স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সাওম-৪

ঘর থেকে বের হলেই দেখা যায় আসে পাশে কত ফাস্ট ফুডের দোকান, জুস, চা কফি ইত্যাদি অলিতে গলিতেই এখন পাওয়া যায়। বড় ছোট সকলেই যেন বাইরে খাওয়াটা সৈখিনতার বিষয় বানিয়ে নিয়েছে, পূর্বে মানুষ একদম বেকায়দায় পড়েই বাইরের খাবার খেতো কিন্তু আজ অনেকের বাসায় মেহমান আসলেও রান্না করার ঝামেলা না যেয়ে বাইরে থেকে খাবার এনে এন্টারটেইন করছে। সময় ও কষ্ট বাঁচানোর জন্য টাকার উপর দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে। হয়তো বলবেন চাকুরীজীবিতো সময় হয় কোথায়? এইভাবেই আমাদের পরিবারগুলো আত্মীয়তার বন্ধন শিথীল হওয়ার পাশাপাশি পরিবারের বন্ধন ও হালকা হয়ে যাচ্ছে। পূর্বে মা নিজ হাতে একটা কিছু যত্ন করে রান্না করে খাওয়ালে তা মনের ও শরীরের ক্ষুধা ভরে যেতো আর আজ তা হয়ে গিয়েছে অনলাইনে অর্ডার দেয়া খাবারে যা শুধুই উদরপূর্ণ করা খাদ্য, মনের অনেক দূরেই অবস্থান করছে। আত্মীয়রাও ফরমাল্ভাবে আপ্যায়নে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। মহান আল্লাহ আমাদের সকলের অন্তরগুলো মিলিয়ে দিন সুন্দর পরিচ্ছন্নতার উপর।
কিন্তু এতে কি আসলেই উপকার হচ্ছে?
আধুনিকতার ছোঁয়ায় প্রতিদিন বেড়ে চলেছে প্রক্রিয়াজাত খাবারের ওপর নির্ভরতা। যেমন- হাতে বানানো রুটির বদলে খাই পাউরুটি, বিস্কুট, কেক, পিৎজার মতো নানা ধরনের মুখরোচক খাবার। বাইরে বের হয়ে কাজের ফাঁকে ঝটপট ক্ষুধা নিবারণে এগুলোই থাকে হাতের নাগালে। কিন্তু এসব খাবার থেকে আমাদের দেহে জমা পড়ে ক্ষতিকারক টক্সিন। এতে অ্যাজমা, আথ্রারাইটিস, হার্ট অ্যাটাক, কিডনি ফেইলিওর, দৃষ্টিশক্তি হারানো, দাঁত পড়ে যাওয়া, মস্তিষ্কের ক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদির পেছনে মূল কারণ হলো এই টক্সিন।
যে সকল খাবার আমরা বাইরে থেকে নিয়ে আসছি তা কতটা স্বাস্থসম্মত তা বলার অপেক্ষা রাখে না! ফলে প্রতিনিয়ত আমাদের দেহে টক্সিন বেড়েই চলেছে।
মাইকোটক্সিন- সাধারণত আফলাটক্সিন ও ওকরাটক্সিনের মতো মাইকোটক্সিন থাকে কিছু খাবারে। দীর্ঘ দিন ধরে এই টক্সিনের প্রভাবে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে।
পারসিসট্যান্ট অরগ্যানিক পলিউট্যান্ট- পিওপি পরিবেশে থেকে সরাসরি মানব শরীরে পৌঁছয়। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পদ্ধতি ও বর্জ্য থেকে পরিবেশে পিওপি ছড়ায়। যা পশুদের ফ্যাটি টিস্যুর মাধ্যমে অ্যানিমাল ফুড চেনে পৌঁছয়। এই ডাইঅক্সিন খুবই বিষাক্ত। মানুষের প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট করে দেওয়া, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে
ভারী ধাতু- (পারদ, লেড, আর্সেনিক)সাধারণত পানি, মাটি ও বায়ু দূষণ থেকেই এই সব ধাতু শরীরে পৌঁছয়।
রোজাতে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার ফলে এই ফ্যাট কমে আসে। ক্ষতিকারক টক্সিনগুলো লিভার, কিডনি ও অন্যান্য অঙ্গের মধ্য থেকে বেরিয়ে যায়।
তাই সেহরী ও ইফতারে যেন স্বাস্থ সম্মত খাবার নিজ ঘরে প্রস্তুতকৃ্ত করে অন্তত একটি মাস শরীরের পরিচ্ছন্নতার যত্ন নেয়া আবশ্যক।
হজম ক্রিয়ার বিশ্রামঃ দেহের যে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ খাবার হজমের কাজ করে, রোজার সময় তারা কিছুটা বিরতি পায়। হজমের রস নিঃসরণ তখন ধীর হয়। খাবারগুলোও ভাঙে ধীরে। দেহে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে এটা খুব সহায়ক। দেহের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তিও তখন নিঃসরণ হয় ধীরে।