বিসমিল্লাহির রহমানীর রহিম
একজন কুরআনের হাফেয তার পরিবারের মধ্য থেকে জাহান্নাম অবধারিত হয়ে গেছে এমন ১০জন ব্যক্তিকে শুপারিশ করার হাদিসটি সহীহ নয়।
নিম্নে এ হাদিসটির মূল আরবী টেক্সট, তরজমা, উৎস এবং মুহাদ্দিসদের বক্তব্য তুলে ধরা হল:
আলী ইবনে আবি তালিব রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
من قرأ القرآن وتلاه وحفظه أدخله الله الجنة وشفعه في عشرة من أهل بيته كل قد وجبت له النار
“যে ব্যক্তি কোরআন পাঠ করল, তিলাওয়াত করলো এবং মুখস্থ করল আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন এবং তাকে তার বংশধর হতে এমন দশজনকে সুপারিশ করার সুযোগ দান করবেন যাদের উপর জাহান্নাম অবধারিত হয়ে গিয়েছিল।”
(তিরমীজি খণ্ড ২ হাদিস ১১৪, এ হাদিসটি সম্পর্কে আবু ‘ঈসা তিরমিযী রহ. নিজেই মন্তব্য করে বলেন: “এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা এই সনদ ছাড়া আর কোন সনদ সম্পর্কে জানি না। ইবনে মাজাহ হাদিস ২১৬-মুহাদ্দিসগণের গবেষণায় উক্ত হাদিসটি যঈফ।
এই হাদিসের সনদ সম্পর্কে মুহাদ্দিসদের মন্তব্য দেয়া হল (আরবী):
وفيه كثير بن زاذان قال ابن معين : (( لا أعرفه )) ، وقال الإمامان الرازيان : (( هذا شيخ مجهول لا نعلم احد احدث عنه )) ، قال الحافظ الذهبي في الكاشف : (( لا يثبت حديثه )) ، وقد أعل الحَافظ الذهبي حَديثاً في السير (13/306) : (( قَالَ رَسُوْلُ اللهِ -صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ-: (قَالَ لِي جِبْرِيْلُ: لَوْ رَأَيْتَنِي يَا مُحَمَّدُ وَأَنَا أَغُطُّهُ بِإِحْدَى يَدَيَّ، وَأَدُسُّ مِنَ الحَالِ فِي فِيْهِ، مَخَافَةَ أَنْ تُدْرِكَهُ رَحْمَةُ رَبِّهِ فَيَغْفِرُ لَهُ) .حَدِيْثٌ غَرِيْبٌ، وَكَثِيْر فِيْهِ جَهَالَةٌ )) فالحَديث لا يصح لجهالة كثير بن زاذان ، ولهُ عند أبي زرعة وأبي حاتم حديث في فضل القرآن ، قال الترمذي : (( حديث غريب لا نعرفهُ إلا من هذا الوجه )) .
এ হাদিসের সমার্থবোধক আরও দু একটি হাদিস পাওয়া যায় কিন্তু সবগুলোর অবস্থা একই।
✅ কুরআন পাঠকারী ও আমলকারী ব্যক্তির পিতামাতাকে কিয়ামতের দিন নূরের মুকুট পরানোর সহিহ হাদিস:
প্রখ্যাত সাহাবী বুরায়দা রা. হতে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
من قرأ القرآن وتعلَّم وعمل به أُلبس والداه يوم القيامة تاجاً من نور ضوؤه مثل ضوء الشمس ، ويكسى والداه حلتين لا تقوم لهما الدنيا فيقولان : بم كسينا هذا ؟ فيقال : بأخذ ولدكما القرآن ” . رواه الحاكم ( 1 / 756 )
“যে ব্যক্তি কোরআন পড়ে ও এর ওপর আমল করে, তার মাতা-পিতাকে কেয়ামতের দিন এমন একটি করে নূরের মুকুট পরানো হবে, যার জ্যোতি সূর্যের জ্যোতির মত হবে। আর তাদেরকে এমন দুটি পোশাক পরিধান করানো হবে যার মূল্য সারা দুনিয়া ও তার মধ্যে যা কিছু আছে তা থেকেও বেশী।
তখন তারা জিজ্ঞেস করবেন, হে আমার প্রতিপালক, কেন আমাদেরকে এই পোশাক পরিধান করানো হল? বলা হবে: “তোমার সন্তানের কুরআন শিক্ষা ও আমলের কারণে।” (হাকিম, ১/৭৫৬। আলবানী রহ. এ হাদীসটিকে হাসান বলেছেন)
আল্লাহু আলাম।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে কুরআন তিলাওয়াত করার পাশাপাশি তদনুযায়ী আমল করার তাওফিক দান করুন।
আমীন।
- •••••••••••••••••••
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার