শিষ্ঠাচার সংক্রান্ত হাদীস—৯ (পিতা মাতার ভূমিকা-২-৩ )

 

আজকের পিতামাতারা যদি টাকা আয়ের পথে বেশী ব্যস্থতা ও রেজাল্ট ভালোর জন্য কোচিং এ পাঠিয়ে দিয়ে দায়িত্ব শেষ মনে না করতো, সন্তানকে আসল শিক্ষা দানে সচেতন হতেন তাহলে আজকের সমাজের অপঘটনা অনেকাংশে রোধ করা যেতো।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

“সাত বছরে পর্দাপণ করলেই তোমরা তোমাদের সন্তানদের সালাত পড়ার নির্দেশ দাও, দশ বছরে পর্দাপণ করলে (তখনও যদি সালাত পড়ার অভ্যাস না হয়ে থাকে তবে) তাদেরকে সালাত করার জন্য দৈহিক শাস্তি দাও এবং তাদের বিছানা পৃথক করে দাও।” সুনানু আবিদ দাউদ, কিতাবুল সালাত, হাদীস নং-৪৯৫।

সালাত সম্পর্কিত নির্দেশ অন্যান্য আরকানের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য।

এইক্ষেত্রে সন্তানকে ফরয সালাতগুলো ধীরে সহিহভাবে ৫ওয়াক্ত সময়ে আদায় করার অভ্যাস গড়ানোর চেষ্টা করা প্রয়োজন।

 পিতা মাতার ভূমিকা-৩ 

 

একদা উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এর কাছে এসে জনৈক ব্যক্তি নিজের সন্তানের অবাধ্যাচরণের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। ওমর অভিযুক্ত সন্তানকে পিতার সাথে অসদাচরণের কারণ সম্পর্কে প্রশ্ন করেন। সন্তান তখন বলল, হে আমীরুল মু’মিনীন, সন্তানের কি পিতার উপর কোনো হক আছে? উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, হ্যাঁ, অবশ্যই। সে বলল, তাহলে তা কী? উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, পিতা তার জন্য সৎ আদর্শ নারীকে মাতা হিসেবে গ্রহণ করবে, তার জন্য একটা সুন্দর নাম রাখবে এবং তাকে কুরআন শিক্ষা দেবে। তখন সন্তান বলল, হে আমীরুল মু’মিনীন, আমার পিতা ওগুলোতে একটিও করে নি। আমার মা হচ্ছেন ক্রীতদাসী। এক সময় মূর্তিপূজারী ছিলেন, আমার নাম রেখেছে জু‘লান (অর্থাৎ গোবরে পোকা) আর আমার বাবা আমাকে কুরআনের একটি বর্ণও শিক্ষা দেন নি। উমার তখন পিতার দিকে তাকিয়ে বললেন, তুমি এসেছ সন্তানের অসদাচরণের বিরুদ্ধে নালিশ করতে। আরে তুমি তো তার প্রতি আগেই অবিচার ও অসদাচরণ করেছ।

আব্দুল্লাহ নাসির ওলওয়ান, তারবিয়াতুল আওলাদ ফিল ইসলাম, প্রথম খন্ড, পৃ. ৩১৮।

আমাদের সমাজের আজকের সন্তানেরা যারা বিপথগামী হয়েছে বা হচ্ছে তাদের অধিকাংশই এই উত্তরটাই দিবে। আল্লাহ আমাদের ভুল থেকে সাবধান হওয়ার তাওফিক দান করুন। পরবর্তী প্রজন্ম যেন এইভুল না করে সেই জন্য এখনই পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।