সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
এক :
মালেকী,শাফেয়ী ও হাম্বলী মাজহাবের জমহুর (অধিকাংশ) আলেমের মতানুযায়ী অর্থদানের মাধ্যমে রোযার ফিদিয়া আদায় যথেষ্ট নয়। বরং ওয়াজিব হল খাদ্যদানের মাধ্যমে রোযার ফিদিয়া আদায় করা। যেহেতু আল্লাহ তাআলা বলেছেন: “আর যাদের জন্য তা (সিয়াম পালন) কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদিয়া তথা একজন দরিদ্রকে খাবার প্রদান করা।”[সূরা বাক্বারাহ, ২ :১৮৪] ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা এ আয়াতের তাফসিরে বলেছেন: “আয়াতে উদ্দেশ্য হচ্ছে- অশীতিপর বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা যারা রোযা পালনে অক্ষম। তাঁরা উভয়ে প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীন খাওয়াবেন।” [এটি বর্ণনা করেছেন ইমাম বুখারি (৪৫০৫)]
‘ফাতাওয়াল লাজনাদ্ দায়িমা (১০/১৯৮) তে এসেছে: “যখন ডাক্তারগণ এই সিদ্ধান্ত দেন যে আক্রান্ত রোগের কারণে আপনি রোযা পালন করতে পারবেন না এবং এ রোগ থেকে সুস্থতাও আশা করা যায় না তখন আপনাকে বিগত ও আগত মাসগুলোর প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকীন খাওয়াতে হবে, যার পরিমাণ হল দেশীয় খাদ্যদ্রব্য যেমন খেজুর বা অন্য কোন খাদ্যের অর্ধ স্বা’। আপনি যদি ছুটে যাওয়া দিনগুলোর সম সংখ্যক দিন একজন মিসকীনকে রাতের বা দুপুরের খাবার খাইয়ে থাকেন তবে তা যথেষ্ট হবে। কিন্তু অর্থদানের মাধ্যমে ফিদিয়া দিলে সেটা যথেষ্ট হবে না।” সমাপ্ত।
অতএব বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তি অথবা এমন রোগী যার সুস্থতা আশা করা যায় না তারা প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকীন খাওয়াবেন। এর পরিমাণ স্থানীয় খাদ্যদ্রব্য যেমন গম, খেজুর, অথবা চাল ইত্যাদি এর অর্ধ স্বা’। অর্ধ স্বা প্রায় ১.৫ কিঃগ্রাঃ এর সমান। [দেখুন- ফাতাওয়া রমজান, পৃষ্ঠা- ৫৪৫]
তিনি চাইলে পুরো মাসের ফিদিয়া মাস শেষে একসাথেও আদায় করতে পারেন। যেমন ধরুন একমাসের ফিদিয়া হবে- ৪৫ কিলোগ্রাম চাল। তিনি যদি রান্নাবান্নার ব্যবস্থা করে মিসকীনদেরকে দাওয়াত করে খাওয়ান সেটা আরো ভাল। কারণ আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু এমনটি করতেন।
দুই: আপনারা যদি কোন আলেমের ফতোয়ার উপর ভিত্তি করে অর্থের দ্বারা ফিদিয়া আদায় করে থাকেন তবে এ ফিদিয়া পুনরায় আদায় করতে হবে না। আর যদি আপনারা কাউকে জিজ্ঞেস না করে নিজেরাই তা করে থাকেন তবে সে ক্ষেত্রে ওয়াজিব হবে পুনরায় খাদ্যের মাধ্যমে ফিদিয়া আদায় করা। এটি অধিকতর সতকর্তা অবলম্বিত ফতোয়া এবং আপনাদের বাবার দায়মুক্তির ক্ষেত্রে অধিক নিরাপদ। আল্লাহ্ আপনাদের বাবাকে রহম করুন ও তাঁকে ক্ষমা করে দিন।
আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন।