আসসালামু’আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
হিন্দা (রাঃ) নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর দরবারে এসে অভিযোগ করে বলেছিলেন, নিশ্চয়ই আবূ সুফিয়ান(রাঃ) (স্বীয় স্বামী) একজন কৃপণ লোক, সে আমার ও আমার সন্তানদের জন্য যে পরিমাণ খাদ্য দ্রব্য অর্থাৎ খরচ খরচার প্রয়োজন তা ঠিকমত আমাদেরকে দেয় না। এমতাবস্থায় আমি যদি তাঁকে না জানিয়ে তাঁর ধন-সম্পদ হতে কোন কিছু নিয়ে ফেলি, তাহলে কি আমার গোনাহ হবে? একথা শুনে নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে বললেন, তোমার ও তোমার ছেলে মেয়েদের জন্য অতিরিক্ত যে জিনিসের প্রয়োজন হয়- ঠিক সে পরিমাণ জিনিস তুমি তোমার স্বামীর ধন-সম্পদ থেকে নিয়ে নিবে। বুখারী ও মুসলিম শরীফ
ফাতাওয়া তলব করতে গিয়ে কারো দোষ-গুণ আলোচনা করার প্রয়োজন দেখা দিলে, তাঁর জন্য ঐ সমালোচনা করা জায়েয। তবে নিয়ত খালেছ থাকতে হবে।
এমনিভাবে যদি কেউ কারো কাছে কারো সম্পর্কে ব্যবসা-বাণিজ্য কিংবা বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করা যাবে কি না এ সম্পর্কে সুপরামর্শ চায় , তবে তাঁকে অবশ্যই তাঁর দোষ-গুণ বলে দিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যার নিকট পরামর্শ তলব করা হয়, সে একজন আমানতদার” (সহীহুল জামে হা/ ৬৭০০)।
নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট এসে ফাতেমা বিনতু ক্বায়েস (রাঃ) বললেন, তাঁকে মু‘আবিয়া (রাঃ) ও আবূ জাহাম (রাঃ) বিবাহের প্রস্তাব দিয়েছে। এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে বললেন, মু‘আবিয়া (রাঃ) হলো ফকীর। তাঁর কোন ধন-সম্পদ নেই। আর আবূ জাহাম (রাঃ) এর বৈশিষ্ট্য হলো, সে কাঁধ থেকে লাঠি (মাটিতে) রাখে না অর্থাৎ স্ত্রীদেরকে সে অধিক মার-ধর করে। বরং তুমি উসামাকে (রাঃ) বিবাহ কর
(সহীহ মুসলিম হা/১৪৮০)।
তবে একথা সকলের জেনে রাখা উচিত যে, উল্লিখিত ক্ষেত্রগুলিতে অন্যের গীবত করা জায়েয হওয়ার ব্যাপারে ২ টি শর্ত রয়েছে।
১। নিয়ত খালেছ বা সঠিক হওয়া।
২। প্রয়োজন দেখা দেওয়া।
(আল-হালাল ওয়াল হারাম ফিল ইসলাম, ২৯০)।
অর্থাৎ নিয়তের মধ্যে যদি কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করা উদ্দেশ্য হয়, তবে তা গীবত বলে গণ্য হবে। বিনা প্রয়োজনে অন্যের কোন বিষয় নিয়ে সমালোচনা ও পর্যালোচনা করাও গীবতের ভিতর গণ্য হবে। অতএব আমাদের সকলের উপর অপরিহার্য কর্তব্য হবে জিহবাকে সংযত রাখা। এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
“যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার প্রতি আর পরকালের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছে, তাঁর উচিত হবে এটাই- সে যেন ভাল কথা বলে অথবা চুপ থাকে”।