কৃ্ত্রিম চুল ও আইলেশ লাগানো কি জায়েয?

ইসলামে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য পরচুলা ব্যবহার নিষিদ্ধ ।
পরচুলা ব্যবহারকারীর উপর আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের লা’নতঃ
 ইবন আবু শাইবাহ (রহঃ) আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ ‘’আল্লাহ তায়ালা লা’নত করেন সে সব নারীদেরকে যারা নিজে পরচুলা লাগায় এবং যারা অন্যদেরকে তা লাগিয়ে দেয়, আর যারা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে উল্কি আঁকে এবং অন্যকে এঁকে দেয়’’ বুখারী ৫৯৩৩
 আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত।। তিনি বলেন কোনো এক আনসারী মহিলা তার মেয়েকে বিয়ে দিলেন। কিন্তু তার মাথার চুলগুলো উঠে যেতে লাগলো। এরপর সে নবী (সাঃ)-এর নিকট এসে এ ঘটনা বর্ণনা করে বলল, তার স্বামী আমাকে বলেছে যে, আমি যেন আমার মেয়ের মাথায় কৃত্রিম চুল লাগিয়ে দেই। তখন নবী (সাঃ) বললেনঃ না, তা করো না। কারন, আল্লাহ তায়ালা এ ধরনের মহিলাদের উপর লা’নত বর্ষণ করেন, যারা মাথায় কৃত্রিম চুল পরিধান করে’’ বুখারী ৫২০৫
আসমা বিনতে আবু বকর (রাঃ) হতে বর্ণিত। এক মহিলা নবী (সাঃ)-কে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার এক মেয়ের বসন্ত রোগ হয়ে মাথার চুল পড়ে গেছে। আমি তাকে বিয়ে দিয়েছি। তার মাথায় কি পরচুলা লাগাব? নবী (সাঃ) বললেনঃ ‘’যে পরচুলা লাগিয়ে দেয় ও পরচুলা লাগিয়ে নেয় এমন নারীর উপর আল্লাহ অভিশাপ দিয়েছেন’’ ৫৯৪১; মুসলিম ৫৪৫৮-(১১৫/২১২২)
 
 ইবন উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘’আল্লাহ ঐ নারীর উপর লা’নত করেছেন, যে পরচুলা লাগায় আর অপরকে পরচুলা লাগিয়ে দেয়। আর যে নারী উল্কি অঙ্কন করে এবং যে তা করায় (তাদেরকেও লা’নত করেছেন)’’ বুখারী ৫৯৩৭
আবদুল্লাহ ইবন উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ ‘’উল্কি অঙ্কনকারী, পরচুলা ব্যবহারকারী, পরচুলা লাগানোর পেশাধারী নারীকে নবী (সাঃ) লা’নত করেছেন’’ বুখারী ৫৯৪২
 আসমা বিনতে আবু বকর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে মহিলা পরচুলা লাগায়, আর যে অপরকে পরচুলা লাগিয়ে দেয়, নবী (সাঃ) তাদের লা’নত করেছেন’’ বুখারী ৫৯৩৬
 
ইবন উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ‘’পরচুলা লাগিয়ে দেয়ার পেশাধারী নারী, যে নিজের মাথায় পরচুলা লাগায়, উল্কি অঙ্কনকারী নারী এবং যে অঙ্কন করে- আল্লাহর নবী (সাঃ) তাদের লা’নত করেছেন’’ বুখারী ৫৯৪০
পরচুলা ব্যবহার মিথ্যা ও প্রতারনা এবং ইয়াহুদী রীতি। বনী ইসরাইলগণ এই অভিশপ্ত রীতির কারনেই ধংসপ্রাপ্ত হয়েছেঃ
 হুমাইদ ইবন আবদুর রহমান ইবন আওফ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি মুয়াবিয়া ইবন আবু সুফিয়ান (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন যে, তাঁর হজ্জ পালনের বছর মিম্মরে নববীতে উপবিষ্ট অবস্থায় তাঁর দেহরক্ষীদের কাছ থেকে মহিলাদের একগুচ্ছ চুল নিজ হাতে নিয়ে তিনি বলেন, হে মদীনাবাসি! কোথায় তোমাদের আলিম সমাজ? আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-কে এরকম পরচুলা ব্যবহার করতে নিষেধ করতে শুনেছি। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ ‘’বনী ইসরাইল তখনই ধ্বংস হয়েছে, যখন তাদের নারীরা এরুপ পরচুলা ব্যবহার করতে শুরু করে’’ বুখারী ৩৪৬৮, ৫৯৩২; মুসলিম ৫৪৭১-(১২২/২১২৭) অন্য বর্ণনায় আছেঃ এ কারনে বনী ইসরাইল সাজাপ্রাপ্ত হয়েছে’’ মুসলিম ৫৪৭২
 সাঈদ ইবন মুসাইয়েব (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুয়াবিয়া (রাঃ) যখন শেষবারের মতো মদীনায় আসেন, তখন তিনি আমাদের সামনে খুৎবা দেন। তিনি এক গোছা চুল বের করে বললে,। আমি ইয়াহুদী ছাড়া অন্য কাউকে এ জিনিস ব্যবহার করতে দেখিনি। নবী (সাঃ) এঁকে অর্থাৎ পরচুলা ব্যবহারক করাকে প্রতারনা বলেছেন’’ বুখারী ৩৪৮৮, ৫৯৩৮
 মুয়াবিয়া (রাঃ) একদিন বললেন, তোমরা একটি নিকৃষ্ট বেশভূষা তৈরি করেছ। অথচ নবী (সাঃ) মিথ্যা বলতে নিষেধ করেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, সে সময় একজন লোক একটি লাঠি নিয়ে আসলো যার মাথায় একটি কৃত্রিম চুলের খোপা ছিল। মুয়াবিয়া (রাঃ) বললেন, দেখো! এটাই মিথ্যা ও অলীক। বর্ণনাকারী কাতাদাহ (রহঃ) বলেন, অর্থাৎ মেয়েরা তাদের চুলের পরিমান যেসব গোছা দিয়ে বাড়িয়ে দেখায়’’ মুসলিম ৫৪৭৪