আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অথবা আবুল কাসেম বলেছেন:
“একদা এক ব্যক্তি হুল্লা পরে, আত্মম্ভরিতা নিয়ে, মাথা আঁচড়িয়ে হাঁটছিল এমতাবস্থায় আল্লাহ তাকে সহ ভূমি ধ্বস করে দিলেন এবং এভাবে কিয়ামত পর্যন্ত সে নীচের দিকে যেতে থাকবে।” সহিহ বুখারিঃ (৩২৯৭) ও সহিহ মুসলিম (২০৮৮)
এ ধরণের অহংকারের মধ্যে ঐ ব্যক্তির আচরণও পড়বে যার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেছেন:
“সে ফল পেল। অতঃপর কথা প্রসঙ্গে সঙ্গীকে বললঃ আমার ধন-সম্পদ তোমার চাইতে বেশী এবং জনবলে আমি অধিক শক্তিশালী।” সূরা কাহাফ: ৩৪
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
আর তুমি মানুষের দিক থেকে তোমার মুখ ফিরিয়ে নিয়ো না। আর যমীনে দম্ভভরে চলাফেরা করো না; নিশ্চয় আল্লাহ কোন দাম্ভিক, অহঙ্কারীকে পছন্দ করেন না’। সূরা লোকমান, আয়াত: ১৮
وتصعير الخد للناس এ কথাটির অর্থ হল, অহংকার করে মানুষের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া। আর ي الأرض والمشي অর্থ হল জমিনে অহংকার করে হাঁটা, বুক ফুলিয়ে হাটা।
إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُحِبُّ كُلَّ مُخۡتَالٖ فَخُورٖ নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা কোন দাম্ভিক, অহংকারীকে পছন্দ করে না। অর্থাৎ, যারা মানুষের উপর বড়াই করে তাদের সাথে অহংকার ও গরিমা দেখায়, তাদের আল্লাহ তায়ালা পছন্দ করে না।
فَخُورٖ অর্থাৎ, শক্তির বড়াই, জ্ঞানের বড়াই, ধন-সম্পদের বড়াই ইত্যাদি। আল্লাহ তা‘আলা যমিনে বুক ফুলিয়ে হাঁটা ও অহংকার করে চলাচল করা হতে সম্পূর্ণ নিষেধ করেন। আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে করীমে এরশাদ করে বলেন,
আর যমীনে বড়াই করে চলো না; তুমি তো কখনো যমিনকে ফাটল ধরাতে পারবে না এবং উচ্চতায় কখনো পাহাড় সমান পৌঁছতে পারবে না। সূরা আল-ইসরা: ৩৭
অহংকারীদের অভ্যাস হল, যমিনে অহংকার ও বুক ফুলিয়ে হাটা।
আবি মিজলায রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, মুয়াবিয়া রা. আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর ও আব্দুল্লাহ ইবনে আমের রা. এর দরবারে উপস্থিত হলে, আব্দুল্লাহ ইবনে আমের রা. তার সম্মানে দাঁড়াল, আর আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর রা. বসেছিল, সে দাঁড়ায়নি। মুয়াবিয়া রা. ইবনে আমেরকে বলল, তুমি বস! আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন- যে ব্যক্তি পছন্দ করে, লোকেরা তাকে দাঁড়িয়ে সম্মান করুক, সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে করে নেয়।
আবু দাউদ ৫৬৬৯, আল্লামা আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেন।
সায়াদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা ছয় ব্যক্তি রাসূল সা এর মজলিশে উপস্থিত ছিলাম, তখন মুশরিকরা রাসূল সা কে বলল, তাদেরকে দূরে সরিয়ে দাও, যাতে তারা আমাদের উপর প্রাধান্য বিস্তার না করে। তাদের কথা শুনে রাসূল সা অন্তরে যা জাগার জন্য আল্লাহ চাইল, তা জাগল এবং তিনি নমনীয় হলেন। তারপর সাথে সাথে আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াত নাযিল করেন,
আর তুমি তাড়িয়ে দিয়ো না তাদেরকে, যারা নিজ রবকে সকাল সন্ধ্যায় ডাকে, তারা তার সন্তুষ্টি চায়। তাদের কোন হিসাব তোমার উপর নেই এবং তোমার কোন হিসাব তাদের উপর নেই যে, তুমি তাদেরকে তাড়িয়ে দিবে, এরূপ করলে তুমি যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। আল-আন’আম : ৫২