ইদ্দত পালন বিধবা নারীর জন্য বিশেষ একটি ইবাদাত
স্বামীর সাথে তালাকের মাধ্যমে বিচ্ছেদ হলে বা স্বামীর মৃত্যুর ফলে বিচ্ছেদ হলে, মহান আল্লাহ কিছু সময় নির্ধারন করে, শরীয়ার নীতি নির্ধারন করে দিয়েছেন সেই নারীদের জন্য- যা ইদ্দত পালন নামে অভিহিত।
মূলত মহান আল্লাহর তরফ থেকে এটি নারীর জন্য বিশেষ একটি ইবাদাত যা নারীর সম্মান ও নিরাপত্তাকে সূদৃঢ় করে।
এখানে বিধবা নারীর ইদ্দত পালনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হলো।
স্বামীর মৃত্যুর পর বিধবা নারীর ইদ্দত কয়েক পিরিয়ডে হতে পারে যেমন-
স্বামীর মৃত্যুর পর পরই যদি স্ত্রীর গর্ভের সন্তান প্রসব করে ফেললেই ইদ্দত শেষ হয়ে যাবে। আবার সন্তান গর্ভে থাকলে তা দীর্ঘ হতে পারে ( সন্তান গর্ভে থাকাকালীন পুরু সময় ই ইদ্দত) সেটা ৪মাস ১০ দিনের বেশী হতেই পারে, কারন সন্তান যখন প্রসব করবে তখন সেই বিধবা নারীর ইদ্দত পালন শেষ হবে। আল্লাহ বলেছেন-
“গর্ভবর্তী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। ” সূরা তালাক: ৪
আর যদি নারী গর্ভ ধারন না করা অবস্থায় স্বামী মারা যান সেই বিধবা নারীদের জন্য ৪মাস দশ দিন ইদ্দাত পালন করতে হবে। মহান আল্লাহ জানিয়েছেন–
তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মৃত্যুবরণ করবে, তাদের স্ত্রীদের কর্তব্য হলো চার মাস দশ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করা। অতঃপর যখন ইদ্দত (চার মাস দশ দিন) পূর্ণ করে নেবে, তখন তারা নিজেদের ব্যাপারে বিধিমত ব্যবস্থা নিলে তাতে কোন পাপ নেই। আর তোমরা যা কর, আল্লাহ্ সে সম্পর্কে সবিশেষ অবগত আছেন। সূরা আল বাকারা: ২৩৪
স্বামী বা নিকটাত্মীয়ের মৃত্যুতে মহিলাদের শোক পালন করা:
যাইনাব বিন্ত আবূ সালামাহ (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যাইনাব বিন্ত আবূ সালামাহ (রাঃ) বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর স্ত্রী উম্মু হাবীবাহ’র পিতা আবূ সুফ্ইয়ান ইবনু হার্ব (রাঃ) মারা গেলে আমি তাঁর কাছে হাজির হলাম। উম্মু হাবীবাহ (রাঃ) যা’ফরান ইত্যাদি মিশ্রিত হলদে রং এর খুশবু নিয়ে আসতে বললেন। তিনি এক বালিকাকে এ থেকে কিছু মাখালেন। এরপর তাঁর নিজের চেহারার উভয় দিকে কিছু মাখলেন। এরপর বললেনঃ আল্লাহ্র কসম! খুশবু মাখার কোন দরকার আমার নেই। তবে আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোন নারীর জন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের বেশী শোক পালন করা হালাল হবে না। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুতে চার মাস দশ দিন শোক পালন করবে। সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৩৩৪ হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
আল-কোরআনে স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীদেরকে (ইদ্দত পালনের) চার মাস দশ দিন অপেক্ষা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর তাই নারীর জন্য এই সময়ে এটাই একটি বড় ইবাদাত যে, সে আল্লাহর আনুগত্যে ইদ্দাত পালন করবেন। এটা একটি বিশেষ ইবাদাত।
