সন্তান গঠনে পর্যায়ক্রমিক শিক্ষাদানের ছোট একটি সিলেবাসঃ
অভিজ্ঞতার আলোকে একটি ছোট্ট সিলেবাস উল্লেখ করা হলো। এটা একটি পরামর্শভিত্তিক সিলেবাস। আপনারা নিজের মত করে এর আলোকে আরো কিছু পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে নিতে পারেন।
ইউনিসেফের একটি জড়িপের আলোকে শিশুদের ধারাবাহিক বয়সে বিভিন্ন স্বাভাবিক আচরনের পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তন তুলে ধরে সাথে কিছু টিপস দেয়া হলো। সকল শিশুই এইভাবে একইরকম পরিবর্তন নাও আসতে পারে। বয়সের তারতম্যে কিছু আগে পরে হতে পারে তবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে নির্ধারিত বয়সে এই পরিবর্তন আশা করা যায়।
জন্মের ৩ -৪ বছরঃ
একটি শিশুর স্বাভাবিক আচরন যা হওয়া উচিৎঃ
শিশুর যা পারা উচিৎঃ
* সহজে হাঁটা, দৌড়োনো, পা ছোঁড়া এবং লাফানো- এক পায়ে লাফাতে পারে।
* নিজের জামা স্যান্ডেল পরতে পারে।
* চামচ দিয়ে বা হাত দিয়ে খাওয়া শিখে।
* ছোট টুল বা চেয়ার তুলতে পারে।
* নিজের সব রকম চাহিদার কথা স্পষ্ট ভাবে বোঝাতে পারে।
* সাধারণ বস্তুসমূহ ও ছবি চেনা এবং আঙুল দিয়ে চিহ্নিত করা
* মাতৃভাষা ভিন্ন অন্য কোন ভাষার বহুল ব্যবহার দেখলে সেই ভাষা বোঝার বা বলার চেষ্টা করে। দুই বা তিন শব্দ দিয়ে বাক্য রচনা করা,নিজের নাম ও বয়স বলা,রঙের নাম বলা
* ৪ বছরের শেষের দিকে এসে শব্দভান্ডার ১৬৪০ শব্দে উন্নীত হয়।
* পেনসিল ধরে গোল দাগ, বাঁকা দাগ, সোজা দাগ দিতে পারে, ডট দিয়ে দিলে, সেই
ডটের উপর হাত ঘুরাতে পারে।
মা বাবা দুইজনের প্রতি ভালবাসা জন্মায়।
বিপরীত লিঙ্গের অভিভাবকের প্রতি রোমান্টিক অ্যাটাচমেন্ট বৃদ্ধি পায়।
সম লিঙ্গের অভিভাবকের প্রতি হিংসার জন্ম নেয়।
কল্পনাপ্রসুত ভীতি তৈরী হয় যেমন অন্ধকারের ভূত ইত্যাদি।
নিজের কি ছেলে না মেয়ে সে ব্যাপারে জানতে শিখে।
সমবয়সী শিশুদের সাথে সঙ্ঘবদ্ধ খেলাধুলা ভালবাসে।
অন্যদের সামনে জড়তাবোধ কাটিয়ে উঠা আরম্ভ করে।
কাল্পনিক চরিত্র তৈরী করে সঙ্গী বানায়।
সবকিছু নিয়ে প্রশ্ন করে। কথা বলা বেড়ে যায়।
লক্ষ্য রাখতে হবে ও চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়াঃ
খেলাধুলায় উৎসাহের অভাব
বারবার পড়ে যাওয়া
ছোট ছোট জিনিষকে সামলাতে অসুবিধা
সাধারণ কথা বুঝতে না পারা
বেশ কয়েকটা শব্দ দিয়ে কথা বলতে অসমর্থতা
খাবারে উৎসাহ না থাকা বা কম থাকা
৩-৫ বছরের সন্তানদের জন্য বাংলা ইংরেজী পড়ার সাথে সাথে দীনী সিলেবাসঃ
মনে রাখতে হবে বাংলা ইংরেজী শেখাতে যেয়েও এমন জিনিষের সাহায্য নেয়া যাবে না যা শরীয়ত অনুমোদন করে না। যেমন মিউজিক সহ অন্য জাতির অনুসরনীয় রাইমস বা গল্প বা ছবি।
বয়স ও সামর্থ অনুসারে শেখান ও বাস্তবে আমল করান।
- কলেমা তাইয়েবা ও কলেমা শাহাদাত
- মহান আল্লাহর পরিচয়
- মহান আল্লাহর নাম-১০টি অর্থসহ
- তাওহিদ ও সুন্নাত উদাহরন দিয়ে বুঝানো
- শিরক ও বিদ’আত উদাহরন দিয়ে বুঝানো
- আল্লাহর হক ও বান্দাহর হক কি বুঝানো?
