সন্তান গঠনে পর্যায়ক্রমিক শিক্ষাদানের ছোট একটি সিলেবাসঃ
অভিজ্ঞতার আলোকে একটি ছোট্ট সিলেবাস উল্লেখ করা হলো। এটা একটি পরামর্শভিত্তিক সিলেবাস। আপনারা নিজের মত করে এর আলোকে আরো কিছু পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে নিতে পারেন।
ইউনিসেফের একটি জড়িপের আলোকে শিশুদের ধারাবাহিক বয়সে বিভিন্ন স্বাভাবিক আচরনের পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তন তুলে ধরে সাথে কিছু টিপস দেয়া হলো। সকল শিশুই এইভাবে একইরকম পরিবর্তন নাও আসতে পারে। বয়সের তারতম্যে কিছু আগে পরে হতে পারে তবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে নির্ধারিত বয়সে এই পরিবর্তন আশা করা যায়।
জন্মের ১০-১২ মাসঃ
একটি শিশুর স্বাভাবিক আচরন যা হওয়া উচিৎঃ
* দাঁড়ানোর চেষ্টা করে এবং বেশ কিছু ক্ষেত্রে নিজে নিজে কারো সাহায্য ছাড়া অনেকক্ষন
দাঁড়িয়ে থাকে, কিছু কিছু এ্যাডভান্স শিশুরা গুটি পায়ে হাঁটা শুরু করে।
* একটি দুটি শব্দ পুরোপুরি উচ্চারণ করতে শিখে যায়।
* অন্যদের কথা অনুকরণ করতে চায়।
* ছোট ছোট কমান্ড, আদেশ বা নির্দেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে যেমনঃ এদিকে তাকাও,
ওদিকে যেও না ইত্যাদি।
* খাদ্যাভ্যাসে ব্যাপক পরিবর্তন আসে।বিশেষ করে বড়দের খাবারের প্রতি আগ্রহ আসে।
* ঘুম কমে আসে। একটি কি দুটি দাঁত উঠতে পারে।
* রাগ, লজ্জা, ভয় ইত্যাদি আনুভুতিগুলো প্রকট হওয়া শুরু করে।
* “stanger anxiety” অর্থাৎ” অপরিচিত কাউকে দেখলে ভয় বা অনিশ্চয়তা কাজ করে।
* নতুন জিনিস সম্পর্কে আগ্রহী ও উৎসাহিত হয়ে উঠে, আবিষ্কার করার আগ্রহ জন্মায়।
* নিজের নাম বলার চেষ্টা করে।
* বিদায়ের কথা বললে বুঝে যা আচরনে প্রকাশ পায়।
* কোন কিছু দেয়া বা নেয়ার কমান্ড বঝে।
লক্ষ্য রাখতে হবে ও চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়াঃ
অন্যদের শব্দের প্রতিক্রিয়ায় শিশু শব্দ করে না
নড়াচড়া করা বস্তুর দিকে শিশু তাকায় না
শিশু অষহিষ্ণু এবং যত্নকারীর প্রতি প্রতিক্রিয়া নেই
শিশুর ক্ষিদেবোধ নেই বা খাবার ফিরিয়ে দেয়
সিলেবাস ও করনীয়ঃ
- ছবি বা কোন জিনিষের দিকে দেখিয়ে তার নাম বলুন ও তাকেও বলতে দিন এবং সাথে সাথে আলহামদুলিল্লাহ বলুন।
- মসজিদ, মক্কা, জায়নামায, ফল ফুল ও প্রানীর ছবি দেখান ও শেখান।
- শিশুর সাথে প্রায়ই খেলুন ও সুন্দর করে কথা বলুন
- মাঝে মাঝে খুব অল্প সময় কম্পিউটারে ইসলামিক ছোটদের অনুষ্ঠান মিউজিক ছাড়া নিজে বসে থেকে দেখান ।
- পরিবারের সাথে একসাথে টেবিলে প্লেট চামচ দিয়ে/হাতে খেতে বসিয়ে দিন।
- অতিথিদের সামনে নিজে সাথে নিয়ে যান ও সালাম দিতে শেখান।
- অতিথির সন্তানদের সাথে মিশতে দেয়া ও লক্ষ্য রাখা।
- অতিথিদের বা কারো বিদায়ের সময় দরজার কাছে যেয়ে সালাম দিয়ে বিদায় দেয়া শেখান।
- সালাতের সময় হলে নিজে সালাতে দাঁড়িয়ে পাশেই আরেকটি জায়নামায দেয়া যেন শিশুটি বুঝতে শেখে।
- ঘুম,গোসল, খাবারের নির্দিষ্ট সময় করে অভ্যস্থ করুন।
- খেলনা সাথে নিয়ে গুছানো ও বুঝিয়ে বলা।
- দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য বাচ্চার আশপাশ যতটা সম্ভব নিরাপদ রাখুন,
- বুকের দুধ খাওয়ানো চালু রাখুন এবং খেয়াল রাখুন যেন পর্যাপ্ত সকল পুষ্টিখাবার
- শিশুর সব টীকাকরণ এবং পরামর্শ মত সব মাইক্রোনিউট্রিয়েণ্ট বিকল্প দেওয়া নিশ্চিত করুন
- যদি শিশুর বিকাশ ধীরে হয় বা কোন অসামর্থ্য থাকে, যেসব সামর্থ্য আছে তাতে জোর দিন এবং বাড়তি উদ্দীপনা ও বেশী মেলামেশা করুন।
বর্জনীয় কাজঃ
কোন মানুষ বা ভূত জীনের ভয় দেখিয়ে খাওয়ানো বা ঘুম পাড়ানো।
অনৈসলামিক গান শুনিয়ে ঘুম পাড়ানো।
টিভিতে প্রানী (geography channel)ও কার্টুন দেখায় বসিয়ে রাখা
অন্য শিশুদের সাথে খেলনা শেয়ার করতে না দেয়া।
একাকী বিপরীত লিংগের কাছে ছেড়ে দেয়া আত্মীয় বা অনাত্মীয়