কার মৃত্যু কখন ঘটবে তা নিশ্চিতভাবে বলা মুশকিল। সুতরাং বিধবাদের ক্ষেত্রে অন্তর্কলহ জনিত বিচ্ছেদ নয়, বরং স্বামীর মৃত্যু জনিত বিরহের কারণে হঠাৎ করে মানসিক চাপ পড়াটাই স্বাভাবিক। তাই বিধবাদের বেলায় ইদ্দত পালনের সময় সীমাকে কিছুটা বাড়িয়ে অবশ্য পালনীয় হিসেবে কমপক্ষে চার মাস দশ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্বামীর মৃত্যুর পরপরই যদি নারী সেজে গুজে ঘরের বাইরে যান, তাহলে স্বামীর আত্মীয় স্বজনেরা বা আশে পাশের লোকেরা সেই নারীর চরিত্রের ব্যপারে প্রশ্ন তুলতে সুযোগ পেয়ে যাবেন বা স্বামী মারা যাওয়াতে খুশি হয়েছে ভেবে দুজনের বিবাহিত জীবনের সম্পর্কের ধরন নিয়ে কথা তোলার সুযোগ পেয়ে যাবে, আবার স্বামীর শোকে যে মানসিক কঠিন অবস্থায় পড়ে যান নারী, সেই অবস্থা কাটিয়ে উঠার জন্য যে সময় ও পরিবেশ প্রয়োজন যা বিধবা নারীকে স্থিতিশীল করে দিতে সহায়ক তা এই ইদ্দত পালনের মাধ্যমেই সম্ভব যা মহান আল্লাহ ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তাহলে এই ইদ্দত পালন নারীর সম্মান ও অবস্থানকে সূদৃঢ় করে।
ইসলামে পিতৃ পরিচয় গোপন করা অপরাধ। তাই এই সময়ের মধ্যে বিধবা নারীটি তার মৃত স্বামী কর্তৃক অন্তঃসত্ত্বা কিনা তা বুঝে নেয়া সম্ভব হয়। তাছাড়া তিনি মানসিক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে সামলে নেয়ার পাশাপাশি নিজের উত্তরাধিকার প্রতিষ্ঠা করারও সুযোগ পান। আসল খবর মহান আল্লাহতায়ালাই ভাল জানেন।
ইদ্দতের এই সময় অতিবাহিত হবার পর বাকি জীবন কিভাবে কাটাবেন সে ব্যাপারে সেই নারীরা বিধি অনুযায়ী সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার রাখেন।
– আবূ সালামাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) তাদের কাছে বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন বিধবা নারীকে তার সম্মতি ব্যতীত বিয়ে দেয়া যাবে না এবং কুমারী মহিলাকে তার অনুমতি ছাড়া বিয়ে দিতে পারবে না। লোকেরা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল! কেমন করে তার অনুমতি নেয়া হবে। তিনি বললেন, তার চুপ থাকাটাই হচ্ছে তার অনুমতি।
সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন: ৫১৩৬/ ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৭৬০
- মুজাহিদ (রহঃ) বর্ণনা করেছেন
মহান আল্লাহ্র বাণীঃ “তোমাদের মধ্যে যারা বিবিদেরকে রেখে মারা যাবে” (সূরাহ আল-বাক্বারা ২:২৪০) তিনি এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, স্বামীর বাড়ীতে অবস্থান করে এ ইদ্দাত পালন করা মহিলার জন্য ওয়াজিব ছিল। পরে মহান আল্লাহ অবতীর্ণ করেনঃ “তোমাদের মধ্যে যারা বিবিদেরকে রেখে মারা যাবে, তারা বিবিদের জন্য অসিয়ত করবে যেন এক বৎসরকাল সুযোগ-সুবিধা পায় এবং গৃহ হতে বের ক’রে দেয়া না হয়, তবে যদি তারা নিজেরাই বের হয়ে যায়, তবে তোমাদের প্রতি গুনাহ নেই তারা নিজেদের ব্যাপারে বৈধভাবে কিছু করলে”। (সূরাহ আল-বাক্বারা ২:২৪০)। মুজাহিদ বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা সাত মাস বিশ রাতকে তার জন্য পূর্ণ বছর সাব্যস্ত করেছেন। মহিলা ইচ্ছা করলে অসিয়ত অনুসারে থাকতে পারে, আবার চাইলে চলেও যেতে পারে। এ কথাই আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ “বের না করে, তবে যদি স্বেচ্ছায় বের হয়ে যায় তবে তাতে তোমাদের কোন পাপ নেই” তাই মহিলার উপর ইদ্দাত পালন করা যথারীতি ওয়াজিব আছে। আবূ নাজীহ এ কথাগুলো মুজাহিদ থেকে বর্ণনা করেছেন।
