কুর’আন সুন্নাহর আলোকে একজন মুমিনার দৈনন্দিন আমল

 

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

একজন মুমিনার দৈনন্দিন আমল কি হবে তা জানা বুঝা ও আমল করার জন্য রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবনী জানা অত্যাবশ্যক। সেই সাথে মহিলা সাহাবীদের  রা জীবনকেও সামনে রাখা প্রয়োজন।

প্রতিটি ব্যক্তির নিজস্ব পরিবেশ, অবস্থার আলোকেই চিন্তা করতে হবে বিষয়টি।

সংক্ষিপ্ত আকারে একটি ছোট্ট লেখনী  উপস্থাপন করা হলো।

কুর’আন সুন্নাহর আলোকে একজন মুমিনার দৈনন্দিন আমল

 

একজন মুসলিম হিসেবে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলোঃ

লক্ষ্যঃ  মহান রবের সন্তুষ্টি ও ক্ষমা লাভ যেনো আখেরাতে আবার জান্নাতে ফিরে যেতে পারি।

উদ্দেশ্যঃ লক্ষ্যতে পৌছানোর জন্য যে প্রচেষ্টা, এই প্রচেষ্টা কতদিন অব্যাহত রাখতে হবে তা মহান আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছেন-

فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَكُن مِّنَ السَّاجِدِينَ﴾ وَاعْبُدْ رَبَّكَ حَتَّىٰ يَأْتِيَكَ الْيَقِينُ

তুমি নিজের রবের প্রশংসা সহকারে তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করতে থাকো, তাঁর সকাশে সিজ্‌দাবনত হও এবং যে চূড়ান্ত সময়টি আসা অবধারিত সেই সময় পর্যন্ত নিজের রবের বন্দেগী করে যেতে থাকো৷ সূরা হিজরঃ ৯৮-৯৯

এই বন্দেগী করতে গিয়ে রাব্বুল আ’লামীন ৪টি গুনকে মূলধন করে নিতে বলেছেন। এই মূলধন ছাড়া দুনিয়া ও আখেরাতে ধ্বংস অনিবার্য বলে শপথ করে ঘোষনা দিয়েছেন।

وَالْعَصْرِ

সময়ের কসম৷

إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ

মানুষ আসলে বড়ই ক্ষতির মধ্যে রয়েছে৷

إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ

তবে তারা ছাড়া যারা

১। ঈমান এনেছে ও ২। সৎকাজ করতে থেকেছে এবং ৩। একজন অন্যজনকে হক কথার ও ৪। সবর করার উপদেশ দিতে থেকেছে

ভ্রান্ত মত ও পথ থেকে সঠিক মত ও পথকে ছাঁটাই করে আলাদা করে দেয়া হয়েছে ৷ এখন যে কেউ তাগুতকে  অস্বীকার করে আল্লাহর ওপর ঈমান আনে, সে এমন একটি মজবুত অবলম্বন আঁকড়ে ধরে, যা কখনো ছিন্ন হয় না ৷ আর আল্লাহ (যাকে সে অবলম্বন হিসেবে আঁকড়ে ধরেছে ) সবকিছু শোনেন ও জানেন ৷সূরা বাকারাঃ ২৫৬

উপরের বিষয়গুলো সামনে রেখেই আমাদের প্রতিদিনের চলার পথের নির্দেশিকা নিতে হবে।

এতোদিনের সকল গুনাহ, অবাধ্যতা, সীমালংঘন, দ্বিধা-দ্বন্ধ থেকে মুক্ত হয়ে সঠিকভাবে তাওবা ও ইস্তেগফার করে, নিজেকে দীনের পথে ও ভালো কাজের দিকে প্রতিষ্ঠিত(ইস্তিকামাত) থাকার জন্য দৃঢ়তার সাথে প্রতিনিয়ত সচেতন থাকতে হবে। এর জন্য যা প্রয়োজন, তা হলো-

১। জ্ঞান ও বিবেকের(আক্বল) সমন্বয়। ২। পরিকল্পিতভাবে জীবনের পদক্ষেপ নেয়া ।

মহান আল্লাহ বলেছেন-

হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় করো, তাঁর দরবারে নৈকট্য লাভের উপায় অনুসন্ধান করো এবং তাঁর পথে প্রচেষ্টা ও সাধনা করো, সম্ভবত তোমরা সফলকাম হতে পারবে।  আল মায়েদাহঃ ৩৫

মহান আল্লাহ তা’লা বলেছেন:

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَلْتَنْظُرْ نَفْسٌ مَا قَدَّمَتْ لِغَدٍ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ (18) وَلَا تَكُونُوا كَالَّذِينَ نَسُوا اللَّهَ فَأَنْسَاهُمْ أَنْفُسَهُمْ أُولَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ (19)

হে ঈমানদারগণ, আল্লাহ তা’লাকে ভয় কর এবং প্রত্যেক ব্যক্তিই যেন খেয়াল রাখে যে, সে আগামী দিনের জন্য কি ব্যবস্থা রেখেছে। আর তোমরা ভয় করো আল্লাহ তা’লাকে। আল্লাহ নিশ্চিতই তোমাদের সেই সব আমল সম্পর্কে অবহিত যা তোমরা করতে থাকো। তোমরা সেই লোকদের মত হয়ে যেও না যারা আল্লাহকে ভুলে গিয়েছে। ফলে আল্লাহ তাদেরকে আত্মভোলা বানিয়ে দিয়েছেন। এসব লোকেরাই ফাসেক। সুরা আল হাশর: ১৮-১৯

সময়! জীবনের অপর নাম। এই জীবনকাল সীমাবদ্ধ। ইরশাদ হয়েছে-

আল্লাহ তায়া’লা বলেন, “আমি কি তোমাদেরকে এতটা বয়স দেইনি, যাতে যা চিন্তা করার বিষয় চিন্তা করতে পারতে? উপরন্তু তোমাদের কাছে সতর্ককারীও আগমন করেছিল।” (সূরা ফাতির : ৩৭)

আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন বলবেন,

﴿أَوَلَمْ نُعَمِّرْكُمْ مَا يَتَذَكَّرُ فِيهِ مَنْ تَذَكَّرَ وَجَاءكُمُ النَّذِيرُ

অর্থাৎ, আমি কি তোমাদেরকে এতো দীর্ঘ জীবন দান করিনি যে, তখন কেউ উপদেশ গ্রহণ করতে চাইলে উপদেশ গ্রহণ করতে পারত? তোমাদের নিকট তো সতর্ককারীও এসেছিল। (সূরা ফাত্বির ৩৭)

ইবনে আব্বাস (রাঃ) ও সত্যানুসন্ধানী উলামাগণ বলেন, আয়াতের অর্থ এই যে, আমি কি তোমাদেরকে ৬০ বছর বয়স দিইনি? পরবর্তী হাদীসটি এই অর্থের কথা সমর্থন করে। কেউ বলেন যে, এর অর্থ ১৮ বছর। আর কিছু লোক ৪০ বছর বলেন। এটি হাসান (বাসরী) কালবী ও মাসরুকের মত। বরং এ কথা ইবনে আব্বাস থেকেও বর্ণিত হয়েছে। তাঁরা বলেন যে, যখন কোন মদীনাবাসী চল্লিশ বছর বয়সে পদার্পণ করেন, তখন তিনি নিজেকে ইবাদতের জন্য মুক্ত করেন। কিছু লোক এর অর্থ পরিণত বয়স করেছেন। আর আল্লাহর বাণীতে উক্ত ‘সতর্ককারী’ বলতে ইবনে আব্বাস (রাঃ) ও বেশীরভাগ আলেমের মতে স্বয়ং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। কিছু লোকের নিকট সতর্ককারী হল বার্ধক্য। এটা ইকরিমাহ্, ইবনে উয়াইনাহ ও অন্যান্যদের মত।

এ মর্মে হাদীসসমূহ নিম্নরূপ ঃ

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ أَعْذَرَ الله إِلَى امْرِئٍ أَخَّرَ أجَلَهُ حَتَّى بَلَغَ سِتِّينَ سَنَةً رواه البخاري

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “আল্লাহ তাআলা ঐ ব্যক্তির জন্য কোন ওজর পেশ করার অবকাশ রাখেন না (অর্থাৎ, ওজর গ্রহণ করবেন না), যার মৃত্যুকে তিনি এত পিছিয়ে দিলেন যে, সে ৬০ বছর বয়সে পৌঁছল।” (বুখারী ৬৪১৯)

উলামাগণ বলেন, ‘এই বয়সে পৌঁছে গেলে ওজর-আপত্তি পেশ করার আর কোন সুযোগ থাকবে না।’হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

