আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে যে যখনই কেউ মক্কা বা মদীনায় যান হজ্জ বা উমরাতে তখনই দেখা যায় পরিচিত অপরিচিত অনেকেই তাদের বলেন যে, আমার সালাম নবীজীর স.কাছে পৌছে দিবেন।এটা শরীয়তে নতুন সংযোজন যা গ্রহনযোগ্য নয়।
আবার অনেকে নিজের মৃত বাবা-মার কবরের কাছে অন্য কারো মাধ্যমে সালাম পৌছাতে বলে দেন, এটাও শরীয়া অনুমোদন করে না।
মুহাম্মদ বিন সউদ ইসলামি ইউনিভার্সিটির শিক্ষাবিভাগের সদস্য, শেখ আব্দুর রহমান বিন নাসের আল বাররাক বলেন, মদিনায় সফর কারী ব্যক্তির মাধ্যমে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট সালাম পাঠানোর কোন প্রমাণ নাই। সাহাবায়ে কিরাম, সালাফে সালেহীন, তাবেয়ীন এবং আহলে ইলমদের কারোরই এ অভ্যাস ছিল না। তারা কেউ অপরের মাধ্যমে নবীর উপর সালাম পাঠাতেন না। এবং তাদের কারো হতেই এ ধরনের কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না। কারণ, রাসূল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি উম্মতের দেয়া সালাম ও দরূদ কোন মাধ্যম ছাড়া এমনিতেই পৌঁছানো হয়ে থাকে।
আব্দুল্লাহ বিন মাসদ রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
পৃথিবীতে আল্লাহর কতক ভ্রমণকারী ফেরেশতা রয়েছে, তারা আমার উম্মাতের সালাম আমার নিকট পৌছে দেয়। (নাসায়ী:১২৮২)
শায়খ আলবানি সহিহ তারগিবে(১৬৬৪)হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন।
আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
তোমরা তোমাদের ঘরসমূহকে কবর বানাবে না, আর আমার কবরকে উৎসবের স্থানে পরিণত করবে না। আর আমার উপর দরূদ পাঠ কর, কারণ, তোমাদের সালাত আমার নিকট পৌঁছানো হয়, তোমরা যেখানেই থাকো না কেন। আবু দাউদ(২০৪২);
আল্লামা আলবানি হাদিসটিকে সহিহ আল-জামেতে(৭২২৬) সহিহ বলে মন্তব্য করেছেন।
পৃথিবীতে ভ্রমণকারী আল্লাহর কতক ফেরেশতা রয়েছে, তারা আমার উম্মাতের সালাম আমার নিকট পৌঁছে দেয়। (বর্ণনায়, ইমাম আহমাদ, নাসায়ি ও অন্যান্যরা)
তোমাদের সর্বত্তোম দিন হলো জুমুআর দিন, তাই তোমরা ঐদিনে আমার উপর বেশি বেশি করে দুরূদ পাঠ করবে। কারণ, তোমাদের দুরুদ আমার নিকট পৌঁছানো হয়, তোমরা যেখানেই থাকো না কেন।
তোমরা আমার কবরকে উৎসবের জায়গা বানাবে না এবং নিজেদের ঘরকে কবর বানাবে না। আর তোমরা আমার উপর দরূদ পড়বে, কারণ, তোমাদের দরূদ আমার নিকট পৌঁছানো হয়,তোমরা যেখানেই থাক না কেন?
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি অন্যের মাধ্যমে সালাম পাঠানোর ইবাদতটি সম্পূর্ণ বিদআত। বরং মৃত ব্যক্তির প্রতি সালাম পাঠানোর কোন বিধান শরিয়ত সম্মত নয়। মৃত ব্যক্তির উপর সেই পাঠাবে যে তার কবর যিয়ারত করবে। যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জান্নাতুল বাকী যিয়ারত করতেন, তাদের সালাম দিতেন এবং তাদের জন্য দোয়া করতেন।
মহান আল্লাহ আমাদের সঠিক পথে আমল করার তাওফিক দান করুন।