দয়াময় মেহেরবান আল্লাহর নামে
আসসালামু’আলাইকুম।
দুনিয়ার জীবনের ভালোবাসার কথা বলার জন্য আমরা কত আবেগ মিশ্রিত ও সুন্দর সুন্দর উপমা সম্বলিত এবং উচ্চ সাহিত্যিক ভাষা প্রয়োগের চরম প্রচেষ্টা চালিয়ে থাকি। তাহলে আমরা সেই মানব জাতি যার মাঝে কত প্রেম ভালোবাসা রয়েছে। এই প্রেম ভালোবাসা যিনি দিয়েছেন সেই মহান প্রতিপালক আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীনের প্রতি আমাদের ভালোবাসার প্রকাশ কিভাবে হতে পারে বা আমরা কিভাবে তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে প্রকাশ করবো নিজেদের চাওয়া পাওয়া সব কিছুই সুন্দর করে শিখিয়ে দিয়েছেন। তাই চলুন স্থায়ী জীবনের ও অস্থায়ী জীবনের যিনি মালিক তাঁর দেয়া শিক্ষাগুলোকে একটু রপ্ত করে নেই এবং উপলব্ধিতে এনে সেভাবেই সালাতে মহান রবের সাথে কথা বলায় কিছু সময় কাটাই।
কয়েকটি পর্বে সালাতে পঠিত বিষয়ের অর্থসহ তুলে ধরলাম যা আমরা শিখে ফেলার পরম প্রচেষ্টা চালাবো ইন শা আল্লাহ।
রাসুল(সঃ) নামাযে সুরা কিরায়াত শুরুর আগে বিভিন্ন দু’আ পড়তেন। ঐ সকল দু’আয় মূলত আল্লাহর প্রশংসা, শ্রেষ্ঠত্ব ও গুন-গান বর্ণনা করতেন।
সুরা ফাতিহা পড়ার আগে এই দোয়াগুলো তাকবীর(আল্লাহু আকবার—আল্লাহ বড়) বলার পর পড়তেন।
একটি হল—
সালাতের শুরুতে হাত বাঁধার পর দো‘আ
اللَّهُمَّ بَاعِدْ بَيْنِي وَبَيْنَ خَطَايَايَ كَمَا بَاعَدْتَ بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ، اللَّهُمَّ نَقِّنِي مِنْ خَطَايَايَ كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الْأَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ، اللَّهُمَّ اغْسِلْني مِنْ خَطَايَايَ، بِالثَّلْجِ وَالْماءِ وَالْبَرَدِ».
আল্লাহুম্মা বাঈদ বাইনী ওয়া বাইনা খাতোয়া ইয়া ইয়াকামা বায়াদতা বাইনাল মাশরিকি ওয়াল মাগরিবি।
আল্লাহুম্মা নাক্কিনী মিন খাতোয়াইয়া ইয়া কামা ইউনাক্কাসসাওবুল আবইয়াদু মিনাদদানাস।
আল্লাহুম্মাগ ছিলনী মিন খাতোয়াইয়া ইয়া বিল মায়ী ওয়াছছালজী ওয়াল বারাদ।
হে আল্লাহ! আমার ও আমার গুনাহর মধ্যে সেরকম দূরত্ব সৃষ্টি করো যেমন দূরত্ব রয়েছে পুর্ব ও পশ্চিমের।
হে আলাহ! আমাকে গুনাহ থেকে এমনভাবে পরিষ্কার করে দাও যেমন করে সাদা কাপড়কে ময়লা থেকে ধবধবে পরিষ্কার করা হয়। হে আল্লাহ! আমাকে গুনাহ থেকে পানি, বরফ ও তুষারকণিকা দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে দাও। বুখারীঃ৭০০-কিতাবুল আযান
কখনও এটাও পড়েছেন—
«سُبْحانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ، وَتَبارَكَ اسْمُكَ، وَتَعَالَى جَدُّكَ، وَلاَ إِلَهَ غَيْرُكَ».
সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়া তায়ালা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুক।
হে আল্লাহ! তুমি সকল ত্রুটি থেকে মুক্ত ও পবিত্র। আমরা সর্বদা তোমার প্রশংসা করি। তোমার নামের বরকত অনেক বেশী এবং তোমার সম্মান ও মর্যাদা অনেক উঁচু। তুমি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই। আবু দাউদ
اللَّهُ أَكْبَرُ كَبِيرَاً، اللَّهُ أَكْبَرُ كَبِيراً، اللَّهُ أَكْبَرُ كَبِيراً، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ كَثيراً، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ كَثيراً، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ كَثيراً، وَسُبْحَانَ اللَّهِ بُكْرَةً وَأَصِيلاً» (তিনবার) «أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ: مِنْ نَفْخِهِ، وَنَفْثِهِ، وَهَمْزِهِ».
(আল্লা-হু আকবার কাবীরান, আল্লা-হু আকবার কাবীরান, আল্লা-হু আকবার কাবীরান, ওয়ালহামদু লিল্লা-হি কাসীরান, ওয়ালহামদু লিল্লা-হি কাসীরান। ওয়ালহামদু লিল্লা-হি কাসী-রান ওয়াসুবহা-নাল্লাহি বুকরাতাঁও ওয়া আসীলা [তিনবার]। আউযু বিল্লা-হি মিনাশ শায়তানি, মিন নাফখিহী ওয়ানাফসিহী ওয়াহামযিহী)
“আল্লাহ সবচেয়ে বড় অতীব বড়, আল্লাহ সবচেয়ে বড় অতীব বড়, আল্লাহ সবচেয়ে বড় অতীব বড়। আর আল্লাহ্র জন্যই অনেক ও অজস্র প্রশংসা, আল্লাহ্র জন্যই অনেক ও অজস্র প্রশংসা, আল্লাহ্র জন্যই অনেক ও অজস্র প্রশংসা। সকালে ও বিকালে আল্লাহ্র পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি” (তিনবার) “আমি শয়তান থেকে আল্লাহ্র নিকট আশ্রয় চাই। আশ্রয় চাই তার ফুঁ তথা দম্ভ-অহংকার থেকে, তার থুতু তথা কবিতা থেকে ও তার চাপ তথা পাগলামি থেকে। আবূ দাউদ ১/২০৩, নং ৭৬৪; ইবন মাজাহ্ ১/২৬৫, ৮০৭;
উপরের যে কোন একটি দু’আ পড়া যেতে পারে। আরো অনেক রকম দু’আ পড়েছেন। এখানে তিনটি উল্লেখ করা হলো।
আল্লাহ আমাদের সালাতকে সুন্দর ও কবুল করুন। আমীন। আমাদের সব দু’আ কবুল করুন। আমীন