একজন মানুষের যৌবনকালই হল, তার জীবনের স্বর্ণ যুগ এবং কর্ম সম্পাদন, ক্যারিয়ার গঠন ও নেক আমল করার মুখ্য সময়। এ সময়টিকে যে কাজে লাগাবে সে উন্নতি করতে পারবে। আর যে এ সময়টিকে হেলা-খেলায় নষ্ট করবে সে জীবনে কোনো উন্নতি করতে পারবে না। কারণ, মানুষের যৌবনকাল, দুটি দুর্বলতা- বাল্যকাল ও বার্ধক্য কাল-এর মাঝে একটি সবলতা বা শক্তি। সুতরাং এ সময়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া ও কাজে লাগানোর জন্য চেষ্টা করাই হলো বুদ্ধিমানের কাজ এবং তার জীবনের সুবর্ণ সুযোগ। এ কারণেই রাসূল সাল্লাল্লাহু ‌আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

 

«اغتنم خمسا قبل خمس: شبابك قبل هرمك، وصحتك قبل سقمك، وغناك قبل فقرك، وفراغك قبل شغلك، وحياتك قبل موتك »

 

“তোমরা পাঁচটি জিনিসকে পাঁচটি জিনিসের পূর্বে গণিমত-সুবর্ণ সুযোগ- মনে কর। তোমার যৌবনকে কাজে লাগাও বার্ধক্য আসার পূর্বে, তোমার সুস্থতাকে কাজে লাগাও তোমার অসুস্থতার পূর্বে, তোমার সচ্ছলতাকে কাজে লাগাও অসচ্ছলতার পূর্বে, তোমার অবসরতাকে কাজে লাগাও তোমার ব্যস্ততার পূর্বে, আর তোমার হায়াতকে কাজে লাগাও তোমার মৃত্যু আসার পূর্বে”। বর্ণনায় হাকিম, হাদিস: ৭৮৪৬ তিনি হাদিসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন। হাদিসটি বুখারি ও মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী, তবে তারা হাদিসটি উল্লেখ করেননি।

হাদিসে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‌আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

 

«لا تزول قدما ابن آدم يوم القيامة من عند ربه، حتى يُسأل عن خمس: عن عمره فيم أفناه؟ وعن شبابه فيم أبلاه؟ وعن ماله من أين اكتسبه وفيم أنفقه؟ وماذا عمل فيما علم؟”

 

“কিয়ামতের দিন পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া ব্যতীত, কোনো আদম সন্তান আল্লাহর সম্মুখ হতে পা সরাতে পারবে না। তার জীবনকে কোথায় ব্যয় করেছে। যৌবনকে কোথায় ক্ষয় করেছে, সম্পদ কোথায় থেকে অর্জন করেছে এবং কোথায় ব্যয় করছে। আর যা জেনেছে, সে অনুযায়ী কতটুকু আমল করছে”। তিরমিযি, হাদিস: ২৪১৬; আল্লামা আলবানী হাদিসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন।

 

বুদ্ধিমান ব্যক্তির কর্তব্য হলো তার সময়কে ভাগ করে নেয়া। কিছু সময় ব্যয় করবে তার প্রভুর প্রার্থনায়, কিছু সময় ব্যয় করবে আল্লাহর সৃষ্টি কৌশল বিষয়ে চিন্তা করে, কিছু সময় রাখবে আত্মসমীক্ষার জন্য এবং কিছু সময় ব্যয় করবে জীবিকার প্রয়োজনে। (ইবনে হিব্বান)

কাজ মূলত তিন ধরনের:

১। নিজের প্রতি কর্তব্য ২। স্রষ্টার প্রতি কর্তব্য ৩। সৃষ্টির প্রতি কর্তব্য

তাই সময়কে কাজের সাথে সমন্বয় করে নিতে হবে।

মহান আল্লাহ বলেছেন:

আর মানুষ ততটুকু ফল লাভ করবে যতটুকু চেষ্টা সে করেছে, তার প্রচেষ্টা শিগগীরই দেখে নেয়া হবে। অতঃপর সে পুরোপুরি ফল লাভ করবে। আর পরিশেষে সবাইকে তোমাদের প্রতিপালকের কাছেই পৌঁছাতে হবে।  সূরা নাজম: ৩৯-৪২

 

সময়ের সদ্ব্যবহার বলতে কী বুঝি?

