আরাফার দিবসের মর্যাদা-১৭

 

যিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখ হলো আরাফার দিন। এই দিনটি হজ্জ আদায়ের জন্য যারা আরাফার ময়দানে আছেন এবং যারা গমন করেননি-সকল মুসলিমদের জন্যই একটি মর্যাদাপূর্ণ দিন। কারণ এই দিনে বিশ্বমুসলিমের প্রতি আল্লাহ তা’য়ালা তার নিয়ামত ইসলাম ধর্মকে পরিপূর্ণ ঘোষনা করেন।

মহান আল্লাহ বলেছেন,

আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন পূর্ণাংগ করলাম এবং তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জীবন বিধান হিসেবে মনোনীত করলাম। সূরা আল মায়িদা: ০৩

ইহুদীরা উমর রা. কে বললো যে, আপনারা এমন একটি আয়াত তিলাওয়াত করে থাকেন যে, যদি সেই আয়াতটি আমাদের উপর নাযিল হতো তাহলে আমরা সেই দিনটিকে ঈদ হিসেবে উদযাপন করতাম। উমর রা. এ কথা শুনে বললেন, আমি জানি কখন তা অবতীর্ণ হয়েছে, কোথায় তা অবতীর্ণ হয়েছে, আর অবতীর্ণ হওয়ার সময় রাসূল স. কোথায় ছিলেন। হ্যা, সেই দিনটি হল আরাফার দিবস। আল্লাহর শপথ! আমরা সেদিন আরাফার ময়দানে ছিলাম। আর আয়াতটি হলো, “আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন পূর্ণাংগ করলাম এবং তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জীবন বিধান হিসেবে মনোনীত করলাম”।

সহিহ বুখারী: ৪৬০৬

আরাফাহ দিবস হল এক মর্যাদাসম্পন্ন দিন। এ দিনটি অন্যান্য অনেক ফজিলত সম্পন্ন দিনের চেয়ে বেশি মর্যাদার অধিকারী। যে সকল কারণে এ দিবসটির এত মর্যাদা তার কয়েকটি নীচে আলোচিত হল :

১। ইসলাম ধর্মের পূর্ণতা লাভ, বিশ্ব মুসলিমের প্রতি আল্লাহর নিয়ামতের পরিপূর্ণতা প্রাপ্তির দিন

আল কুর’আনে এসেছে,আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন পূর্ণাংগ করলাম এবং তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জীবন বিধান হিসেবে মনোনীত করলাম।          

    সূরা আল মায়িদা: ০৩

এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে রজব রহ. সহ অনেক উলামায়ে কেরাম বলেছেন যে এ আয়াত নাজিলের পূর্বে মুসলিমগণ ফরজ হিসেবে হজ আদায় করেননি। তাই হজ ফরজ হিসেবে আদায় করার মাধ্যমে দ্বীনে ইসলামের পাঁচটি ভিত্তি মজবুত ভাবে প্রতিষ্ঠিত হল।  লাতায়েফুল মাআরেফ : ইবনে রজব, পৃ-৪৮৬

 

আরাফাতের এই দিনে মহান আল্লাহ স্বীয় বান্দাদের জন্য তাঁর অনুগ্রহের দ্বার খুলে দেন।

ফেরেশতাদের নিকট বান্দাদের আনুগত্য ও নিজের গৌরব প্রকাশ করেন।

এই দিনে বেশী সংখ্যক লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করেন।

 

আয়িশাহ রা.থেকে বর্ণিত, রাসূল . বলেছেন বৎসরে এমন কোন দিন নেই যে, আল্লাহ আরাফার দিবস অপেক্ষা অধিক সংখ্যায় স্বী বান্দাদেরকে জাহান্নাম হতে মুক্ত করেন এবং তিনি সেদিন বান্দাদের অতি নিকটবর্তী হন তারপর ফেরেশতাদের নিকট গৌ প্রকাশ করে বলেন, আমার বান্দাগণ কি চায়? সহীহ মুসলিম

  ইমাম নবভী রহ. বলেন, এ হাদিসটি আরাফাহর দিবসের ফজিলতের একটি স্পষ্ট প্রমাণ।

ইবনে আব্দুল বির বলেন, এ দিনে মোমিন বান্দারা ক্ষমাপ্রাপ্ত হন। কেননা, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন গুনাহগারদের নিয়ে ফেরেশতাদের কাছে গর্ব করেন না। তবে তওবা করার মাধ্যমে ক্ষমা-প্রাপ্তির পরই তা সম্ভব।

হাদিসে আরো এসেছে: আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত যে রাসূলে কারীম স. বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আরাফাতে অবস্থানকারীদের নিয়ে আসমানের অধিবাসীদের কাছে গর্ব করেন। বলেন, আমার এ সকল বান্দাদের দিকে চেয়ে দেখ ! তারা এলোমেলো কেশ ও ধুলোয় ধূসরিত হয়ে আমার কাছে এসেছে।    আহমদ ও হাকেম, হাদিসটি সহিহ

