মহান আল্লাহ মহিলা পুরুষের মাঝে সৃষ্টিগত যেমন কিছু পার্থক্য রেখেছেন তেমনিভাবে তাদের সৃষ্টি ও শক্তি-সামর্থ্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে এবাদতের ক্ষেত্রেও কিছু বিষয়ে পার্থক্য করেছেন।
আমরা যদি হজের আহকামসমূহের প্রতি তাকাই তাহলে দেখতে পাব যে, এ পার্থক্যের মূল ভিত্তি হচ্ছে তিনটি বিষয়:
১- মহিলাদের উপর পুরুষদের দায়িত্বশীলতা
২- মহিলাদের হায়েয ও নেফাস জনিত সমস্যা
৩- মহিলাদের পর্দা ও অবাধ বিচরণ নিয়ন্ত্রণ
১- মহিলাদের উপর পুরুষদেরকে মহান আল্লাহ দায়িত্বশীল ঘোষণা করেছেন। আর সে কারণে যে যে বিষয়ে মহিলারা পুরুষদের থেকে ভিন্ন তা হচ্ছে:
- নফল হজের জন্য মহিলাদেরকে তাদের স্বামীর অনুমতি নিতে হবে।
- ফরজ হজের জন্য মহিলাদেরকে তাদের স্বামীর অনুমতি নেয়া মুস্তাহাব।
- কোন মহিলা ইদ্দতে থাকলে সে হজের সফরে যেতে পারবে না।
২- মহিলাদের হায়েয ও নেফাসজনিত সমস্যার কারণে যে যে বিষয়ে মহিলারা পুরুষদের থেকে ভিন্ন তা হচ্ছে:
- হায়েয-নেফাস অবস্থায় মসজিদুল হারামে প্রবেশ করতে পারবে না।
- হায়েয-নেফাস অবস্থায় বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করতে পারবে না। [তবে যে অবস্থা সম্পর্কে পূর্বে আলোচিত হয়েছে সেটা ভিন্ন]
- মক্কা ছাড়ার সময় কোন মহিলা হায়েয-নেফাস অবস্থায় থাকলে তার আর বিদায়ি তাওয়াফ করা লাগবে না।
৩- মহিলাদের পর্দা, ইজ্জত আব্রুর সংরক্ষণের ক্ষেত্রে তারা পুরুষদের থেকে যে যে বিষয়ে ভিন্ন তা হচ্ছে:
- মাহরাম ব্যতীত সফর করা মহিলাদের জন্য জায়েয নয়।
- যদি হজের কর্মকাণ্ড শুরু করার পর কারও মাহরাম মারা যায় তবে তিনি তার হজ কমপ্লিট করে নেবেন।
- মহিলাগণ হাত মোজা ব্যবহার করতে পারবেন না।
- এমন বোরকা ব্যবহার করা যাবে না যাতে মুখ ঢাকা পড়ে যায়।
- মহিলাগণ হজে স্বাভাবিক অবস্থায় মুখ ঢাকতে পারবেন না।
- যদি গায়রে মাহরাম তাদের সামনে এসে যায় তখন তারা মুখ ঢেকে ফেলবেন।
- মাথার উপর থেকে ঢেকে রাখার মত কাপড় রাখা যাবে যা প্রয়োজনের সময় নীচে নামিয়ে ফেলা যায়।
- নেকাব পরতে পারবে না।
- মহিলাগণ অলংকার ব্যবহার করতে পারবেন।
- সুগন্ধি নেই এমন সৌন্দর্যমূলক কিছু পরতে পারবেন। তবে না পরা ভাল।
- মেহেদি ও খেজাব ব্যবহার করতে পারবেন। তবে সুগন্ধি মিশ্রিত হতে পারবে না।
- বড় ও উঁচু স্বরে তালবিয়া পাঠ করবে না।
- অনুরূপভাবে তাওয়াফ, সা’য়ী ও অন্যান্য দো’আর সময়ও তার স্বর উঁচু হবে না।
- মহিলাগণ রমল করবে না।
- মহিলাগনের উপর ‘ইয্তেবা’ নেই।
- মহিলাগণ পুরুষদের ভিড় থেকে বাঁচার জন্য প্রান্তদিক থেকে তাওয়াফ করবেন।
- ভিড় থাকলে হাজরে আসওয়াদ এবং রুকনে ইয়ামানী ধরার চেষ্টা না করাই ভাল।
- সা’য়ীর সময় মহিলাগণ দুই সবুজ গম্বুজের মাঝখানে দৌড়াবেন না।
- সা’য়ীর সময় মহিলাগণ সাফা পাহাড়ের উপরে বেয়ে উঠার চেষ্টা করবেন না।
- মহিলা হাজী সাহেবা নিজের ‘হাদী’ নিজে জবাই করার চেয়ে অন্যের মাধ্যমে তা করানো উত্তম।
- মহিলা চুল খাট করবে, যার পরিমাণ পূর্বে বর্ণনা করা হয়েছে। তারা মাথা কামাতে পারবে না। এটা জায়েয নেই।