হাদীসের আলোকে সাওম-৩

 

রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ

“জিবরাঈল (আঃ) আমাকে বলেছেন, আল্লাহ্ ঐ ব্যক্তির নাক মাটিতে ঘষুন যার নিকট রামাদান আসল এবং তার গুনাহসমূহ মাফ হল না, এবং আমি বললাম, আমিন।

 তারপর তিনি বললেন, আল্লাহ ঐ ব্যক্তির নাকও মাটিতে ঘষুন যে জীবদ্দশায় তার পিতামাতার একজনকে অথবা উভয়কে বৃদ্ধ হতে দেখল এবং সে জান্নাতে প্রবেশ করার অধিকার রাখল না তাদের সেবা করার মাধ্যমে আর আমি বললাম, আমিন।

অতঃপর তিনি বললেন, আল্লাহ্ ঐ ব্যক্তির নাক মাটিতে ঘষুন যার উপস্থিতিতে যখন আপনার নাম উচ্চারণ করা হয় তখন সে আপনার প্রতি সালাম বর্ষণ করে না আর আমি বললাম, আমিন।”

(তিরমিযী, আহমাদ, এবং অন্যান্য_আলবানী কর্তৃক সহীহকৃত)

রামাদানকে কোন আনুষ্ঠানিক ইবাদাত মনে করে লৌকিকতায় ভরপুর করে ফেলেছেন অনেকেই। রামাদান পেয়ে তাকওয়া, আত্মশুদ্ধি ও নিষ্ঠাপূর্ন ইবাদাত দিয়ে মহান রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থী হয়ে ক্ষমা পাওয়ার মাধ্যমেই রামাদানের ইবাদাত পূর্ণ হবে।

তাই অন্তর ও আমলের মুসলিম হওয়াই হোক রামাদানের পরিকল্পনা।

 

রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ

“যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলা ও এর ওপর আমল করা বর্জন করে না ও মূর্খতা পরিহার করে না, তার পানাহার হতে বিরত থেকে উপবাস করা আল্লাহর নিকট প্রয়োজন নেই।” (বুখারী)

অনেকেই স্বাস্থ্য কমানোর জন্য রোযা রাখার চিন্তা করেন, যা একেবারেই উচিত নয়। এটি অন্যতম একটি বড় ভুল যা আমরা করে থাকি। সিয়াম পালন করার একমাত্র উদ্দ্যেশ্য হচ্ছে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। যদি স্বাস্থ্য কমানোর উদ্দ্যেশ্যে কেউ রোযা রাখে তাহলে তা শিরকের(ছোট শিরক বা শিরকুল আসগার) আকার ধারন করতে পারে।

মিথ্যা যা সকল পাপের পথকে সহজ করে দেয় তা থেকে পরিশুদ্ধ হওয়ার জন্য প্রশিক্ষন এই সাওম।

“হে মানুষ, তোমরা যারা ঈমান এনেছো! তোমাদের ওপর সাওম ফরজ করা হয়েছে যেমনটি করা হয়েছিলো তোমাদের পূর্বপুরূষদের ওপর যাতে করে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।” (সূরা বাকারাঃ১৮৩)

 

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু‎ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

“যখন রমযান মাস আগমন করে, তখন আসমানের দরজাসমূহ খুলা হয়, জাহান্নামের ‎‎দরজাসমূহ বদ্ধ করা হয় এবং শয়তানগুলো শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়। বুখারি: ১৮০০, মুসলিম: ১০৭৯

অপর বর্ণনায় আছে:‎

“যখন রমযানের প্রথম রাত হয়, শয়তান ও অবাধ্য জিনগুলো শৃঙ্খলিত করা ‎হয়, জাহান্নামের সকল দরজা বন্ধ করা হয়; খোলা হয় না তার কোন দ্বার,

জান্নাতের ‎‎দুয়ারগুলো খুলে দেয়া হয়; বদ্ধ করা হয় না তার কোন তোরণ।

এবং একজন ঘোষক ‎‎ঘোষণা করে: হে পুণ্যের অন্বেষণকারী, অগ্রসর হও।

 হে মন্দের অন্বেষণকারী, ক্ষান্ত হও।

আর আল্লাহর জন্য রয়েছে জাহান্নাম থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত অনেক বান্দা, এটা প্রত্যেক রাতে হয়।        তিরমিযি: ৬৮