হাদীসের আলোকে ঈমানঃ ৪

দয়াময় মেহেরবান আল্লাহর নামে

 

আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাযি.)-কে বলতে শুনেছেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একবার আমি নিদ্রাবস্থায় (স্বপ্নে) দেখলাম যে, লোকদেরকে আমার সামনে আনা হচ্ছে। আর তাদের পরণে রয়েছে জামা। কারো জামা বুক পর্যন্ত আর কারো জামা এর নীচ পর্যন্ত। আর ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাযি.)-কে আমার সামনে আনা হল এমন অবস্থায় যে, তিনি তাঁর জামা (অধিক লম্বা হওয়ায়) টেনে ধরে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সহাবীগণ আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি এর কী তা’বীর করেছেন? তিনি বললেনঃ (এ জামা অর্থ) দ্বীন।  মুসলিম ৪৪/২ হাঃ ২৩৯০ বুখারি(আ প্রঃ ২২, ই ফাউন্ডেশনঃ ২২)

 

আব্দুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাযি.) হতে বর্ণিত। একদা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক আনসারীর পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। তিনি তাঁর ভাইকে তখন (অধিক) লজ্জা ত্যাগের জন্য নাসীহাত করছিলেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ ওকে ছেড়ে দাও। কারণ লজ্জা ঈমানের অঙ্গ। বুখারি (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৩)

এই হাদীসের আলোকে লজ্জা ঈমানের অংগ বলার অর্থই হলো যে লজ্জা হারিয়ে ফেলা ঈমানের একটি অংগ হারিয়ে গেলো। লজ্জা মানুষকে অনেক পাপ-অন্যায় থেকে দূরে রাখে। পূর্বে মুবাইল বা নেট ছিল না,ফলে মানুষ অন্যায় করলে সমাজে তাৎক্ষনিক জানতে পারবে বিধায় লজ্জায় অনেকেই অন্যায় থেকে দূরে থাকতো। কিন্তু আজ মুবাইল ও নেটের সুবাদে অন্যায় করে যাচ্ছে লোক চক্ষুর অন্তরালে, ফলে এক সময় লজ্জা হারিয়ে লোক সম্মুখেও অন্যায় করার অবস্থা চলে আসে। মনে রাখা প্রয়োজন লোক চক্ষু দেখছে না কিন্তু প্রতিনিয়ত দুজন ফেরেশতা দেখছে ও রেকর্ড করছে, সর্বোপরি মহান রব দেখছেন ও জানছেন।

 

 

ইবনু ‘উমার (রাযি.) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমি লোকদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাবার জন্য নির্দেশিত হয়েছি, যতক্ষণ না তারা সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ্ ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল, আর সালাত প্রতিষ্ঠা করে ও যাকাত আদায় করে। তারা যদি এগুলো করে, তবে আমার পক্ষ হতে তাদের জান ও মালের ব্যাপারে নিরাপত্তা লাভ করলো; অবশ্য ইসলামের বিধান অনুযায়ী যদি কোন কারণ থাকে, তাহলে স্বতন্ত্র কথা। আর তাদের হিসাবের ভার আল্লাহর উপর অর্পিত। (মুসলিম ১/৮ হাঃ ২২) বুখারি(আ প্রকাশনীঃ ২৪, ইস ফাউন্ডেশনঃ ২৪)

অত্যন্ত জরুরী একটি শিক্ষা। আজ সমাজে যেভাবে মানুষের জান মাল নিরাপত্তাহীনতায় থাকে যা পশুর জীবন চিত্রকে হার মানায়। ফিরে আসা প্রয়োজন ইসলামের সঠিক শিক্ষার কাছে।

 

আম্মার (রাযি.) বলেন, ‘তিনটি গুণ যে আয়ত্ত করে, সে (পূর্ণ) ঈমান লাভ করেঃ (১) নিজ থেকে ইনসাফ করা, (২) বিশ্বে সালামের প্রচলন, এবং (৩) অভাবী অবস্থাতেও দান খয়রাত করা।

 ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আমর (রাযি.) হতে বর্ণিত। এক ব্যক্তি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করল, ‘ইসলামের কোন্ কাজ সবচেয়ে উত্তম?’ তিনি বললেনঃ তুমি লোকদের খাদ্য খাওয়াবে এবং চেনা অচেনা সকলকে সালাম দিবে। বুখারি(আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৭)

এইক্ষেত্রে অনেকেই প্রশ্ন তুলেন গায়ের মাহরামকে সালাম দেয়া যাবে কিনা?

যে ক্ষেত্রে ফিতনার সম্ভাবনা থাকে সেইক্ষেত্রে গায়ের মাহরামকে সালাম দিবে না।বয়স্ক নারীকে সালাম দিবে।নারী এগিয়ে যেয়ে কোন গায়ের মাহরাম পুরুষকে সালাম দিবে না। যদি কেউ সালাম দেয়, ফিতনার সম্ভাবনা না থাকলে সালামের জবাব দিবে শব্দ করেই আর যেক্ষেত্রে ফিতনার সম্ভাবনা সেক্ষেত্রে জবাব শব্দ করে দিবে না।

 

https://islamqa.info/en/answers/39258/ruling-on-greeting-women-with-salaam-and-returning-their-greeting