“সে যেন স্বীয় প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ করে”। সহীহ বুখারী ৬০১৮; সহীহ মুসলিম: ৪৮
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়! আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়!! আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়!!! সাহাবীরা জিজ্ঞেস করলেন, কে সেই বঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্ত লোক হে আল্লাহর রাসূল? রাসূ্লুল্লাহ সা. বললেন, যে ব্যক্তির অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়”। সহীহ বুখারী: ৬০১৬
“আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি এসে রাসূলুল্লাহ সা.কে বলল, এক নারীর ব্যাপারে প্রসিদ্ধ, সে বেশি বেশি (নফল) নামায পড়ে, রোযা রাখে, দুই হাতে দান করে। কিন্তু জবানের দ্বারা স্বীয় প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয় (তার অবস্থা কি হবে?)। রাসূলুল্লাহ সা. বললেন, “সে জাহান্নামে যাবে”। আরেক নারী বেশি (নফল) নামাযও পড়ে না, খুব বেশি রোযাও রাখে না আবার তেমন দান সদকাও করে না; সামান্য দু-এক টুকরা পনির দান করে। তবে সে জবানের দ্বারা প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয় না (এই নারীর ব্যাপারে কি বলেন?)। নবী সা. বললেন, “সে জান্নাতি”। আল-আদাবুল মুফরাদ, বুখারী : ১১৯
আমাদের প্রত্যেকেরই সচেতন থাকা দরকার যেন প্রতিবেশীরা আমাদের থেকে উত্তম ব্যবহার পান। আজ আমাদের মাঝে অনেকেই একাডেমিক শিক্ষার সার্টিফিকেটের বা অর্থ-সম্পদের অহংকারে প্রতিবেশীকে হেয় করে আচরন করে থাকেন। কিন্তু মনে রাখা প্রয়োজন মহান আল্লাহই কাউকে কম বা কাউকে বেশী দিয়ে পরীক্ষা করছেন আবার আল্লাহর কাছে যে ব্যক্তি প্রিয় তাকে তুচ্ছ করা কত ভয়ানক ব্যপার হতে পারে। আমরা কেউই জানি না মহান আল্লাহর কাছে কে প্রিয়। তাই সবার প্রতি সম্মানের সহিত আচরন করা কর্তব্য। এটাই মানুষের প্রতি হক। এই শিক্ষাই ইসলাম দিয়েছে।
“ঐ ব্যক্তি মুমিন নয় যে পেট পুরে খায় অথচ সে জানে যে তার পাশের প্রতিবেশী না খেয়ে আছে”। আল আদাবুল মুফরাদ: ১১২
“আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা হাদিয়া আদান-প্রদান কর। এর মাধ্যমে তোমাদের মাঝে হৃদ্যতা সৃষ্টি হবে”। আল আদাবুল মুফরাদ, বুখারী: ৫৯৪ আল্লামা আলবানী হাদিসটিকে হাসান বলে আখ্যায়িত করেন।
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে অন্য হাদিসে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীদেরকে এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করে বলেছেন, “হে মুসলিম নারীগণ! তোমাদের কেউ যেন প্রতিবেশীকে হাদিয়া দিতে সংকোচ বোধ না করে। যদিও তা বকরীর খুরের মত একটি নগণ্য বস্তুও হয়”। সহীহ বুখারী: ৬০১৭
“হে আবু যর, তুমি ঝোল (তরকারি) রান্না করলে তার পানি বাড়িয়ে দিও এবং তোমার প্রতিবেশীকে তাতে শরিক করো”। সহীহ মুসলিম: ২৬২৫
জীবনের সবকিছু যত সাধারন সহজভাবে করে চলার চেষ্টা করবো ততবেশী ভালো লাগা আসবে। আজ আমাদের সমাজে বাহ্যিক সুন্দর করতে যেয়ে ভিতরের সুন্দরকে যেন চাপা দিয়ে ফেলেছে। একদিকে নিত্য খাবারের কিছু অংশ পাঠাতে ইতস্ততবোধ করেন আবার অন্যদিকে বদনাম করে বেড়ান কি খাবার পাঠিয়েছে ইত্যাদি। হাদীসের আলোকে মনকে সুন্দর করে প্রতিবেশীর সাথে সুসম্পর্ক রাখার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে আন্তরিকতার সাথে অভিনয় দিয়ে নয়।