রাসূল স. স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ও নিরাপত্তার জন্য কয়েকটি নীতি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন।
রাসূল স. বলেছেন, তোমরা নিদ্রা যাবার কালে তৈজসপত্রসমূহ ঢেকে রাখবে। মশকগুলোর মুখ বন্ধ রাখবে, দরজা জানালা বন্ধ রাখবে এবং বাতিগুলো নির্বাপিত করবে। কেননা শয়তান মশকের মুখ ছুটাতে পারে না, বন্ধকৃ্ত দরজা খুলতে পারে না এবং আবৃত পাত্র অনাবৃত করতে পারে না। যদি তোমাদের কেউ পাত্র ঢাকার জন্য কাঠি ছাড়া আর কিছু না পায়, তবে তাই পাত্রের মুখের ওপর রেখে যেন আল্লাহর নাম নেয়। জেনে রাখবে, (চেরাগ বা বাতি জ্বালিয়ে ঘুমালে) ইঁদুর গৃহকর্তার ঘর জ্বালিয়ে দেয়। সহিহ মুসলিম: ৫০৭৮
মদিনার কোন এক ঘরে আগুনে লেগে যাবার ঘটনা শুনে রাসূল স. বলেছেন-
নিশ্চয়ই এই আগুন তোমাদের দুশমন। সুতরাং তোমরা ঘুমানোর পূর্বে আগুন নিভিয়ে দাও। সহিহ আল বুখারি: ৫৮৫০
উপরিউক্ত মূলনীতির প্রতিটি মানুষের রোগ প্রতিরোধ ও নিরাপত্তার জন্য জরুরী পদক্ষেপ।
রাসূল স. বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ শুতে যায় তখন সে যেনো শয্যাটি ঝেড়ে নেয়। কেননা সে জানে না যে তার অবর্তমানে কোন বিষাক্ত প্রাণী বা কীটপতংগ বিছানায় লুকিয়ে আছে কি না। বিছানা ঝেড়ে ফেলার পর দু’আ পড়বে( সহিহ বুখারী হাদীসের ৫৮৭৫ এর কিছু)
রাসূল স. যখনি বিশ্রাম নিতেন তখন তিনি ডান দিকে কাত হয়ে ঘুমাতেন। সহিহ বুখারী: ৫৮৬৯
মানুষের হৃৎপিণ্ড থাকে বাম দিকে আর তাই বাম কাতে শুলে বাম ফুসফুস ও পাকস্থলির ভার হৃৎপিণ্ডের উপর পড়ে যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
আবার উপুড় হয়ে শুলে মানুষের পাকস্থলি, হজমশক্তির উপর বিরুপ প্রভাব ফেলাসহ শ্বাস প্রশ্বাসে ও হৃৎস্পন্ধনে বিঘ্ন সৃষ্টি করে থাকে।
রাসূল স. আরো বলেন, উপুড় হয়ে শোয়া আল্লাহ পছন্দ করেন না। আত তিরমিযী: ২৭০৫
তাহলে দেখুন ইসলাম কত সুন্দর জীবন ব্যবস্থার শিক্ষা কত বছর পুর্বেই দিয়ে রেখেছে যা আজ বিভিন্ন সময়ে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে প্রয়োজন বলে আখ্যায়িত করছে।
এই ভাবে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের প্রতি্টি কাজের কিছু দিক নির্দেশনা রাসূল স. দিয়েছেন যা আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য খুব প্রয়োজন।
খাওয়া দাওয়া, বিশ্রাম, স্বা্মী স্ত্রী মিলন, নারীদের হায়েজ অবস্থায় ও হায়েজের পর করনীয়, অপবিত্র থেকে পবিত্র হওয়ার বিধানসহ অনেক সুন্দর ও প্রয়োজনীয় নীতিমালা ইসলাম দিয়েছে যা এই পৃথিবীকে সুন্দর ভারসাম্য রক্ষায় সাহায্য করে থাকে, আর যা প্রতিটা প্রানীর জন্য উপযোগী। সুবহানাল্লাহ। মহান আল্লাহ কত বড় জ্ঞানের পালনকর্তা যে তাঁর রাসূলের মাধ্যমে এই শিক্ষাগুলো জানিয়ে দিয়েছেন।
বর্তমান সমাজে আধুনিকতার সুবাধে ডিজিটাল যন্ত্রের পরশে এসে মানুষের জীবন যাত্রা পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে কল্যানটুকু নেয়া প্রয়োজন কিন্তু এমন ব্যবহার থেকে দূরে থাকা প্রয়োজন যা মানুষের অকল্যান এনে দিতে পারে। তাই আধুনিক যন্ত্রাদিকে সুন্নাতের অনুসরনে ব্যবহার করে আরো বেশী লাভবান হওয়া যাবে ইন শা আল্লাহ। তাই আমাদের প্রয়োজন ওহীর জ্ঞানকে সঠিকভাবে জেনে আধুনিক জ্ঞানের আলোকে সমণ্বয় করে মানবজীবনের কল্যানের ধারাকে উন্মোচন করা। এর মাধ্যমে মহান আল্লাহর দরবারে আরো বেশী নত হয়ে শুকরিয়া জ্ঞাপন করা।