দায়িত্বের সবটুকু কাজ সুচারুরূপে বাস্তবায়ন করার জন্য পরিমিত সময়ের  সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারার নাম হলো সময়ের সদ্ব্যবহার।

ন্যূনতম সময় ব্যবহার করে সর্বোচ্চ আউটপুট নিশ্চিত করা। Proper utilization of time. এর মাধ্যমে নিজের এফিসিয়েন্সি বৃদ্ধি।

নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এফিসিয়েন্সি বৃদ্ধি করতে চাইলে কাজ বেশি করতে হবে অথবা নির্দিষ্ট কাজের ক্ষেত্রে এফিসিয়েন্সি বাড়াতে চাইলে কম সময়ে কাজটি শেষ করতে হবে।

যেহেতু আমাদের সময় কম তাই তাড়াতাড়ি কাজ করা কিন্তু তাড়াহুড়া না করা। তাড়াতাড়ি মানে হচ্ছে কাজ সম্পাদনের ক্ষেত্রে অযথা সময় নষ্ট না করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে দ্রুত কাজ শেষ করা। আর তাড়াহুড়া মানে হচ্ছে, যৌক্তিকতার ঊর্ধ্বে উঠে দ্রুত কাজ করা। অর্থাৎ যে কাজ যথাযথভাবে করতে সর্বনিম্ন ৫ মিনিট লাগবে, তা তার চেয়েও দ্রুত করার চেষ্টা করা।

যে কোন ভালো কাজের পরিকল্পনা করলেই নেকী লেখা হয়, আর সেটা বাস্তবায়ন করলে সেই নেকী বৃদ্ধি হতে থাকে। তাই আমরা আমাদের পরিকল্পনা করে নেই এবং সেটা বাস্তবায়ন শুরু করি মহান আল্লাহর নামে।

হাদীসে কুদসীতে এসেছে, মহান আল্লাহ তা’লা বলেন, বান্দা যখন আমার দিকে এক বিঘত অগ্রসর হয়, আমি তখন তার দিকে এক হাত এগিয়ে যাই। আর যখন সে আমার দিকে একহাত অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে এক কায়া পরিমাণ এগিয়ে যাই। আর সে যখন আমার দিকে হেঁটে আসে আমি তার দিকে দৌড়ে যাই। সহীহ আল বুখারী

পরিকল্পিতভাবে কাজ করলে তার একটি সুন্দর ফলাফল লাভ করা যায়:

১। একটি ভাল পরিকল্পনা ম্যাপের মত। আমাদের জীবনের লক্ষ্য অর্জনের পথের কোন অংশে রয়েছি ও আর কতটুকু পথ বাকী তার নির্দেশনা দেয়।

২। পরিকল্পনা আমাদের সময় এবং অর্থ সাশ্রয় করে। এটি মূলত আমাদের বর্জনীয় কাজকে কর্তন করে শুধু মাত্র প্রয়োজনীয় অংশটুকু আমাদের দৃষ্টিগোচর করাতে সক্ষম হয়।

৩। কোন কাজ করার আগে পরিকল্পনা করলে আমাদের মস্তিস্কের চর্চা হয় এবং ভাল ভাল কাজের টেকনিক মাথায় আসে যা অহীর নির্দেশ সমূহ বাস্তবায়নে সহজ হয়।। হিকমাহ বা প্রজ্ঞা বাড়ে।

৪। পরিকল্পনার ফলে কোন কাজটি আগে করতে হবে ও গুরুত্ব দিতে হবে, কিভাবে ও কত সময় লাগবে, অন্য কারো সহযোগীতা লাগবে কি না, তা বুঝা যায়।

৫। ভারসাম্যপূর্ণ জীবনে অভ্যস্ত হওয়ার সুযোগ আসে।

৬। আত্মশুদ্ধির জন্য সহায়ক হবে। কারন পরিকল্পনার আলোকে কাজের পর্যালোচন আসবে, এর মাধ্যমে নিজেকে সংশোধন করার সুযোগ আসবে।

 

একটা কথা প্রায়ই শুনে থাকি একটি ভাল পরিকল্পনা কাজের অর্ধেক

কিন্তু মহান আল্লাহ আমাদের জানিয়েছেন একটি ভালো কাজের পরিকল্পনা করলেই পুরু সাওয়াব, আর কাজটি করলে ১০-৭০০ বা এর চেয়েও বেশী সাওয়াব, সুবহানাল্লাহ

