দয়াময় মেহেরবান আল্লাহর নামে
সিজদা শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্য নির্ধারিত। তিনি সিজদায় সবচেয়ে বেশি খুশি হন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর শুকরিয়া জ্ঞাপনার্থে আল্লাহ তাআলার জন্য সিজদা করেছেন।
ইবনুল কাইয়্যিম (র) বলেন : “অন্তরের শুকরিয়া হলো আত্মসমর্পণ এবং বিনম্রতায়;
জিহ্বার শুকরিয়া হলো প্রশংসা এবং স্বীকারোক্তিতে;
আর শারীরিক ক্ষমতার শুকরিয়া হলো আনুগত্য এবং বশ্যতায়।” [মাদারিজ আল-সালিকীন (২/২৪৬)]
সিজদায়ে শুক্র দিতে হয়- মানুষ যখন কোন বিপদ থেকে উদ্ধার লাভ করে বা কোন নেয়ামত প্রাপ্ত হয় বা আনন্দময় কোন কিছু লাভ করে। এ সিজদার নিয়ম নামাযের বাইরে তেলাওয়াতের সিজদার মত। বিদ্বানদের কেউ কেউ এ সিজদার জন্য ওযু এবং তাকবীর আবশ্যক মনে করেন। কেউ শুধু প্রথম তাকবীর দেয়ার কথা বলেন। অর্থাৎ- তাকবীর দিয়ে সিজদাবনত হবে, তারপর (সুবহানা রাব্বীয়্যাল আ‘লা) বলার পর কিছু দু’আ করবে। এরপর তাকবীর না দিয়েই উঠে যাবে।
নিচের মাসয়ালাটি জানা যায়-
যে কোন ভাল সংবাদ শ্রবণে বা কোন নে‘মত প্রাপ্ত হ’লে আল্লাহরর শুকরিয়া আদায়ের লক্ষ্যে সিজদা করা উত্তম। রাসূল (সা.)-এর নিকট কোন আনন্দের সংবাদ আসলে অথবা তাঁকে কোন সুসংবাদ প্রদান করা হ’লে তিনি আল্লাহরর শুকরিয়া আদায়ের জন্য সিজদা করতেন (আবুদাউদ হা/২৭৭৪, ইবনু মাজাহ হা/১৩৯৪, সনদ হাসান, ইরওয়া হা/৪৭৪)।
সাহাবী কা‘ব বিন মালেক (রাঃ) তার তওবা কবুল হওয়ার সুসংবাদ শুনে সিজদায় লুটিয়ে পড়েছিলেন (বুখারী হা/৪৪১৮; মুসলিম হা/৭১৯২)।
এছাড়া রাসূল (সা) নতুন কোন সুসংবাদের ক্ষেত্রে এরূপ করলেও, নিয়মিত কোন ইবাদতের ক্ষেত্রে এরূপ করেননি। সুতরাং এরূপ করা থেকে বিরত থাকাই কর্তব্য। উল্লেখ্য যে, এই সিজদা হবে একটি এবং এর জন্য সতর ঢাকা, ওযূ, কিবলা বা সালাম শর্ত নয়। কেননা এটা ছালাত নয়। বরং শুকরিয়া আদায় মাত্র (উসায়মীন, শারহুল মুমতে‘ ৪/৮৯-৯০, ১০৫)।
কোন নি‘আমত প্রাপ্ত হলে বা বিপদাপদ কেটে গেলে শুকরিয়ার সাজদাহ দেওয়া সুন্নাত। কেননা আবু বাকরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে,
«كَانَ إِذَا أَتَاهُ أَمْرٌ يَسُرُّهُ أَوْ بُشِّرَ بِهِ، خَرَّ سَاجِدًا»
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট কোনো খুশির খবর আসলে তিনি আল্লাহর সমীপে সাজদায় লুটিয়ে পড়তেন।
আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু খাওয়ারেজদের মধ্যে ‘যুসসুদাইয়্যা’ পেয়ে শুকরিয়ার সাজদাহ করেছেন। (মুসনাদ আহমাদ)