ওজন কমানোর জন্য উপযুক্ত সময়
সমাজে অনেকেই নিজ শরীরের ওজন কমানোর মাধ্য বডি ফিটনেস ঠিক রাখার জন্য বেশ সচেতন থাকেন। এর সুযোগ নিয়ে গড়ে উঠেছে অনেক প্রতিষ্ঠান, জিম, বডি ফিটনেস কেন্দ্র , ইয়োগা ইত্যাদি। মানুষকে কোন কোন কুচক্রি ব্যক্তিরা এর মাধ্যমে যুবক যুবতিদের মিউজিকের তালে তালে ব্যয়াম এ অভ্যস্থ করে ফেলছে, মিউজিকের শব্দ যাদের মন মস্তিস্কে ঢুকে স্থান নেয় তাদের আর কুর’আনের সুরের কাছে স্থির থাকতে চায় না। আবার অনেকে খাদ্য গ্রহনের এমন রুটিন করেন ফলে দেখা যায় বিভিন্ন নিউট্রিশন/ মিনারেলের অভাবে ও ভারসাম্যহীন শর্করার অনুপস্থিতি শরীরের বিভিন্ন রোগের লক্ষন দেখা দেয়। অনেকে মানসিকভাবে খিট খিটে হয়ে যায়। মূল কথা মহান আল্লাহ যিনি এইদেহের কারিগর তিঁনি যে পদ্ধতি দিয়ে রেখেছেন সেটা ছাড়া অন্য সকল কিছুই উপযুক্ত হতে পারে না, কোন না কোন প্রকারের বৈষম্য দেখা দেয়।
এবার আসি সাওম ও রমাদান মাসের মহান রবের দেয়া করনীয় কিভাবে ব্যক্তির বডি ফিটনেস ঠিক রাখতে সহায়ক হয়।
সেহরীতে মধ্যমানের ব্যালেন্স ডাইট খেলে উত্তম। খেজুর দিয়ে সেহরী খাওয়া সুন্নাহ। এরপর সারাদিনের না খেয়ে থাকা ও ওয়াক্তের সালাত বজায় রাখার ফলে সময়ের নিয়মানুবর্তীতা ঠিক থাকে। অতিরিক্ত ঘুম দেয়াটাও অনুচিত। দিনের সকল কাজই সুন্দর গতিতে চালানো ও ভালো কাজের স্পৃহা মনকে তাজা রাখে , সাওমের মর্যাদা ঠিক রাখার জন্য রাগ, উত্তেজিত হওয়া , খারাপ চিন্তা ভাবনা থেকে দূরে থাকার ফলে মন পবিত্র থাকে যা শরীরের উপর প্রভাব পড়ে থাকে।
ইফতারেও খেজুর দিয়ে শুরটা সুন্নাত। যা একটি ব্যালেন্স খাদ্য। কোন ধরনের ভাজা আইটেম না খেয়ে পুষ্টিকর হালকা খাবার যা দিয়ে পেট পুরু ভরবে না তা শরীরকে সুস্থ্য রাখায়। ইফতারের পর থেকে পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে।
রোজা পালনের পর ভাজা-পোড়া খাবার পরিবেশন স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তেল হচ্ছে এক ধরনের স্নেহজাতীয় পদার্থ। এটি উচ্চ তাপমাত্রায় বারে বারে গরম বা ভাজার ফলে Acrolene নামে এক ধরনের জৈব হাইড্রোকার্বন তৈরি করে। এটি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। বা ইহা ধীরে ধীরে মানুষের হজমশক্তি নষ্ট করে ফেলে। ফলে পেটে বদহজম, গ্যাস্ট্রিক, আলসার, ডায়রিয়া, পাকস্থলী জ্বালা-পোড়াসহ নানা ধরনের জটিল রোগের সৃষ্টি হয়। সুতরাং খাবারের ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক থাকা জরুরি। তার চাইতে ইফতারের সময় খেজুর, পানি, হালকা ও শরবত জাতীয় খাদ্য খাওয়া ভালো।
মধ্যপ্রাচের একদল কার্ডিওলজিস্ট গবেষণার ফলে বলেছেন, যারা রমাদানে রোজা রাখেন তাদের রক্তে কোলেস্টেরল এর পরিমাণ কমে যায়। নানা ধরণের হৃদরোগ যেমন হার্ট আটাক, স্ট্রোক ইত্যাদির ঝুঁকিও কমে যায়। আর যদি রমাদানের পরেও সুষম এই খাদ্যাভ্যাস চালু রাখা যায় তবে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ার কোনো সম্ভাবনাই থাকবে না।
এরপর রাতের সালাত তারাবীহতে ২০ রাক’আত মসজিদে ইমামের সাথে আদায় শরীরকে আরো পরিমিত করে দেয়।
এরপর আবার তাহাজ্জুদের জন্য উঠে সালাত কুর’আন পাঠে মগ্ন থেকে মহান রবের ইবাদাতে নিমগ্ন থাকা যা শরীর মন উভয়কে সুন্দর পবিত্র রাখে।
অনেকে দেখা যায় ইফতারের পর রিদম এক্সারসাইজ করেন যার কোন প্রয়োজনই নেই যদি সঠিকভাবে তারাবী সালাত আদায় করে। অতিরিক্ত ভোজন বিলাস থেকে দূরে থাকার সুন্দর একটি সময় বলা যায় । রোজা রাখার কারণে স্থূলকায় শরীরে জমে থাকা এসব রিজার্ভ কোলেস্টেরল শরীরের অন্যান্য জ্বালানীর কাজে ব্যয় হয়ে যায় বিধায় শরীর অনেক টা কমে যায় এবং রক্তের সার্কুলেশনের ও সুন্দর একটা দিক নেয় । ল্যাব পরীক্ষায় দেখানো হয়েছে , রোজা রাখার প্রথম দিন হতে তৃতীয় দিন পর্যন্ত আমাদের শরীরের মাংসপেশীর গ্লাইকোজেন যকৃত গ্লাইকোজেন থেকে শক্তি থেকে পেয়ে থেকে এবং তৃতীয় / চতুর্থ দিন থেকে, আমাদের শরীরের এটি চর্বি স্টোরেজ থেকে শক্তি পেয়ে ketosis মোডে পরিবর্তন হয় এবং এভাবে ৩০ দিন পর্যন্ত চলতে থাকলে একজন ব্যাক্তির শুধু পেশীর স্থুলতা ২ পাউন্ড লস হয়, সেই হিসাবে সারা শরীরের ৩০ দিনে ৭/ পাউন্ড পর্যন্ত শরীরের স্থলতা কমানো সম্বভ ( অবশ্য ইফতার এবং সেহেরীর প্রোটিন খাওয়ার উপর নির্ভর করবে কম বেশী – প্রমাণিত ) রোজা রাখার অভ্যাসে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষুধা হ্রাস করে বিধায় পরবর্তীতে ঠিক সেই ভাবে যদি জীবন যাপন করতে পারেন- তা হলে অন্য এক সমীক্ষায় দেখানো হয়েছে যে, আপনার শারীরিক অবকাঠামো সাধারনের চাইতে ২০% উন্নিত রাখা সম্বভ , সেই দৃষ্টিতে রোজা বার্ধক্য রোধে ও শারীরিক সুন্দর বৃদ্ধি করতে অনেকটা সহায়ক ।