এই স্থানে আল্লাহতা’আলার যিকর, হাত তুলে কান্না কাটি করে দোআ করা নিজের জন্য, পিতা মাতা, পুত্র কন্যা, আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু বান্ধব সবার জন্য। নিজেদের সর্বপ্রকার পাপ এবং ভুল-ত্রুটি হতে তওবাহ ইসতিগফারের মাধ্যমে শয়তানকে হেয় ও উদ্বিগ্ন করে তোলা। সূর্যাস্ত পূর্ব পর্যন্ত এইভাবে আল্লাহর কাছে ধর্ণা দিতে হবে। সূর্যাস্তের পর মুযদালিফার দিকে রওয়ানা দিতে হবে। এই সময় বেশী করে তালবিয়া পড়তে হবে যেহেতু রাসূল স. করেছেন।

এছাড়া লাব্বাইকা উচ্চারণ সহ কুর’আনের তিলাওয়াত করাও উত্তম।

এই আরাফাতে অবস্থানই হজ্জের মূল কাজ রাসূল স. বলেছেন-

শ্রেষ্ঠ দোআ হচ্ছে এই দিবসের দোআ। আমি এবং নবীগণ কর্তৃক উচ্চারিত শ্রেষ্ঠতম কথা হচ্ছে: লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ইউহয়ী ওয়া ইয়ূমীতু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর।   সহীহ আল বুখারী, মুসলিম

শ্রেষ্ঠ দোআটি বেশী বেশী পড়া সুন্নাত, এর অর্থ হলো-

আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। সমস্ত রাজত্ব একমাত্র তাঁরই অধিকারভুক্ত। সমস্ত প্রশংসা একমাত্র তাঁর প্রাপ্য। তিনিই জীবিত করেন, তিনি মৃত্যু প্রদান করেন। আর তিনি সব বস্তুর উপর সর্বশক্তিমান।

তাছাড়া নীচের দোয়াটি আরো বেশী বেশী পড়া উত্তম :

لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَه

لاَ شَرِيكَ لَه

لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

এছাড়া নীচের তাসবীহটি বেশী বেশী পড়বেন।

سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِه

ৃ وَسُبْحَانَ اللهِ الْعَظِ

রাসূল স. বলেছেন-

আল্লাহর নিকট চারটি কালাম সর্বাধিক প্রিয়, তা হচ্ছে সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এবং আল্লাহু আকবার

দোআগুলো অন্তরে ভয়-ভীতি এবং নরম দিলে খুব বেশী করে মনোযোগ সহকারে পাঠ করতে হবে। রাসূল স. দোআগুলো তিনবার করে পড়তেন।

 

বিদায় হজ্জের ভাষণ

মহানবী স: হিজরী দশ সালে হজ্জ পালন করেন। এটাই ছিল তাঁর জীবনের শেষ হজ্জ। ইসলামের ইতিহাসে এটি বিদায় হজ্জ হিসাবে খ্যাত। সেইবার ৯ই জিলহজ্জ, শুক্রবার দুপুরের পর আরাফাত ময়দানে সমবেত লাখো সাহাবীর উদ্দেশ্যে মহানবী স: এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। আজ তাঁর সারা জীবনের শ্রম ও ত্যাগ-তিতিক্ষার ফলে মহান আল্লাহর সাহায্যে পরিপূর্ণ ভাবে দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিতরুপে দাঁড় করাতে পেরেছেন। রাসূল স. দুটো ভাষণ দিয়েছিলেন।

১মটি – ৯ই যিলহজ্জ, আরাফাতের পাহাড়ের ওপর থেকে।

২য়টি- ১০ই যিলহজ্জ, মিনায়।

আরাফাতের ভাষণ:

উম্মতের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত তাঁর এ ভাষণে স্থান পেয়েছে স্থায়ী রিসালাতকে পৃথককারী বিশাল প্রমাণস্বরূপ সাধারণ নীতিমালা এবং ব্যবস্থাপনা জ্ঞানের ভিত্তিসমূহ। কোনো মাইক বা প্রচার মাধ্যম ছাড়াই এ বিশাল গণজমায়েত তাঁর বক্তব্য শ্রবণ করেছে। এ খুতবায় ছিল আকীদাগত, পদ্ধতিগত ও আচরণগত অনেক বিষয়, যেগুলো মৌলিক নির্দেশনার পর্যায়ে পরে। এতে সন্নিবেশিত হয়েছে ইসলামের নীতিমালা। ধ্বংস হয়েছে শিরকের প্রাসাদ।