৭। আমাদের এই প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে পরিকল্পনা করে ফেললে অন্যসব ব্যস্ততা  থাকলেও সেই পরিকল্পনার কাজগুলো করার একটা তাগাদা থাকবে এবং আল্লাহর সাহায্যে কিছু হলেও বাস্তবায়ন হবে। আর তা না হলেও পরিকল্পনা করার কারনেও সাওয়াবের আমল বেড়ে যাবে ইন শা আল্লাহ যদি সহিহ নিয়্যত থাকে।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালা সৎকাজ ও পাপকাজের সীমা চিহ্নিত করে দিয়েছেন এবং সেগুলোর বৈশিষ্ট্য

স্পষ্টভাবে বিবৃত করেছেন। অতএব যে ব্যক্তি কোনো সৎকাজের সঙ্কল্প ব্যক্ত করেও তা সম্পাদন করতে পারেনি, আল্লাহ তার আমলনামায় একটি পূর্ণ নেকি লিপিবদ্ধ করার আদেশ দেন। আর সঙ্কল্প পোষণের পর যদি ওই কাজটি সম্পাদন করা হয়,

তাহলে আল্লাহ তার আমলনামায় ১০টি নেকি থেকে শুরু করে ৭০০ এমনকি তার চেয়েও কয়েকগুণ বেশি নেকি লিপিবদ্ধ করে দেন। আর যদি সে কোনো পাপ কাজের ইচ্ছা পোষণ করে; কিন্তু তা সম্পাদন না করে, তবে আল্লাহ এর বিনিময়ে তার আমলনামায় একটি পূর্ণ নেকি লিপিবদ্ধ করেন। আর যদি ইচ্ছা পোষণের পর সেই খারাপ কাজটি সে করেই ফেলে, তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার আমলনামায় শুধু একটি

পাপই লিখে রাখেন। (বোখারি : ৬০১০)।

 

পরিকল্পনা করতে হলে যে বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন –

১। লক্ষ্য স্থির করুন

২। নিজের সামর্থ্য, যোগ্যতা, শারিরীক অবস্থা ও পারিপার্শ্বিক অবস্থান

৩। কাজের তালিকায় থাকবে প্রতিদিনের আবশ্যকীয় কাজ, অতিরিক্ত কাজ, জরুরী কাজ।

৪। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজের তালিকা তৈরী করা

৫। কিছু কাজ অন্যকে দিয়ে করানোর পরিকল্পনা থাকা

৬। সময়কে বাঁচাতে হলে কিছু টিপস:

  • সুপরিকল্পিত ভাবে কাজ করা
  • সময়ের কাজ সময়ে করে ফেলা
  • কম সময়ের কাজ ততটুকু সময়ে করে ফেলা
  • যা প্রয়োজন নেই তা না করা
  • যা করে লাভ নেই তা না করা
  • যা করলে ক্ষতি তা না করা
  • যা দায়িত্ব না, তা না করা
  • অপ্রয়োজনীয় বা বাজে কথা ও কাজ না করা
  • অবসর সময়কে কাজে লাগানো
  • অপেক্ষার সময়কে কাজে লাগানো
  • এক কাজের ফাঁকে অন্য কাজ করার সুযোগ থাকলে করে ফেলা।

আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ইবাদাতের মধ্যে দুটি দিক বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হতে পারে-

আনুষ্ঠানিক ইবাদাত:

আনুষ্ঠানিক ইবাদত বলতে বিশেষভাবে হাক্কুল্লাহ তথা আল্লাহর হক্কের সাথে সম্পর্কিত ইবাদতগুলোকে বুঝাচ্ছি। ইসলামের পক্ষ থেকে যেসব আনুষ্ঠানিক ইবাদতের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে, সেসব বন্দেগি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

মু’আমেলাত:

আমলিয়াতের একটি বড় অংশজুড়ে রয়েছে আচার আচরণ তথা মুয়ামেলাত যা বিশেষভাবে হাক্কুল ইবাদ তথা বান্দার হক্কের সাথে সম্পর্কিত। এ মুয়ামেলাত বিভিন্ন ব্যক্তি বা ব্যক্তিসমষ্টির সাথে সম্পর্কিত। যেমন-

১. ব্যক্তিগত

২. পরিবার

৩. আত্মীয় স্বজন

৪. সামাজিক

৫. প্রাতিষ্ঠানিক প্রভৃতি

উপরিউক্ত সকল ক্ষেত্রের জন্যই আল্লাহর পক্ষ থেকে নিয়ম বিধান দেয়া হয়েছে। সেসব নিয়ম বিধান যথাযথভাবে মেনেই আমাদেরকে মুয়ামেলাত নিশ্চিত করতে হবে।

