রামাদান পূর্ববর্তী প্রস্তুতি কেন নিবেন?
একটু মনে করুন দেখতে দেখতে কতগুলো বছরের রামাদান মাস পার করে এসেছি!!!
জীবন ক্ষণস্থায়ী। আমরা যতই মনে করি না কেন যে আরো অনেক বছর বেঁচে থাকবো বা বিভিন্ন চাওয়া পাওয়ার মাঝে সাময়িক ভুলে থাকি যে আমাকে যে কোন মুহূর্তে চলে যেতে হবে এই সুন্দর মায়াময়ী সংসার ও মনভুলানো দুনিয়া থেকে। মহান আল্লাহ বলেছেন:
তোমরা যেখানেই থাকো না কেন মৃত্যু (এসে) তোমাদের গ্রাস করবেই, এমনকি তোমরা যদি (কোনো) মজবুত দুর্গেও থাকো (সেখানেও মৃত্যু এসে হাযির হবে)। সূরা আন নিসা: ৭৮
কোন প্রাণীই আল্লাহর (সিদ্ধান্ত ও) অনুমতি ছাড়া মরতে পারে না, (আল্লাহ তা’লার কাছে প্রত্যেকটি প্রাণীরই মৃত্যুর) দিনক্ষণ সুনির্দিষ্ট। সূরা আলে ইমরান: ১৪৫
গতবছর যারা রামাদান মাস পেয়েছিলেন এবার তাঁদের অনেকেই হয়তো আমাদের মাঝে নেই, চলে গিয়েছেন কবরে বারযাখের জীবনে। আমাকেও ভাবতে হবে জীবনে আর রামাদান পাবো কি না এবং তা আমার আখেরাতের জন্য মুক্তির সোপান হলো কিনা!! আমাদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন। সময়কে কাজে লাগিয়ে সফলতায় পৌঁছুতে হলে পরিকল্পিতভাবে চলতে হবে। তাহলে অন্তত মহান আল্লাহ সুবহানের কাছে আমরা এই সাক্ষীর খাতায় নাম লেখাতে পারবো যে আমি তাঁর বান্দাহ হওয়ার জন্য সচেষ্ট ছিলাম। গাফুরুর রাহীম আমাদের ক্ষমা করে কবুল করে নিন।
অন্যান্য মাসের চেয়েও রামাদান মাসের জন্য অন্তরকে আলাদাভাবে উৎসাহিত করা, যেন অন্য সময়ের রুটিন কাজের বাইরে বিশেষ রুটিন করার সময় বের করা যায়।
পরিকল্পিতভাবে কাজ করলে তার একটি সুন্দর ফলাফল লাভ করা যায়:
- আমাদের এই প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে নিজেকে স্মরণ করানো দরকার এইতো রামাদান চলে এসেছে, আর শুরু হলেই কেমন করে শেষ হয়ে যায় দিনগুলো। তাই মানসিক ভাবে নিজে তৈরী হয়ে কিছু পরিকল্পনা করে ফেললে অন্যসব ব্যস্ততা থাকলেও সেই পরিকল্পনার কাজগুলো করার একটা তাগাদা থাকবে এবং আল্লাহর সাহায্যে কিছু হলেও বাস্তবায়ন হবে।
- অনেক ব্যস্ততার মধ্যেও যদি আখেরাতের লাভটা আমরা প্রাধান্য দেই তবে অবশ্যই আমাদের সময়কে সুচিন্তিত ও সুন্দর পরিকল্পনা যা রাসূল সা.এর জীবনী থেকে নিয়ে আমরা সাজাতে পারি ।
- শুধু নিজে নয় পুরো পরিবারের সদস্যরাও একসাথে মিলে রামাদান মাসের উদ্দেশ্য, শিক্ষা ও কল্যাণ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে সুন্দর আদর্শ পরিবার তথা সমাজ কায়েম করার জন্য সহায়ক হবে ইনশা’আল্লাহ।
- এতদিনের যা অভ্যাস থাকুক না কেন এখন নতুন করে হলেও ভারসাম্যপূর্ণ জীবনে অভ্যস্ত হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আল্লাহ আমাদের সহায় হউন।
- মহান রবের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্য সহায়ক হবে রাতের নামাজ ।
- আত্মশুদ্ধির জন্য সহায়ক হবে। উন্নত নৈতিক চরিত্রের অধিকারী হতে সচেষ্ট হবে।
- রাসূল সা.এর উম্মত হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ লাভে সহায়ক হবে।
- পরিবার ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখার যোগ্যতা তৈরী হবে।
- বেশী বেশী তওবা এস্তেগফারের মাধ্যমে মহান রবের ক্ষমা লাভ হবে ইনশাআল্লাহ।
- একমাস প্রশিক্ষণ নিয়ে বছরের বাকী মাসগুলোকে সেই আদর্শে উজ্জীবিত থেকে কাজ করে যাওয়া।