১। সমাজে কিছু প্রচলিত নিয়্যাত যা সেহরীতে মুখে উচ্চারনের মাধ্যমে করে থাকেন যা শরীয়ত সম্মত নয়। নিয়্যাত হবে, সিয়ামের ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্পের মাধ্যমে এবং রামাদানের সিয়ামের নিয়্যাত, প্রতি রাতে করতে হবে।
এটা হল অন্তরের কাজ বা মনে মনে সংকল্প করা।
যে ফজরের আগে সিয়ামের নিয়্যাত করলো না, তার কোন সিয়াম নেই। আত তিরমিযী: ৭৩০
২। অনেকে সেহরীতে উঠা কষ্ট বা প্রয়োজন নেই মনে করে সেহরী করেন না। কিন্তু রাসূল সা. বলেছেন:
তোমরা সেহরী খাবে, কেননা সেহরীতে বরকত রয়েছে। সহীহ মুসলিম: ২৪১৫
আমাদের রোযা এবং আহলি কিতাব অর্থাৎ ইহুদী ও খৃষ্টান সম্প্রদায়ের রোযার মধ্যে পার্থক্য হলো সেহরী খাওয়া। সহীহ মুসলিম: ২৪১৬
আবার রাতের শেষ সময়ে দু’আ কবুলের সময়, রামাদান মাসে এই সেহরীতে উঠে আমরা সেই সুযোগ লাভ করতে পারি, তাহাজ্জুদের ফায়দা লাভে অভ্যস্ত হওয়ার সুযোগ লাভ করতে পারি।
৩। অনেকে আবার তাড়াতাড়ি সেহরী করেই ফজরের নামাজ পড়ে শুয়ে পড়েন কিন্তু
সেহরী ও নামায এ দুয়ের মধ্যে ব্যবধান পঞ্চাশ আয়াত পাঠ করার পরিমান সময়। সহীহ মুসলিম: ২৪১৮
৪। অনেকে বিশেষ করে মহিলারা ও গৃহ পরিচারিকা ইফতার আয়োজনে ব্যস্ত থেকে দেরী করে ইফতার করেন কিন্তু
যতদিন লোকেরা তাড়াতাড়ি (সূর্যাস্তের সাথে সাথে) ইফতার করবে ততদিন পর্যন্ত কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হবে না। সহীহ আল বুখারী: ১৮১৮
৫। অনেক পরিবারে শিশুদের রোযা রাখতে দেন না এমন কি সাবালক/সাবালিকা যাদের সাওম ফরয কিন্তু পরীক্ষা ওয়াসিলায়, স্বাস্থ্যগত দুর্বলতার কথা বলে সাওম করতে দেন না, যা অত্যন্ত গর্হিত কাজ।
আমাদের শিশুদেরও রোযা রাখাতাম। তাদেরকে আমরা তুলা বা পশমের খেলনা তৈরী করে দিতাম। তারা কেউ খাওয়ার জন্য কাঁদলে আমরা তাদেরকে ঐ খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে রাখতাম। আর এইভাবেই ইফতারের সময়
হয়ে যেত। সহীহ আল বুখারী: ১৮২১
৬। ইচ্ছা করে রোযা করেন না অনেকে কিন্তু
যে ব্যক্তি কোন ওজর বা রোগ ব্যতিরেকে রামাদান মাসের একটি রোযা ভংগ করে, তার সারা জীবনের রোযা দ্বারাও এর ক্ষতিপূরন হবে না। আত তিরমিযী: ৬৭১
এর কাফফারা হল – একটি ক্রীতদাস মুক্ত করে দিতে হবে বা দু’মাস রোযা রাখতে হবে বা ষাট জন মিসকীনকে পানাহার করাতে হবে। সহীহ মুসলিম ৪র্থ খণ্ড
৭। ভুল করে খেয়ে ফেললে
রোযাদার যদি ভুল করে খায় বা পান করে তাহলে সে (ইফতার না করে) রোযা পূর্ণ করবে। কেননা আল্লাহই তাকে পানাহার করিয়েছেন। সহীহ আল বুখারী: ১৭৯৫
৮। অনেকে সাওমের সাথে তারাবীহ নামাজকে লিঙ্ক করে ভাবেন সাওম করতে পারি না তাই তারাবীহ পড়ে কি হবে বা তারাবীহ না পরলে সাওম করে কি হবে। সাওম একটি ফরয ইবাদাত, শরীয়ত সম্মত কারণ ছাড়া বাদ
দেয়া যায় না।
যে ব্যক্তি রামাদানে (রাতে তারাবীহর নামাযে) ঈমানের সাথে এবং সওয়াবের আশায় দাঁড়ায় তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। সহীহ আল বুখারী: ১৮৬৭
৯। কারো রোযা অবস্থায় বমি হলে তাকে উক্ত রোযার কাযা করতে হবে না। কিন্তু কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করলে তাকে রোযার কাযা করতে হবে। আত তিরমিযী: ৬৬৭