পরিকল্পনার আলোকে কাজ সফলতার কিছু টিপস-

১। ভোরে কাজ শুরু করা

সুন্নাহ অনুসরন, কাজের বারাকাহ ও সুস্থতার জন্য রাতের ঘুমকে সময় অনুযায়ী করে ভোরের কাজ শুরু করা।

আল্লাহ বলেন

,اللهُ الَّذِيْ جَعَلَ لَكُمُ اللَّيْلَ لِتَسْكُنُوْا فِيْهِ وَالنَّهَارَ مُبْصِرًا-

‘আল্লাহ যিনি তোমাদের জন্য রাত্রি বানিয়েছেন যাতে তোমরা তাতে প্রশান্তি লাভ করতে পার, আর দিনকে করেছেন আলোকময়’ (মুমিনঃ৬১)।

وَ مِنۡ اٰیٰتِهٖ مَنَامُکُمۡ بِالَّیۡلِ وَ النَّهَارِ وَ ابۡتِغَآؤُکُمۡ مِّنۡ فَضۡلِهٖ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیٰتٍ لِّقَوۡمٍ یَّسۡمَعُوۡنَ

‘তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে অন্যতম হ’ল রাত্রি ও দিবাভাগে তোমাদের নিদ্রা ও তার মধ্যে আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান। নিশ্চয় এতে বহু নিদর্শন রয়েছে সে সম্প্রদায়ের জন্য, যারা শোনে।’ (রূমঃ২৩)।

সাখর আল গামিদী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে তিনি বলেছেন: হে আল্লাহ আপনি দিনের অগ্রভাগে আমার উম্মাতের জন্য বরকত দিন৷ এবং তিনি যখন কোন ছোট বাহিনী কিংবা বড় দলকে অভিযানে পাঠাতেন, তাদের দিনের অগ্রভাগে পাঠাতেন৷ আর সাখর একজন ব্যবসায়ী ব্যক্তি ছিলেন৷ তিনি দিনের প্রথমভাগ থেকেই ব্যবসা পরিচালনা করতেন, ফলে তিনি ধনাঢ্য হয়ে ওঠেন এবং তার সম্পদ বৃদ্ধি পায়৷আহমদ ও সুনান গ্রন্থসমূহের প্রণেতাগণ কর্তৃক বর্ণিত৷

আর তিনি [রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এশা বিলম্বিত করাকে পছন্দ করতেন,…আর তিনি এর পূর্বে ঘুমকে এবং এর পরে কথাবার্তাকে অপছন্দ করতেন৷ বুখারী, মুসলিম৷

২। নিয়মিত ও যত্নের সাথে আমল করা

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

« أَحَبُّ الأَعْمَالِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى أَدْوَمُهَا وَإِنْ قَلَّ »

আল্লাহর কাছে সবচেয়ে পছন্দনীয় সে সমস্ত আমল, যা অল্প হলেও নিয়মিত করা হয়৷ বুখারী, মুসলিম৷

নবীজি বলেন, ‘তোমরা যখন কোন কাজ করবে, তা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করবে’। (বাইহাকি)

৩। সামর্থ্য অনুসারে ও ভারসাম্যপূর্ণ আমল করা

নবীজি সা বলেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকের ওপর সাদাকা আবশ্যক। সাহাবায়ে কেরাম বললেন, কেউ যদি সাদাকা করার মতো কিছু না পায়? নবীজি বললেন, সে নিজ হাতে কামাই করবে। এতে সে নিজেও লাভবান হবে, সাদাকাও করতে পারবে। তারা বললেন, যদি তা করতে সক্ষম না হয়? তিনি বললেন, গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করবে। তারা বললেন, যদি তা করতে না পারে? তিনি বললেন, সৎ কাজের আদেশ করবে। তারা বললেন, যদি তাও করতে না পারে? নবীজি বললেন, তাহলে সে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকবে, এটাই তার জন্য সাদাকা হবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৬০২২)

‘তাদের মধ্যে রয়েছে এমন মানুষ, যাদের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ থেকে বিরত রাখতে পারে না’। (সুরা নুর, আয়াত ৩৮)

