আইয়ামে তাশরীকের প্রথম দুই দিন অর্থাৎ ১১ ও ১২ই যিলহজ্জে কঙ্কর মারা হজ্জের ওয়াজিব সমূহের মাঝে অন্তর্ভূক্ত। মীনায় এই দুই রাত্রিযাপন করাও ওয়াজিব।
দুই দিবসে কঙ্কর মেরে মীনা থেকে তাড়াতাড়ি মক্কায় প্রত্যাবর্তন যারা করবেন তাদের জন্য সূর্যাস্তের পূর্বেই বের হয়ে আসতে হবে। যিনি দেরী করবেন ৩য় রাত মীনাতে থেকে ৩য় দিবসে কঙ্কর মেরে তারপর মক্কায় আসলে উত্তম কাজ হবে, অধিক সওয়াব পাবেন।
মীনায় তিনদিন তিনরাত অবস্থান করে প্রতিদিনই সূর্য ঢলার পর তিন জামরাতেই কঙ্কর মারবে। এইক্ষেত্রে লক্ষনীয় যে কঙ্কর মারার তারতীব রক্ষা করা ওয়াজিব।
জামরা উলা (প্রথম)-মসজিদে খায়েফের সন্নিকটে। প্রতি কঙ্কর নিক্ষেপের সময় হাত উত্তোলন করতে হবে। একের পর এক ৭টি নিক্ষেপ করবে, এরপর কিছুটা পিছিয়ে এসে জামরাকে বামে রেখে কিবলামুখী হয়ে দুহাত তুলে আল্লাহর নিকট দোয়া করবে।
২য় জামরা—প্রথমবারের মতই নিক্ষেপ করবে, তবে নিক্ষেপের পর কিছুটা সম্মুখের দিকে সরে যাবে এবং জামরাকে ডানে রেখে কিবলাকে সম্মুখে রেখে হাত উঠিয়ে দোয়া করবে।
৩য় জামরা– এখানে কঙ্কর নিক্ষেপের পর সেখানে আর দাঁড়াবে না এবং দোয়াও পাঠ করবে না। কঙ্কর মেরেই চলে আসবে।
যদি এক বা একাধিক কংকর কম নিক্ষেপ করে থাকে তবে তার প্রতিটি কংকরের জন্য অর্ধেক সা’আ (অর্থাৎ এক কেজি বিশ গ্রাম) পরিমাণ গম, খেজুর বা ভুট্টা দান করতে হবে। আর ঘাটতি কংকরের সংখ্যা ৩ এর অধিক হলে দম দিতে হবে।
যে ধরনের হাজীদের পক্ষে বদলী পাথর নিক্ষেপ জায়েয তারা হলেন দুর্বল, রোগী, অতি বৃদ্ধ ও শিশুদের জন্য।
যে শর্তে বদলী কংকর নিক্ষেপ জায়েয সেই ক্ষেত্র হলো–
(১) যিনি বদলী মারবেন তিনি একই বছরের হাজী হতে হবে।
(২) যার পরিবর্তে বদলী মারবেন তিনি অবশ্যই অক্ষম ব্যক্তি হতে হবে।
(৩) প্রথমে হাজী নিজের পাথর মারবেন, এরপর অক্ষম ব্যক্তির কংকর মারবেন।
আমাদের মাঝে এই ‘জামারাগুলোকে’ শয়তান অর্থে ব্যবহারের একটা প্রচলন আছে। অর্থাৎ বড় শয়তান, মধ্যম শয়তান ও ছোট শয়তান বলা হয়, এরূপ নামকরণ ঠিক নয়। এ ৩টি জামারা শয়তানের প্রতিভূ বা চিহ্ন নয়। এগুলোকে পাথর নিক্ষেপ করলে শয়তানকে পাথর মারা হয়, এ কথাও ঠিক নয়। এটা একটা ভুল ধারণা ও বিভ্রান্ত আকীদা-বিশ্বাস। একটা ভুল অনুভূতি নিয়ে জামারাগুলোকে কংকর নিক্ষেপের ক্ষেত্রে মানুষের ভাবাবেগের পরিবর্তন হয়ে যায়, বাড়াবাড়ি করে ফেলে। ফলে নানা অঘটনও ঘটে যায়। আসুন আমরা ভুল আকীদা পরিহার করি।