পরম করুনাময় আল্লাহ তা’য়ালার প্রশংসার পর মহানবী স: ইরশাদ করেন :

“আল্লাহ্ ছাড়া আর কোন মা’বুদ নাই। তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই।

আল্লাহ্ তাঁর ওয়াদা পূর্ণ করেছেন। তিনি তাঁর বান্দাকে সাহায্য করছেন। আর তিনিই একাই বাতিল শক্তিগুলো পরাভূত করেছেন।

হে আল্লাহর বান্দাগণ! আমি তোমাদের আল্লাহর ‘ইবাদত’ ও তাঁর বন্দেগীর ওসীয়ত এবং এর নির্দেশ দিচ্ছি।

হে লোকসকল! তোমরা আমার কথা শোন। এরপর এই স্হানে তোমাদের সাথে আর একত্রিত হতে পারব কি না জানি না।

হে লোকসকল! আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেছেন, হে মানব জাতি! তোমাদেরকে আমি একজন পুরুষ ও একজন নারী হইতে পয়দা করেছি এবং তোমাদেরকে সমাজ ও গোত্রে ভাগ করে দিয়েছি যেন তোমরা পরস্পরের পরিচয় জানতে পার। তোমাদের মধ্য সেই ব্যাক্তি আল্লাহর দরবারে অধিকতর সন্মান ও মর্যাদার অধিকারী, যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়া অবলম্বন করে, সকল বিষয়ে আল্লাহর কথা অধিক খেয়াল রাখে। ইসলামে জাতি, শ্রেণীভেদ ও বর্ণ বৈষম্য নেই। আরবের উপর কোন আজমের, আজমের উপর আরবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই। তেমনি সাদার উপর কালোর বা কালোর উপর সাদার শ্রেষ্ঠত্ব নেই। মর্যাদার ভিত্তি হল কেবল তাক্ওয়া।

আল্লাহর ঘরের হেফাযত, সংরক্ষণ ও হাজ্জীগণের পানি পান করার ব্যবস্থা পূর্বের ন্যায় এখনও বহাল থাকবে।

হে কুরাইশ সম্প্রদায়ের লোকগণ! তোমরা দুনিয়ার বোঝা নিজের ঘাড়ে চাপিয়ে যেন আল্লাহর সামনে হাজির না হও। আমি আল্লাহর বিরুদ্ধে তোমাদের কোন উপকারই করতে পারব না।

শুনে রাখ, সকল জাহিলী বিষয় ও প্রথা আজ আমার পায়ের নিচে। জাহেলী যুগের রক্তের দাবী রহিত করা হল। সর্বপ্রথম আমি আমার কাবীলার রক্তের অর্থাৎ রবী’আ ইবনুল হারিসের পুত্রের রক্তের দাবি রহিত ঘোষনা করছি। বনু সা’দ গোত্রে থাকাকালে হুযাইলীরা তাকে হত্যা করেছিল।

জাহিলী যুগের সুদও রহিত করা হল। সর্বপ্রথম আমি আমার কবীলার দাবী অর্থাৎ চাচা আব্বাসের সুদ মাফ করে দিলাম। সুতরাং সকল সুদ আজ রহিত করা হল।

হে লোকসকল! তোমাদের রক্ত, তোমাদের ইজ্জত, তোমাদের সম্পদ পরপস্পরের জন্য চিরস্থায়ীভাবে হারাম করা হল, যেমন আজকের এই দিনে, আজকের এই মাস, তোমাদের এই শহর সকলের জন্য হারাম (পবিত্র ও নিরাপদ)। তোমরা শীঘ্রই আল্লাহর দরবারে হাজির হবে। তিনি তোমাদের সকলকেই তোমাদের আমল সম্পর্ক জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।

জেনে রাখো, অপরাধীর দায়িত্ব কেবল তার ঘাড়েই বর্তায়। পিতা তার পুত্রের জন্য এবং পুত্র তার পিতার অপরাধের জন্য দায়ী নয়।

হে লোকসকল! নারীদের সম্পর্কে আমি তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছি। এদের প্রতি নির্মম ব্যবহার করার সময় আল্লাহর দন্ড সম্পর্কে নির্ভয় হয়ো না। নিশ্চয়ই তাদের তোমরা আল্লাহর জামিনে গ্রহন করেছ এবং তাঁরই বাক্যের মাধ্যমে তাদের সাথে তোমাদের দাম্পত্য সম্পর্ক হয়েছে। জেনে রাখ, তাদের উপর যেমন তোমাদের অধিকার রয়েছে, তেমনি তোমাদের প্রতি তাদেরও আধিকার রয়েছে। সুতরাং তাদের কল্যাণ সাধনের বিষয়ে তোমরা আমার নসীহত গ্রহণ কর।