অবশ্য এসব হক আদায় করতে গিয়েও বাড়াবাড়ি করা যাবে না। কারণ, একদিকে সময় বেশি দিলে আবশ্যিকভাবেই অন্যদিকে সময় কম পড়বে। এই জন্য সময় এবং কার কতটুকু হক এই ব্যাপারে সবার পরিষ্কার ধারণা থাকা উচিত। কুরআনুল কারিমের এই আয়াতও সুষম বণ্টনের প্রতি ইঙ্গিত প্রদান করে। ইরশাদ হচ্ছে, ‘তোমরা মাপের ব্যাপারে অন্যায় করো না। ন্যায়ের সাথে মাপ ঠিক রেখো এবং মাপে কম দিয়ো না।’ (সুরা রাহমানঃ ৮-৯)

৪। কুর’আনে বিশেষ কিছু নির্দেশনার অনুসরন করা

আল্লাহ তাআলা কুরআনে যে দশটি হকের কথা উল্লেখ করেছেন, সেগুলোর ব্যাপারে মুসলমানদের কখনোই বিস্মৃত হওয়া উচিত নয়। ইরশাদ হচ্ছে, ‘আর তোমরা আল্লাহর এবাদত করো, তার সাথে কোনো কিছু শরিক করো না, পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহার করো এবং আত্মীয়-স্বজন, এতিম-মিসকিন, কাছের প্রতিবেশি, দূরের প্রতিবেশি, ঘনিষ্ট সহচর, পথিকজন, তোমাদের দাস-দাসীর সাথেও (ভালো ব্যাবহার করো)। (সুরা নিসাঃ ৩৬)

আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ  এমন কে আছে যে আমার নিকট হতে এ কথাগুলো গ্রহণ করবে এবং সে মুতাবিক নিজেও আমল করবে অথবা এমন কাউকে শিক্ষা দিবে যে অনুরূপ আমল করবে? আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। আমি আছি। অতঃপর তিনি আমার হাত ধরলেন এবং গুনে গুনে এ পাঁচটি কথা বললেনঃ

তুমি হারাম সমুহ হতে বিরত থাকলে লোকদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বড় আবিদ বলে গণ্য হবে; তোমার ভাগ্যে আল্লাহ তা’আলা যা নির্ধারিত করে রেখেছেন তাতে খুশি থাকলে লোকদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা স্বনির্ভর বলে গণ্য হবে; প্রতিবেশীর সাথে ভদ্র আচরণ করলে প্রকৃত মুমিন হতে পারবে; যা নিজের জন্য পছন্দ কর তা-ই অন্যের জন্যও পছন্দ করতে পারলে প্রকৃত মুসলমান হতে পারবে এবং অধিক হাসা থেকে বিরত থাক। কেননা অতিরিক্ত হাস্য-কৌতুক হৃদয়কে মৃতবৎ করে দেয়।(তিরমিজি ২৩০৫)

৫। ৪টি কাজ প্রতিদিনের আমলে রাখার লক্ষ্য রাখা

  • সিয়াম পালন করা
  • জানাযায় অংশগ্রহন
  • মিসকীনকে খাবার দেয়া
  • অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়া

মুহাম্মাদ ইবনু উমার মাক্কী (রহঃ) ….. আবূ হুরাইরাহ্ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আজ তোমাদের মাঝে কে সিয়াম পালনকারী? আবূ বকর (রাযিঃ) বললেন, আমি। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আজ তোমাদের মাঝে কে একটা জানাযাকে অনুকরণ করেছো? আবূ বাকর (রাযিঃ) বললেন, আমি। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমাদের মাঝে কে একজন মিসকীনকে আজ খাবার দিয়েছো? আবূ বাকর বললেন, আমি। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমাদের মাঝে কে আজ একজন অসুস্থকে দেখতে গিয়েছো? আবূ বাকর (রাযিঃ) বললেন, আমি। তারপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যার মধ্যে এ কাজগুলোর সংমিশ্রণ ঘটেছে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। সহিহ মুসলিমঃ ১০২৮, ই ফা ৫৯৬৬, ই সে ৬০০৫

৬। ৩টি গুনের চর্চা করা

ক) মনোযোগ-

সময়ের সঠিক ব্যবহারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যেমন- যদি আপনার হাতে ২ দিনের কাজ বাকি থাকে। কিন্তু সময় থাকে ১দিন। মনোযোগ দ্বিগুণ করে নিলে, ইফেক্টিভ টাইম দ্বিগুণ হয়ে যাবে। ইনশাআল্লাহ কাজ যথাসময়ে শেষ করতে পারবেন।