বিয়ের সময় স্বামীর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত মোহরানা, স্বামীর মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার হিসেবে প্রাপ্ত সম্পত্তি এবং পিতার পক্ষ থেকে প্রাপ্ত যে সম্পদ নারীরা পান তা একান্তভাবেই তাদের। তাদের প্রাপ্য সম্পদ জোর করে ভোগ করার মতলবে তাদেরকে আটকে রাখার বা তা নিয়ে নেবার অধিকার কারো নেই।
সরাসরি কোন অশ্লীল কাজে লিপ্ত না হওয়া পর্যন্ত বিধবা নারীদের সাথে সদ্ভাব রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নারী ও পুরুষ কেউই ইসলামের বিধানের বাহিরে নয়। শালীনতা বজায় রাখা প্রতিটি মুসলিমের ইমানী দায়িত্ব। তাই অন্য সব নারী ও পুরুষের মত বিধবাদেরও প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য অশ্লীলতা থেকে দূরে থাকা উচিত। অশ্লীলতায় জড়িয়ে পড়লে অন্যান্যদের মত তাদের উপরেও তিরস্কার ও শাস্তি প্রযোজ্য হবে।
অনেক সময় দেখা যায় স্বামীর মৃত্যু পর পরিবারের কেউ কেউ তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। তা মোটেই উচিত নয়। বরং পরিবারের অন্য সবার মত তাদের সাথেও সদ্ভাব ও সৌহার্দমূলক সম্পর্ক বজায় রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ভাল-মন্দ মিলিয়েই তো মানুষ।
দুর্বলতার সুযোগে শুধুমাত্র তাদের অপছন্দের দিকগুলোকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে বের করে কথায় কথায় কটাক্ষ ও খারাপ আচরণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। তুচ্ছ কারনে কাউকে অপছন্দ হলেও তার মাঝে স্রষ্টা প্রদত্ত অনেক ভাল গুণও থাকতে পারে, যা পরিবারের জন্য প্রভূত কল্যাণ বয়ে আনতে পারে। মহান আল্লাহতায়ালা যা জানেন আমরা তা জানিনা।
সুতরাং এ থেকে বোঝা যায় যে, কোন বিধবাকে সারা জীবন বৈধব্য বেশ ধারন কিংবা অবিবাহিত অবস্থায় একাকিত্ব জীবন কাটানোর কোনরূপ বাধ্যবাধকতা ইসলামে নেই। বরং অন্য আর দশজন মুসলিম নারীর মত স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্যই উৎসাহিত করা হয়েছে এবং তিনি কি করবেন সেই সিদ্ধান্ত নেবার সম্পূর্ণ স্বাধীনতাও তাকে দেয়া হয়েছে।
- মহিলাদের স্বামী মারা গেলে আমাদের দেশে এখনও হিন্দু প্রথার অনুকরনে কোন কোন মুসলিম পরিবারেও বিধবাকে সাদা কাপড় পড়ানো ও গায়ের গয়না তাড়াতাড়ি সাথে সাথে খুলে ফেলার জন্য বিশেষভাবে জোড়জবরদস্তি শুরু করে দেন। নাকফুল, কানের দুল, হাতের চুড়ি এগুলো সাথে সাথে খুলে ফেলা বাধ্যতামূলক নয়। সাজসজ্জা করতে নিষেধ করা হয়েছে। সাজসজ্জা করা এককথা আর নাকফুল, কানের দুল যেগুলো পরা আছে, স্বাভাবিক যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থায় থাকা ভিন্ন কথা। যদি কারো স্বাভাবিক অবস্থা এমনটি হয়, তাহলে তিনি এ অবস্থায় থাকতে পারেন, অসুবিধা নেই। কিন্তু যদি এমন হয় অলংকার সাজসজ্জার উপকরন হয়ে দৃষ্টিতে ধরা পড়ে তাহলে খুলে ফেলা প্রয়োজন।
- উম্মু আতিয়্যাহ (রাঃ) বর্ণনা করেছেন
তিনি বলেন, কারো মৃত্যুতে তিন দিনের বেশী শোক পালন করা হতে আমাদেরকে নিষেধ করা হত। তবে স্বামী মারা গেলে চার মাস দশ দিন শোক পালন করতে হবে এবং আমরা যেন সুরমা খুশবু ব্যবহার না করি আর রঙিন কাপড় যেন না পরি তবে হালকা রঙের ছাড়া। আমাদের কেউ যখন হায়িয শেষে গোসল করে পবিত্র হয়, তখন (দুর্গন্ধ দূর করার জন্য) আযফার নামক সুগন্ধি ব্যবহার করার আমাদেরকে অনুমতি দেয়া হয়েছে। তাছাড়া আমাদেরকে জানাযার অনুসরণ করতে নিষেধ করা হতো। সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৩৪১ হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