তোমরা তোমাদের অধীনস্থদের সম্পর্কেও সতর্ক হও। নিজেরা যা খাবে, তাদেরও তা খাওযাবে; নিজেরা যা পড়বে, তাদেরও তা পড়াবে।

হে লোকসকল! শুনে রাখ, মুসলমানরা পরস্পর ভাই। সাবধান! আমার পরে তোমরা একজন আরেকজনকে হত্যা করার মত কুফরী কাজে লিপ্ত হয়োনা। হে লোকসকল! আল্লাহ্ প্রত্যেককেই তার যথাযথ অধিকার দিয়েছেন। সুতরাং উওরাধিকারীর জন্য কোনরূপ ওসীয়ত কার্যকর হবে না।

সন্তান হল বিবাহিত দম্পতির। ব্যাভিচারীর সন্তানের অধিকার নেই। আর সকল হিসাব নিকাশ আল্লাহর উপর ন্যস্ত। যে ব্যক্তি নিজের পিতার স্থলে অপরকে পিতা বলে পরিচয় দেয়, নিজের মওলা বা অভিভাবক বলে পরিচয় দেয়, তার উপর আল্লাহর লা’নত।

ঋণ অবশ্যই ফেরত দিতে হবে। প্রত্যেক আমানত তার হকদারের নিকট আবশ্যই আদায় করে দিতে হবে। কারো সম্পত্তি সে যদি স্বেচ্ছায় না দেয়, তবে তা অপর কারো জন্য হালাল নয়। সুতরাং তোমরা একজন অপরজনের উপর জুলুম করবেনা। এমনিভাবে কোন স্ত্রীর জন্য তার স্বামীর সম্পত্তির কোন কিছু তার সম্মতি ব্যতিরেকে কাউকে দেওয়া হালাল নয়।

যদি কোন নাক-কান কাটা হাবশী দাসকেও তোমাদের আমীর বানিয়ে দেওয়া হয় তবে সে যতদিন আল্লাহর কিতাব অনুসারে তোমাদেরকে পরিচালিত করবে, ততদিন অবশ্যই তার কথা মানবে, তার প্রতি অনুগত্য প্রদর্শন করবে।

শোন, তোমরা তোমাদের প্রভুর ইবাদত করবে। পাঁচ ওয়াক্ত সালাত যথারীতি আদায় করবে, রামাদানে সাওম পালন করবে, স্বেচ্ছায় ও খুশী মনে তোমাদের সম্পদের যাকাত দেবে, তোমাদের রবের ঘর বায়তুল্লাহর হজ্জ পালন করবে আর আমীরের ইতা’আত করবে; তাহলে তোমরা জান্নাতে দাখিল হতে পারবে।

হে লোকসকল! আমার পর আর কোন নবী নেই, আর তোমাদের পর আর কোন উম্মত ও নেই।

আমি তোমাদের নিকট দুটো জিনিস রেখে যাচ্ছি। যতদিন তোমরা এ দুটোকে আঁকড়ে থাকবে, ততদিন তোমরা গুমরাহ হবে না। সে দুটো হল আল্লাহর কিতাব ও রাসূলের সুন্নাত।

তোমরা দ্বীনের ব্যপারে বাড়াবাড়ি থেকে বিরত থাকবে কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা দ্বীনের ব্যপারে এই বাড়াবাড়ির দরুন ধ্বংস হয়েছে।

এই ভূমিতে আবার শয়তানের পূজা হবে- এ বিষয়ে শয়তান নিরাশ হয়ে গেছে। কিন্তু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়ে তোমরা তার অনুসরণে লিপ্ত হয়ে পড়বে। এতে সে সন্তুষ্ট হবে। সুতরাং তোমাদের দ্বীনের বিষয়ে শয়তান থেকে সাবধান থেকো।

শোন, তোমরা যারা উপস্থিত আছ, যারা উপস্থিত নেই তাদের কাছে আমার পয়গাম পৌঁছে দিও। অনেক সময় দেখা যায়, যার কাছে পৌঁছানো হয় সে পৌঁছানেওয়ালার তুলনায় অধিক সংরক্ষনকারী হয়।

তোমাদেরকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। তখন তোমরা কি বলবে?”

সমবেত সকলে সমস্বরে উত্তর দিলেন: “আমরা সাক্ষ্য দেব, আপনি নিশ্চয় আপনার উপর অর্পিত আমানত আদায় করেছেন, রিসালতের দায়িত্ব যথাযথ আঞ্জাম দিয়েছেন এবং সকলকে নসীহত করেছেন”।

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আকাশের দিকে পবিত্র শাহাদাত অংগুলী তুলে আবার নিচে মানুষের দিকে নামালেন।

“হে আল্লাহ্ ! তুমি সাক্ষী থাক। হে আল্লাহ্ ! তুমি সাক্ষী থাক”।