শিষ্ঠাচার সংক্রান্ত হাদীস—১৭ (মেহমানদের ব্যপারে-২)

বারা ইবন আযেব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

 “যখন দুই মুসলিম ভাইয়ের মাঝে দেখা হয় এবং একে অপরের সাথে মুসাফাহা করে, তাদের উভয়ের পৃথক হওয়ার পূর্বে আল্লাহ তা‘আলা তাদের ক্ষমা করে দেন”।

 আবু দাউদঃ ৫২১২; তিরমিযী: ২৭২৭। আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন।

মেহমানের হক আদায়ের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় লক্ষনীয়।

কহাতে মুসাফাহা করাটা সুন্নাত, তবে কেউ যদি দুই হাত মিলিয়ে করেন তবে এটা সুন্নাত না হলেও বিদয়াত নয়। তবে সুন্নাত অনুসরন করাই উত্তম।

এইক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে গায়ের মাহরামদের সাথে কোনভাবেই মুসাফাহা করা যাবে না, সেটা হারাম। এমনকি বয়স্ক গায়ের মাহরাম হলেও।

প্রতিটি পরিবারের কর্তা ব্যক্তি বা পুরুষ ব্যক্তিটি পুরুষ অতিথিকে বসার ঘরে এবং নারী অতিথিকে পরিবারের নারী ভিতরে বা আলাদা বসার ঘরে নিয়ে আলাপ আলোচনা ও খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করবেন-এটাই ইসলামের বিধান। এমনকি গৃহপরিচারিকাকে দিয়ে পুরুষদের খাবার পরিবেশন করাটাও গুনাহের কাজ, এই ক্ষেত্রে টেবিলে খাবার সাজিয়ে দেয়ার পর  পুরুষ অতিথিকে পুরুষ কর্তা ব্যক্তিটি/ বা পরিবারের অন্য পুরুষ সার্ভ করে একসাথে খাবেন। ঠিক নারীর জায়গায় নারী করবেন।

 কিন্তু দুঃখের বিষয় আজকের সমাজ ব্যবস্থায় তথাকথিত স্মার্টের নামে ফরয পর্দা লংঘন করে নারী পুরুষ এক ঘরে ও টেবিলে বসে গল্প ও খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করে থাকেন যা সম্পূর্ণই হারাম। ইসলাম মানি পর্দা মানি কিন্তু বিপরীত লিংগের সাথে গল্প ও হাসি ঠাট্টা করার শয়তানী আনন্দটা ছাড়তে পারি না- এ অবস্থা যেন আজ ঘরে ঘরে। আল্লাহ আমাদের পরিবারে পর্দার বিধান আমল করার তাওফিক দান করুন ও সঠিক সুন্নাতের আলোকে মেহমানের হক আদায় করার সুযোগ দিন।

 

১। মেহমানকে বাড়ীর দরজা থেকে সম্ভাষণ জানানো এবং বিদায়ের সময় বাড়ীর দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসা।

২। মেহমানের সাথে হাসি মুখে সাক্ষাত করা: আবু যর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

 “তোমার ভাইয়ে সাথে মুচকি হাসি দিয়ে সাক্ষাত করা দান করার সাওয়াব”। সহীহ বুখারী, আদাবুল মুফরাদ: ৮৯১। আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন।

৪। যখন কোনো মেহমান আসে তার সামনে  সাধ্য অনুযায়ী ভালো খাবার পেশ করা।

৪। মেহমানের সাথে একসাথে খানা শেষ করা। অন্যথায় লজ্জায় মেহমান খেতে চাইবে না।

৫। মেহমানের সাথে সাথে সুন্দর সুন্দর কথা বলা। যাতে তার অন্তরে খুশি থাকে। তবে অপ্রয়োজনীয় বেহুদা বা গুনাহের গল্প করা যাবে না। গীবত পরনিন্দা থেকে দূরে থাকতে হবে। পর্দার বিধান বজায় রাখতে হবে।

ইমাম আওযায়ী রহ. কে জিজ্ঞাসা করা হলো, মেহমানের সম্মান কী? তিনি বললেন, “হাসি মুখ ও সুন্দর কথা”।

 ৬। বাসায় পূর্ব থেকে কিছু ইসলামিক বই রাখুন যেন অতিথিকে উপহার দিতে পারেন,এতে দাওয়াতের হক আদায় হয়ে যাবে ইন শা আল্লাহ।

https://islamqa.info/en/92806