খ) টেনশন করা যাবে না, সিনসিয়ার থাকতে হবে।

টেনশন করলে আসলে কোন কাজ হয় না। বরং মস্তিষ্কের একটি অংশ টেনশনের কাজে ব্যস্ত থাকে। ফলে আরো কম কাজ করা যায়। তাই, টেনশন না করে সিনসিয়ার থাকতে হবে। সিনসিয়ার থাকার অর্থ হলো, মোট করণীয় কাজের পরিমাণ বুঝে নেয়া, সেটা করার জন্য সময় কত আছে তা জেনে নেয়া এবং সে সময়ের আলোকে কাজ বাস্তবায়নের জন্য পরিকল্পনা করে নিয়ে তা করতে শুরু করা।

গ) সকল কাজ আল্লাহর নামে শুরু করতে হবে এবং আল্লাহর ওপর ভরসা করে করতে হবে। কাজের প্রচেষ্টার পাশাপাশি ফলাফলের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে বেশি করে। আল্লাহর কাছে সময় ও কাজের বরকত দানের জন্য দোয়া করা দরকার। আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশী হয়ে আমাদেরকে পথ চলতে হবে।

৭। প্রতিদিনের আমলঃ

  • মিসওয়াক সহ অযু করা,তাহিয়্যাতুল অযু সালাত
  • ওয়াক্ত মত ৫ বার সালাত আদায়
  • প্রতি ওয়াক্তের সুন্নাহ সালাতও আদায় করা
  • ইশরাক ও দোহা/চাশত এর সালাত আদায়
  • কিয়ামুল লাইল
  • সকাল বিকালের যিকর সমূহ পাঠ
  • প্রতি ফরয সালাত শেষে নির্দিষ্ট যিকর পাঠ
  • প্রতিটি কাজে সুন্নাহের আলোকে মাসনূন দু’আ পাঠ
  • সারাদিনই জিহবাকে সিক্ত রাখা যিকর, তাওবা ইস্তেগফার এর মাধ্যমে।
  • সম্পর্ক জোরদার ও দাওয়াতী কাজ করা-

পরিবার, আত্মীয়, প্রতিবেশী, কলিগ

  • দান বা সাদাকা করাঃ
  • কল্যান কাজে অংশগ্রহন করাঃ
  • দিন শেষে প্রতি রাতেই আত্মপর্যালোচনা করা

সাপ্তাহিক আমলঃ

  • জুমু’আ সালাত, সূরা কাহাফ পাঠ ও বেশী বেশী দরুদ পাঠ( শুক্রবার আগের রাত ও দিনে)
  • প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার সাওম রাখা।

মাসিক আমলঃ

  • প্রতি মাসের চাঁদের তিনটি দিন সাওম রাখা, বিশেষ করে আইয়্যামে বিদের সাওম যা চান্দ্র মাসের ১৩,১৪,১৫ তারিখ।

বাৎসরিক আমলঃ

রমাদান মাসে সাওম, তারাবী সালাত, ঈদ সালাত, হজ্জ্ব ও উমরা্‌ যাকাত, রমাদান মাসের শেষ দশদিন ইতিকাফ, শাওয়াল মাসের ৬টি সাওম, আশুরার  ও আগের দিন বা পরের দিন সাওম (৯,১০ বা ১০,১১ মহররম), যিলহজ্জের প্রথম ১০দিন ভালো কাজ করা। আরাফা দিনের সাওম।

মনে রাখা দরকার যার যার সামর্থের মাঝেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সামর্থের বাইরে কোন কাজের জন্য পাকড়াও করা হবে না। ইরশাদ হয়েছে-

আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না, সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায় যা সে করে। হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! এবং আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করো না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছ, হে আমাদের প্রভূ! এবং আমাদের দ্বারা ঐ বোঝা বহন করিও না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। আমাদের পাপ মোচন কর। আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর। তুমিই আমাদের প্রভু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের কে সাহায্যে কর।” আল-বাক্বারাহঃ ২৮৬

জাযাকুমুল্লাহি খাইরান

কুর’আন সুন্নাহর আলোকে একজন মুমিনার দৈনন্দিন আমল

কুর’আন সুন্নাহর আলোকে একজন মুমিনার দৈনন্দিন আমল-1

কুর’আন সুন্নাহর আলোকে একজন মুমিনার দৈনন্দিন আমল

প্রাত্যহিক আমলের একটি রুপরেখা