তি বাড়ায়, অবসন্নতা এবং ক্লান্তিভাব দূর করে।

রক্ত পরিশোধন করে–এটি শরীর থেকে টক্সিক উপাদান বের করে দিতে সাহায্য করে। এটি ভ্রূণকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। তবে যেকোনো খাবারই বেশি খাওয়া ঠিক নয়। খালি পেটে আমলকী খেলে এবং অতিরিক্ত খেলে এসিডিটির সমস্যা হতে পারে। তাই পরিমিত খাওয়া ভালো।

https://www.youtube.com/watch?v=QMxsvHfd8fw

https://www.youtube.com/watch?v=71EUQFeYW5g

https://www.youtube.com/watch?v=F8c_Jr7sn7A

https://www.youtube.com/watch?v=ljmkoYnaCcM

https://www.youtube.com/watch?v=NWK6kJcMytI

https://www.youtube.com/watch?v=kpF8lNvAosU

https://www.youtube.com/watch?v=ySIWLbADMxQ

 

নারীর জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা সময় হল গর্ভাবস্থা। শুধু নারী নয়, তার শিশুর জীবন কিভাবে গড়ে উঠবে তা অনেকটাই নির্ভর করে এ সময়ের ওপরে। সময় পেলে পড়ে নিন গর্ভাবস্থায় যেসকল খাবার খাবেন না।

কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, যে সময়টাতে নিবিড় পরিচর্যা এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশের মাঝে থাকা উচিত গর্ভবতী মায়ের, সে সময়টাতেই খুব ভুল কিছু ধারণার কারণে তাকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে। বাংলাদেশের শিক্ষিত পরিবারগুলোতেও দেখা যায় বিভিন্ন ধরণের কুসংস্কারের প্রচলন।