- ছোট সূরা অর্থ সহঃ ফাতিহা, ইখলাস, কাউসার ফালাক ও নাস, ফীল, কুরাইশ,তাকাসুর,নসর,লাহাব,যিলযাল,আয়াতুল কুরসী,সুরা বাকারার শেষ ২ আয়াত,
- ছোট ছোট দু’আঃ
প্রাত্যহিক জীবনের জন্যঃ
খাবার আগে পরে, টয়লেটে যাওয়ার আগে পরে, ঘর থেকে বের হওয়া ও প্রবেশ করা।
রাতে ঘুমানোর পূর্বে, ঘুম থেকে জেগে উঠে,
হাঁচি দেয়ার পর এবং অন্য কারো হাঁচি দেয়ার পর জবাব।
ভালো সংবাদ পেলে আলহামদুলিল্লাহ বলা ও দুঃখজনক বা খারাপ সংবাদ শুনলে ইন্নালিল্লাহ.. বলা।
বিপদে দু’আ ইউনুস পড়া
সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠা-আল্লাহু আকবার ও নীচে নামার সময় সুবহানা আল্লাহ বলা।
যে কোন কাজ শুরু বিসমিল্লাহ ও শেষ আলহামদুলিল্লাহ বলা।
মহান রবের কাছে চাওয়া—
ইয়া মুকাল্লিবাল কুলুব
রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনইয়া হাসানা
রাব্বির হামহুমা
রাব্বি যিদনি
রাব্বীস রাহলি সাদরি
আস্তাগফিরুল্লাহাল্লাজী
রাব্বানা আহাবলানা মিন আজোয়াজীনা
হাসবিয়াল্লাহী
আল্লাহুম্মা আজিরনি মিনান্নার
লা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা
কিছু যিকির যা সব সময় পড়বে—
সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহু আকবার
সুবহানাল্লাহী ওয়া বিহামদিহী
দরুদ শরীফ
- গল্পের মত করে শুনান—
রাসূল স.এর শিশুবেলা থেকে কিশোর জীবন
চার খলিফাসহ বিভিন্ন সাহসী ও বিরত্ব্মূলক ঘটনা
উম্মুল মু’মিনীনদের কথা ও ঘটনা বিশেষ করে খাদীজা ও আয়েশা রা.এর জীবনী।
হযরত আদম আ.এর কথা
হযরত ইবরাহীম আ. ও ইসমাইল আ. এর কথা
কুরবানীর ঘটনা
জুম’আ ও দুই ঈদের কথা
জান্নাত ও জাহান্নামসহ ইবলিশের কথাও শুনান
কুর’আনের বিভিন্ন ঘটনা-গুহাবাসী,মুসা আ.ও বনী ইসরাইল, পিপড়া ও সুলায়মান আ. মৌ্মাছির কথা, উটের কথা, মাকড়সার কথা
- মৌলিক ইবাদাত প্রশিক্ষন (৫টি ভিত্তি সম্পর্কে জ্ঞান)
সহিহভাবে অযু
পবিত্রতা বিশেষ করে ইস্তিঞ্জা থেকে পবিত্রতা
সালাত ও সালাতে পঠিত বিষয় সমূহ সহিহ করে অর্থ বুঝিয়ে শেখা ও এর শিক্ষা
হাত ধোয়া সঠিকভাবে
- আরবী বর্নমালাসহ আরবী মাসের নাম, সংখ্যা ওয়াহেদ-আশারা
- জান্নাত ও জাহান্নামের নাম সমূহ শেখান
- সহীহ তেলাওয়াত শেখানো