শিষ্ঠাচার সংক্রান্ত হাদীস—১
মুমিনের জীবন হিসেবে নিজেদের গড়তে হলে আমাদের প্রতিটি সময় যেন মহান আল্লাহর স্মরনে থাকে এবং সব সময় যেন ডান কাঁধের ফিরিশতা দ্বারা সংরক্ষিত হয় অর্থাৎ সেই সময়ের কাজ যেন আমাদের আমলনামাকে বিচারের ময়দানে ডান হাতে দেয়ার উপযুক্ত হিসাবে লিখিত হয় সেই প্রচেষ্টা করা দরকার।
আল্লাহ বলেছেন- যে ব্যক্তি বিন্দু পরিমান নেক আমল করবে সে তা দেখতে পাবে এবং যে ব্যক্তি বিন্দু পরিমান বদআমল করবে তাও সে দেখতে পাবে। সূরা যিলযালঃ৭-৮
ধীরে ধীরে আমরা কিছু কাজ তুলে ধরবো ইনশাল্লাহ যা সংশোধনের দিকে আমরা একটু যত্নশীল হলেই নিজেদের আমলনামাকে সুন্দর করে সাজাতে পারি মহান আল্লাহর সাহায্যে। আল্লাহ আমাদের জানার বুঝার ও আমল করার তৌফিক দান করুন। আমীন
আমরা অনেকে কবিতা ও গল্প পড়ে সময় পার করি এবং আনন্দ লাভ করি।অনেকেই সাহিত্য থেকে গল্প ও কবিতাকে বেশী পছন্দ করে থাকেন। আর তাই দেখা যায় গল্পের বই পড়তে ঘন্টা চলে গেলেও ক্লান্ত হন না।এই ব্যপারে হাদীস থেকে জানার চেষ্টা করি। আবার বিভিন্ন উপলক্ষ্যে কবিতাকে সাজাতেও অনেকে খুব বেশী অনুরক্ত থাকেন।
চলুন হাদীস থেকে জানি—-
জাবির ইবনে সামুরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি শতাধিক বৈঠকে নবী(সঃ) এর সাথে ছিলাম। সে সব বৈঠকে তাঁর সাহাবীগন কবিতা আবৃত্তি করতেন এবং জাহিলিয়া যুগের বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করতেন। তিনি সেগুলো চুপ করে শুনতেন এবং কখনো কখনো মুচকি হাসতেন। তিরমিযী-আবওয়াবুল আদাবঃ২৭৮৭
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী(সঃ) (কবি) হাসসানের জন্য মসজিদে একটি মিম্বর রেখে দিতেন। তিনি তাতে দাঁড়িয়ে রাসূল(সঃ) এর গৌ্রবগাঁথা আবৃত্তি করতেন অথবা তিনি(আইশা) বলেন, রাসূল(সঃ)এর তরফ থেকে (কাফেরদের কটূক্তির) জবাব দিতেন। আর রাসূল(সঃ) বলতেন–আল্লাহ রুহুল কুদ্দুস জিবরাঈলের মাধ্যমে হাসসানকে সহায়তা করেন, যতক্ষণ সে রাসূল(সঃ)এর গৌ্রবগাঁথা আবৃত্তি করে অথবা(কাফেরদের তিরস্কারের) জবাব দেয়।
তিরমিযী-আবওয়াবুল আদাবঃ২৭৮৩
শিষ্ঠাচার সংক্রান্ত হাদীস—২
নবী(সঃ) বলেন—আরব কবিদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম ও সত্য কথা বলেছে লাবীদ। আর তা হল—আলা কুল্লু শাইয়িন মা খালাল্লাহা বাতিলুন(শোন হে মানুষ ভাই)! আল্লাহ ছাড়া সব কিছুই বাতিল।
বুখারী,মুসলিম, তিরমিযী-আবওয়াবুল আদাবঃ২৭৮৬
তাহলে দেখুন যে কবিতা আল্লাহকে স্মরন করে দেয় আরো বেশী
যে কবিতা আল্লাহর পথে চলতে আরো উৎসাহিত করে
যে কবিতা ইসলামের বিজয় গাঁথা বর্ণনা করে
যে কবিতা সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করে মিথ্যাকে পদদলিত করে।
যে কবিতা মানুষকে দায়িত্ববোধ শেখায় —-সেই কবিতা হতে পারে আমাদের আনন্দ লাভের মাধ্যম।
রাসূল(সঃ) বলেছেন—
তোমাদের কারো পেট (নষ্ট) কবিতার চাইতে বমিতে ভর্তি থাকাই উত্তম। বুখারী,মুসলিম, তিরমিযী-আবওয়াবুল আদাবঃ২৭৮৮
রাসূল(সঃ) বলেছেন—
(খারাপ ও চরিত্র বিধ্বংসী) কবিতার চাইতে তোমাদের কারো পেট বমি দ্বা্রাই ভর্তি করাই উত্তম। মুসলিম, তিরমিযী-আবওয়াবুল আদাবঃ২৭৮৯
আমাদের সমাজে কিভাবে কিছু কবিতা-গল্প-উপন্যাস দিয়ে যুবক-যুবতী শুধু নয় সব বয়সের মানুষদের চরিত্রহীনতার দিকে আকর্ষিত করছে এবং ইসলামের সৌন্দর্য্য থেকে দূরে নিয়ে যাচ্ছে। রাসূল(সঃ) এর সময়েও দেখা যায় নবী(সঃ) যখনই ইসলামের কথা বলেছেন তখনই কাফের তথা ইসলামের শত্রুরা কাছেই এক জায়গায় কোন গান-কবিতা-গল্পের আসর শুরু করে দিত যেন মানুষ রাসূলের কথা না শুনে তাদের সাথে (গান-কবিতার আসরে)মগ্ন থাকে।
দেখুন আমাদের সমাজেতো এখন ঘরে বসেই চলছে এই চক্রান্ত যা TV, MP3, Comp, VCD— ইত্যাদি আরো প্রযুক্তির অপব্যবহার করে। ছোট কোমলমনা শিশুসহ ঘরের পরিচারিকাকে বিভিন্ন রকম অশ্লীল জিনিষ কিভাবে মগ্ন করে রাখছে। তাহলে এই কোমল শিশু, যে ছোট বেলায় বাজনা-গান নাচ দেখে বড় হয় তার কাছে কিভাবে কুর’আন পড়তে বা শুনতে ভাল লাগবে বড় হলে!!!!!
আসুন আমরা আরো সচেতন হই । আমাদের সন্তান-ভাই-বোন সবাইকে ভালো কাজে সময় ব্যয় করতে উৎসাহিত করি।
সবচেয়ে ভালো হয় যদি কুর’আন তেলাওয়াতে আনন্দ আনার অভ্যাস গড়ে তুলা যায়।