- সাদা কাপড় পরা বাধ্যতামূলক নয়। তবে পুরাতন কাপড় থাকলে নতুন কাপড় পরবে না। তদ্রূপ ঝলমলে কাপড় থেকেও বিরত থাকবে। সৌন্দর্যের উদ্দেশ্যে চুল আচড়াতে পারবে না। তবে চুলের স্বাভাবিকতা রক্ষা করার জন্য আচড়ানোর প্রয়োজন হলে তা পারবে। এটা নিষিদ্ধ নয়। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৩০৪; মুসনাদে আহমদ ৬/৩০২;
- কোন মহিলার স্বামী মারা গেলে তার জন্য শোকপালন করা আবশ্যক। এর ইদ্দত (মেয়াদ) হল, চার মাস দশ দিন যদি সে গর্ভবতী না হয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন:
“আর তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করবে এবং নিজেদের স্ত্রীদেরকে ছেড়ে যাবে,তখন স্ত্রীদের কর্তব্য হলো নিজেদেরকে চার মাস দশ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করিয়ে রাখা। “ সূরা বাকারা: ১৩৪
আর গর্ভবতী হলে সন্তান ভূমিষ্ট হওয়া পর্যন্ত ইদ্দত পালন করবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন:
“গর্ভবর্তী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। ” সূরা তালাক: ৪
অনুরূপভাবে পিতা, মাতা, ভাই, বোন, সন্তান ইত্যাদি নিকটাত্মীয় মারা গেলে তার জন্য সবোর্চ্চ তিন দিন শোক পালন জায়েজ আছে কিন্তু ওয়াজিব বা আবশ্যক নয়। তবে স্বামীকে খুশি রাখতে যদি অন্য কোন মানুষের মৃত্যুতে স্ত্রী শোক পালন না করে তবে সেটাই উত্তম। কারণ, স্বামীর সুখ কামনাতেই নারীর জন্য অজস্র কল্যাণ নিহিত রয়েছে।
কোন মহিলার স্বামী মারা গেলে তার জন্য শোকপালনের পদ্ধতি:
নারীর জন্য এটাও একটি ইবাদাত যা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নির্দেশের আনুগত্য করা হয়।
মৃতের প্রতি শোক প্রকাশের উদ্দেশ্যে মহিলার জন্য করণীয় হল, সে সকল প্রকার সৌন্দর্য ও সাজসজ্জা থেকে দূরে থাকবে।
– আতর-সুগন্ধি ব্যবহার করবে না। তবে তৈল, সাবান, রোগ-ব্যাধীর জন্য ঔষধ ইত্যাদি ব্যবহারে অসুবিধা নাই যদিও তাতে সুগন্ধি থাকে। কারণ এগুলো মূলত: সুগন্ধি হিসেবে ব্যবহৃত হয় না। অনুরূপভাবে চুল আঁচড়াতেও কোন অসুবিধা নাই।
– সৌন্দর্য বর্ধক পোশাক পরবে না। বরং স্বামী মারা যাওয়ার আগে স্বাভাবিকভাবে যে পোশাক পরিধান করত তাই পরিধান করবে। তবে শুধু সাদা বা শুধু কালো পোষাক পরিধান করতে হবে এমন ধারণা ঠিক নয়।
– সুরমা, কাজল ইত্যাদি ব্যবহার করবে না।
– মেহেদী, খেযাব বা আলাদা রং ব্যবহার করবে না।
– কোন ধরণের অলংকার যেমন, দুল, চুরি, নাকফুল, আংটি, নুপুর ইত্যাদি ব্যবহার করবে না।
– শোক পালনের দিন শেষ পর্যন্ত নিজের বাড়িতে থাকবে। এমনকি সে সময় যদি সে তার পিতার বাড়িতেও থাকে তবে স্বামীর মৃত্যুর খবর পেলে নিজ বাড়িতে ফিরে আসবে। তবে একান্ত প্রয়োজন যেমন, বিপদের আশংকা, বাড়ি পরিবর্তন, চিকিৎসা বা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনা ইত্যাদি জরুরী কাজে বাড়ির বাইরে যেতে পারবে।
মোটকথা, স্বামী মারা যাওয়ার পর স্ত্রী এমন সব আচরণ করবে না বা এমন সৌন্দর্য অলম্বন করবে না যা তাকে বিয়ের দিকে আকৃষ্ট করতে পারে। এটা এ কারণে যে, এর মাধ্যমে স্বামীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়, স্বামীর পিতা-মাতা ও নিকটাত্মীদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করা হয় এবং তাদের বেদনা বিধুর অনুভূতির প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ হয়।