হাদীসের আলোকে সাওম-৫

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

পরিবার পরিজন, ধন-সম্পদ ও প্রতিবেশীদের নিয়ে জীবন চলার পথে যেসব গুনাহ মানুষের হয়ে যায় সালাত, সিয়াম ও দান খয়রাত সেসব গুনাহ মুছে ফেলে দেয়। (বুখারী ও মুসলিম)

সুতরাং সালাত সিয়াম ও দানের ব্যপারে আমাদের যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন। প্রতিনিয়ত আমাদের জানা অজানা অনেক গুনাহ হয়ে যায়। এই সকল ইবাদাতের মাধ্যমে গুনাহ মাফের সুযোগ রয়ে যায়। তবে অবশ্যই সগীরা গুনাহ কারন কবীরা গুনাহ তাওবা ব্যতীত মাফ হবে না।

 

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

জান্নাতে একটি দরজা রয়েছে। যার নাম রাইয়্যান। কিয়ামতের দিন শুধু সিয়ামপালনকারীরা ঐ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে। তাদের ছাড়া অন্য কেউ সেই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। সেদিন ঘোষণা করা হবে, সিয়াম পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়িয়ে যাবে ঐ দরজা দিয়ে প্রবেশ করার জন্য। তারা প্রবেশ করার পর ঐ দরজাটি বন্ধ করে দেয়া হবে। ফলে তারা ব্যতীত অন্য কেউ আর সেই দরজা দিয়ে জান্নাতে ঢুকতে পারবেনা। (বুখারী ও মুসলিম)

সুবহানাল্লাহ, এতো বড় মর্যাদা আর সুযোগ হাত ছাড়া কে করতে চাইবে? সেই জান্নাতের দরজা দিয়ে প্রবেশ করার জন্য সাওমকে মহান রবের সন্তুষ্টির পথে উন্নীত করার প্রচেষ্টায় সচেষ্ট হই। মহান আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন।

 

আবূ উমামাহ -এর হাদীস থেকে বর্ণনা করেছেন যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

 “আল্লাহর রয়েছে প্রতি ফিত্বরে (ইফত্বারের সময় জাহান্নাম থেকে) মুক্তিপ্রাপ্ত বান্দারা।”

ইমাম আহমাদ (৫/২৫৬) আল-আলবানী এটিকে ‘সাহীহুত তারগীব (৯৮৭) – এ সহীহ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

 আল-বাযযার (কাশফ ৯৬২) আবূ সা’ঈদের হাদীস থেকে বর্ণনা করেছেন যে তিনি বলেছেন :

   “নিশ্চয়ই আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তাআলার রয়েছে (রমযান মাসে) প্রতি দিনে ও রাতে (জাহান্নাম থেকে) মুক্তিপ্রাপ্ত বান্দাগণ আর নিশ্চয়ই একজন মুসলিমের রয়েছে প্রতি দিনে ও রাতে কবুল যোগ্য দু’আ।”

মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে সেই জাহান্নাম থেকে মুক্ত রাখুন।

 

আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি বিষয়ের উপর রাখা হয়েছে, এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল। সালাত কায়েম করা। জাকাত প্রদান করা। রমজানের রোজা রাখা। বাইতুল্লাহর হজ করা যে তার সামর্থ রাখে। ( বুখারি-৮ মুসলিম-১৬)

 হাদিস দ্বারা বুঝা যায়, রোজা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি রুকন। সকল মুসলমান এ বিষয়ে একমত যে, রমজানের রোজা ফরজ। যে অস্বীকার করবে সে কাফের ও মুরতাদ বলে গণ্য হবে।

হে ঈমানদারগণ তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে।(সূরা বাকারা:১৮৩ )

সুতরাং শরয়ী ওযর ছাড়া কোনভাবেই সাওম ছাড়ার সুযোগ নেই। অনেকে পরীক্ষা ও হালকা গড়নের শরীর ইত্যাদি অসিলায় সাবালক ছেলে-মেয়েদের সাওম রাখা থেকে বিরত রাখেন অথচ সাওম তাদের জন্য ফরয এবং এই ধরনের ওযর মহান রবের কাছে গ্রহনযোগ্য নয়।

পরবর্তীতে এই সন্তানরা সাওমের গুরুত্ব বুঝতে পেরে আফসোস করেন এবং পিতা মাতার উপর অভিযোগ তুলেন এবং সেই রোযাগুলোর কাযা তুলতে কষ্ট পেতে হয় অনেক।

মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে সচেতন হওয়ার তাওফিক দান করুন।