আয়েশা রা. একটি ছোট বালিশ ক্রয় করেছিলেন। তাতে ছবি আকা ছিল। ঘরে প্রবেশের সময় রাসূল সা. এর দৃষ্টি এতে পতিত হলে তিনি আর ঘরে প্রবেশ করলেন না। আয়েশা রা. তার মুখ মন্ডল দেখেই তা বুঝতে পারলেন। তিনি বললেন: আমি আল্লাহ ও তার রাসূলের নিকট তওবা করছি। আমি কি গুনাহ করেছি? রাসূল সা. জিজ্ঞেস করলেন: এই ছোট বালিশটি কোথায় পেলে? তিনি বললেন: আমি এটা এ জন্য খরিদ করেছি যাতে আপনি এতে হেলান দিয়ে বিশ্রাম করতে পারেন। তখন রাসূল সা. বললেন: যারা এই সমস্ত ছবি অংকন করেছে কিয়ামতের মাঠে তাদেরকে আযাব দেয়া হবে। তাদের বলা হবে: তোমরা যাদের সৃষ্টি করেছিলে. তাদের জীবিত কর। অত:পর তিনি বললেন: যে ঘরে ছবি আছে সে ঘরে মালাইকাগণ প্রবেশ করেন না।
(বুখারী ও মুসলিমের মিলিত হাদীস)
তিনি আরো বলেছেন:
কিয়ামতের মাঠে ঐ সমস্ত লোকেরা (যারা ছবি আঁকে তারা আল্লাহর সৃষ্টির মতই কিছু করতে উদ্যত হয়।)সবচেয়ে বেশী আযাব ভোগ করবে যারা আল্লাহর সৃষ্টির মত সৃষ্টি করে। (বুখারী ও মুসলিমের মিলিত হাদীস)
বুখারী শরীফে বর্ণিত আছে:
أরাসূল সা. কোন ঘরে ছবি দেখলে, তা সরিয়ে না ফেলা পর্যন্ত ঐ ঘরে প্রবেশ করতেন না। (বুখারী)
রাসূল সা. বাড়ীতে ছবি ঝুলাতে নিষেধ করেছেন আর অন্যদের উহা আঁকতে কিংবা তোলতে নিষেধ করেছেন। (তিরমিযী)
গাছপালা, চন্দ্র, তারকা, পাহাড় পর্বত, পাথর, সাগর, নদনদী, সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য, পবিত্র স্থানের ছবি যেমন কাবাঘর মদীনা শরীফ, বাইতুল মোকাদ্দাস, বা অন্যান্য মসজিদের ছবি, যা কোন মানুষ বা প্রাণী নয় তার ছবি উঠানো কিংবা ভাস্কর বানানো জায়েয।
দলীল: এ সম্বন্ধে ইবনে আব্বাস রা. বলেন:
যদি তোমাকে ছবি বা মূর্তি বানাতেই হয়, তবে কোন বৃক্ষ বা এমন জিনিসের ছবি আঁক যাদের জীবন নেই।
পরিচয় পত্র, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা এ জাতীয় কাজে এটা জায়েয অতিশয় প্রয়োজনের খাতিরে।
হত্যাকারী বা অপরাধীদের ছবি তোলা জায়েয, যাতে করে তাদের ধরে শাস্তির ব্যবস্থা করা যায়। সেইরকম বিজ্ঞানের প্রয়োজনে যা তোলা হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ছবি, যে সস্বন্ধে কিছু উলামা জায়েযের ফতোয়া দিয়েছেন।
যেই রকম ছোট বাচ্চা মেয়েরা যদি ঘরে বানানো কাপড় দিয়ে পুতুল খেলে তা জায়েয যা পোশাক পরিহিত হবে পাক পরিস্কার হবে, যাতে করে কিভাবে শিশুকে পালন করতে হয় তা বাচ্চারা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। ফলে, বড় হয়ে মা হলে তা তাদের উপকারে আসবে।
দলিল: আয়েশা রা. বলেন:
আমি রাসূলের সা. নিকট আমার পুতুল মেয়ে নিয়ে খেলা করতাম। (বুখারী)
তবে বাচ্চাদের জন্য বিদেশী কোন পুতুল খরিদ করা জায়েয নেই। বিশেষ করে ঐ সমস্ত পুতুল যা নগ্ন কিংবা বেপর্দা অবস্থায় আছে। যদি এটা দ্বারা বাচ্চারা খেলাধূলা করে তবে তা থেকে তারা অনুকরণ করে সেই মত চলতে তারা উদ্যাগী হবে। আর এভাবেই সমাজকে নষ্ট করে দিবে। অধিকন্ত এই টাকা পয়সা কাফিরদের দেশে ও ইয়াহুদীদের নিকট পৌঁছবে।
ছবির মাথা যদি কেটে দেয়া হয়. তবে তা ব্যবহার করার অনুমতি আছে। কারণ, ছবির মূল হল মাথা। তাই যদি ছেদ করে দেয়া হয় তবে আর রুহ থাকল না। তখন তা জড় পদার্থের পর্যায়ে পড়ে।
এ সম্বন্ধে জিবরাইল আ. রাসূলকে সা. বলেন:
আপনি মূর্তির মাথা কেটে দিতে বলেন, ফলে উহা গাছের মত কিছু একটাতে পরিবর্তিত হবে। আর পর্দার কাপড়কে দুটুকরা করে তা দ্বারা দুটি বালিশ বানাতে বলেন। (আবু দাউদ)