মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় রাসূল স. এর জীবনে ছোট বেলা থেকেই এমন অবস্থায় চালিয়েছেন যা আমাদের অন্তরে ধৈর্য্য ধরার উৎসাহ বাড়িয়ে দেয়। মহান আল্লাহ নবী স.কে ভালোবাসতেন তারপরও রাসূল স. জীবনে বাবাকে দেখেন নাই, মায়ের আদরে বড় হতেও পারলেন না, আর্থিক অবস্থার জন্য অল্প বয়সেই ব্যবসার কাজে নিয়োজিত হতে হলো। যে রাসূল মহান রবের প্রিয় বন্ধু তিনি মেষ পালক চড়িয়েছেন, তাহলে ভেবে দেখুন কত কঠিন বাস্তবতাকে সামাল দিয়ে আল্লাহর রাসূল স. মহান রবের পথে এগিয়ে গিয়েছেন! আমাদের জীবনে যে রকমই হোক, যতটুকুই হোক কঠিন অবস্থার অর্থ এই নয় যে আল্লাহ আমাকে ভালোবাসেন না বা আমি খুব গুনাহগার ইত্যাদি।
ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সা.-এর খিদমতে উপস্থিত হলাম। সে সময় তিনি জ্বরে ভুগছিলেন। আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনার যে প্রচণ্ড জ্বর!’ তিনি বললেন, ‘‘হ্যাঁ! তোমাদের দু’জনের সমান আমার জ্বর আসে।’’ আমি বললাম, ‘তার জন্যই কি আপনার পুরস্কারও দ্বিগুণ?’ তিনি বললেন, ‘‘হ্যাঁ! ব্যাপার তা-ই। (অনুরূপ) যে কোন মুসলিমকে কোন কষ্ট পৌঁছে, কাঁটা লাগে অথবা তার চেয়েও কঠিন কষ্ট হয়, আল্লাহ তা‘আলা এর কারণে তার পাপসমূহকে মোচন করে দেন এবং তার পাপসমূহকে এভাবে ঝরিয়ে দেওয়া হয়; যেভাবে গাছ তার পাতা ঝরিয়ে দেয়।’’ সহীহ বুখারী ৫৬৪৮, ৫৬৪৭, মুসলিম ২৫৭১,
আবার দেখুন মহান আল্লাহ হযরত আইয়ূব আ.কে পরীক্ষা করেছিলেন এবং তিনি ধৈর্য্যের উচ্চতম স্তর দেখিয়েছিলেন। আল্লাহ জানিয়েছেন-
আর স্মরণ করো আমার বান্দা আইয়ূবের কথা যখন সে তাঁর রবকে ডাকলো এই বলে যে, শয়তান আমাকে কঠিন যন্ত্রণা ও কষ্টের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। সূরা সাদ:৪১
সম্ভবত হযরত আইয়ূব কোন কঠিন চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। বাইবেলও একথাই বলে যে, তাঁর সারা শরীর ফোঁড়ায় ভরে গিয়েছিল। এ রোগে আক্রান্ত হবার পর হযরত আইয়ূবের স্ত্রী ছাড়া আর সবাই তাঁর সঙ্গ ত্যাগ করেছিল, এমন কি সন্তানরাও তাঁর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল।
রোগের প্রচণ্ডতা, ধন-সম্পদের বিনাশ এবং আত্মীয়-স্বজনদের মুখ ফিরিয়ে নেবার কারণে তিনি যে কষ্ট ও যন্ত্রণার মধ্যে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন তার চেয়ে বড় কষ্ট ও যন্ত্রণা ছিল এই জন্য এই যে, শয়তান তার প্ররোচনার মাধ্যমে তাঁকে বিপদগ্রস্ত করছে। এ অবস্থায় শয়তান, আইয়ূব আ.কে মহান রব থেকে হতাশ করার চেষ্টা করে, মহান রবের প্রতি অকৃতজ্ঞ করাতে চায় এবং তিনি যাতে অধৈর্য্য হয়ে উঠেন সে প্রচেষ্টায় রত থাকে। কিন্তু আইয়ূব আ. শয়তানের প্ররোচনার ফাঁদে পা দেন নি। তিনি নিজের শারিরীক কষ্টের কোন অভিযোগ করেন নি। আল্লাহ বলেছেন-
আর (এ একই বুদ্ধিমত্তা, প্রজ্ঞা ও জ্ঞান) আমি আইয়ুবকে দিয়েছিলাম। স্মরণ করো, যখন সে তাঁর রবকে ডাকলো, “আমি রোগগ্রস্ত হয়ে গেছি এবং তুমি করুণাকারীদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ করুণাকারী।”
আমি তাঁর দোয়া কবুল করেছিলাম, তাঁর যে কষ্ট ছিল তা দূর করে দিয়েছিলাম এবং শুধুমাত্র তাঁর পরিবার-পরিজনই তাঁকে দেইনি বরং এই সাথে এ পরিমাণ আরো দিয়েছিলাম, নিজের বিশেষ করুণা হিসেবে এবং এজন্য যে, এটা একটা শিক্ষা হবে ইবাদাতকারীদের জন্য। সূরা আম্বিয়া:৮৩-৮৪
আল্লাহর নেক বান্দারা যখন বিপদের ও কঠিন সংকটের মুখোমুখি হন তখন তাঁরা তাঁদের রবের কাছে অভিযোগ করেন না বরং ধৈর্য সহকারে তাঁর চাপিয়ে দেয়া পরীক্ষাকে মেনে নেন এবং তাতে উত্তীর্ণ হবার জন্য তাঁর কাছেই সাহায্য চান।
কিছুকাল আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার পর যদি বিপদ অপসারিত না হয় তাহলে তাঁর থেকে নিরাশ হয়ে অন্যদের দরবারে হাত পাতবেন, এমন পদ্ধতি তাঁরা অবলম্বন করেন না।
‘মানুষের মধ্যে কতক এমন রয়েছে, যারা দ্বিধার সাথে আল্লাহর ইবাদত করে। যদি তার কোনো কল্যাণ হয় তবে সে তাতে প্রশান্ত হয়। আর যদি তার কোনো বিপর্যয় ঘটে, তাহলে সে তার আসল চেহারায় ফিরে যায়। সে দুনিয়া ও আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটি হল সুস্পষ্ট ক্ষতি।’ (সূরা আল হজ : ১১)
বরং নেক বান্দারা ভাল করেই জানেন, যা কিছু পাওয়ার আল্লাহর কাছ থেকেই পাওয়া যাবে। তাই বিপদের ধারা যতই দীর্ঘ হোক না কেন তারা তাঁরই করুণা প্রার্থী হন। এজন্য তারা এমন দান ও করুণা লাভে ধন্য হন যার দৃষ্টান্ত হযরত আইয়ূব আ. এর জীবনে পাওয়া যায়। এমনকি যদি তারা কখনো অস্থির হয়ে কোন প্রকার নৈতিক দ্বিধা-দন্দ্বের শিকার হয়ে পড়েন তাহলেও আল্লাহ তাদেরকে দুষ্কৃতিমুক্ত করার জন্য একটি পথ বের করে দেন যেমন হযরত আইয়ূবের আ. জন্য বের করে দিয়েছিলেন। মহান আল্লাহ বলেন-
(আর আমি তাঁকে বললাম) এক আটি ঝাড়ু নাও এবং তা দিয়ে আঘাত করো এবং নিজের কসম ভঙ্গ করো না। আমি তাঁকে সবরকারী পেয়েছি, উত্তম বান্দা ছিল সে, নিজের রবের অভিমুখী। সূরা সাদ:৪৪
আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল স. বলেছেন, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আমার মু’মিন বান্দার জন্য আমার নিকট জান্নাত ব্যতীত অন্য কোন পুরস্কার নেই, যখন আমি তার দুনিয়ার প্রিয়তম কাউকে কেড়ে নিই এবং সে সওয়াবের নিয়তে সবর করে।’’ সহীহ বুখারী ১২৮৩, ১২৫২
‘আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও নারী, তাদের জন্য আল্লাহ মাগফিরাত ও মহান প্রতিদান প্রস্তুত রেখেছেন।’ (সূরা আহযাব : ৩৫)
আত্বা ইবনে আবী রাবাহ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু আমাকে বললেন, ‘আমি কি তোমাকে একটি জান্নাতী মহিলা দেখাব না!’ আমি বললাম, ‘হ্যাঁ!’ তিনি বললেন, ‘এই কৃষ্ণকায় মহিলাটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটে এসে বলল যে, আমার মৃগী রোগ আছে, আর সে কারণে আমার দেহ থেকে কাপড় সরে যায়। সুতরাং আপনি আমার জন্য দো‘আ করুন।’ তিনি বললেন, ‘‘তুমি যদি চাও তাহলে সবর কর; এর বিনিময়ে তোমার জন্য জান্নাত রয়েছে। আর যদি চাও তাহলে আমি তোমার রোগ নিরাময়ের জন্য আল্লাহ তা‘আলার নিকটে দো‘আ করব।’’ স্ত্রীলোকটি বলল, ‘আমি সবর করব।’ অতঃপর সে বলল, ‘(রোগ উঠার সময়) আমার দেহ থেকে কাপড় সরে যায়, সুতরাং আপনি আল্লাহর কাছে দো‘আ করুন, যেন আমার দেহ থেকে কাপড় সরে না যায়।’ ফলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য দো‘আ করলেন।
(সহীহ বুখারী ৫৬৫৩, তিরমিযী ২৪০০)
উমর বিন আবদুল আজীজ রহ. বলেন,
‘যাকে আল্লাহ তাআলা কোনো নেয়ামত দিয়ে তা ছিনিয়ে নিয়েছেন এবং তার স্থলে তাকে সবর দান করেছেন, তো এই ব্যক্তি থেকে যা ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে তার চেয়ে সেটাই উত্তম যা তাকে দান করা হয়েছে। বাইহাকী, শুয়াবুল ঈমান : ৯৫৬৫
আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘মু’মিন পুরুষ ও নারীর জান, সন্তান-সন্ততি ও তার ধনে (বিপদ-আপদ দ্বারা) পরীক্ষা হতে থাকে, পরিশেষে সে আল্লাহ তা‘আলার সঙ্গে নিষ্পাপ হয়ে সাক্ষাৎ করবে।’’তিরমিযী, হাসান সহীহ) তিরমিযী ২৩৯৯,
আবূ সায়ীদ সা‘দ ইবনে মালিক ইবনে সিনান খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত যে কিছু আনসারী আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে কিছু চাইলেন। তিনি তাদেরকে দিলেন। পুনরায় তারা দাবী করল। ফলে তিনি (আবার) তাদেরকে দিলেন। এমনকি যা কিছু তাঁর কাছে ছিল তা সব নিঃশেষ হয়ে গেল। অতঃপর যখন তিনি সমস্ত জিনিস নিজ হাতে দান করে দিলেন, তখন তিনি বললেন, ‘‘আমার কাছে যা কিছু (মাল) আসে তা আমি তোমাদেরকে না দিয়ে কখনই জমা করে রাখব না। (কিন্তু তোমরা একটি কথা মনে রাখবে) যে ব্যক্তি চাওয়া থেকে পবিত্র থাকার চেষ্টা করবে, আল্লাহ তাকে পবিত্র রাখবেন। আর যে ব্যক্তি (চাওয়া থেকে) অমুখাপেক্ষিতা অবলম্বন করবে, আল্লাহ তাকে অমুখাপেক্ষী করবেন। যে ব্যক্তি ধৈর্য ধারণ করার চেষ্টা করবে আল্লাহ তাকে ধৈর্য্য ধারণের ক্ষমতা প্রদান করবেন। আর কোন ব্যক্তিকে এমন কোন দান দেওয়া হয়নি, যা ধৈর্য্য অপেক্ষা উত্তম ও বিস্তর হতে পারে। সহীহুল বুখারী ১৪৬৯, ৬৪৭০, মুসলিম ১০৫৩
এই গুনটি অর্জনের জন্য অনুশীলন করা প্রয়োজন। আবার এটা ছোটবেলা থেকেই শিখতে পারে একজন ব্যক্তি। প্রতিটা বাবা মাই তাদের বাস্তব জীবনের অনাকাঙ্খিত অবস্থায় কিরকম আচরন করে তা সন্তান দেখে দেখেই শিখে ফেলে। তাই পরিবারে ধৈর্য্যের বাস্তব অনুশীলন থাকা প্রয়োজন।
আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণনা করেন যে, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা বলেন, যখন আমি আমার বান্দাকে তার প্রিয়তম দুটি জিনিস দ্বারা (অর্থাৎ চক্ষু থেকে বঞ্চিত করে) পরীক্ষা করি এবং সে সবর করে আমি তাকে এ দু’টির বিনিময়ে জান্নাত প্রদান করব।’’সহীহ বুখারী ৫৬৫৩, তিরমিযী ২৪০০
আবূ মুসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
‘যখন কোনো ব্যক্তি অসুস্থ হয় অথবা সফর করে, তার জন্য সে সুস্থ্য ও ঘরে থাকতে যেরূপ নেকি কামাই করতো অনুরূপ নেকি লেখা হয়।'( বুখারী : ২৯৯৬; আহমদ, মুসনাদ : ১৯৬৯৪)
ধৈর্য কষ্টসাধ্য জিনিস, যার জন্য পরিশ্রম অপরিহার্য। দুনিয়ার এই জীবনকে ক্ষনস্থায়ী হিসেবে নিয়ে নিজের আমলের ব্যাপারে আমাদের যার যত দৃঢ়তা থাকবে এবং পরকালীন স্থায়ী জীবনের সাফল্যতার জন্য মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি যার লক্ষ্য থাকে সেই সকল মুমিন বান্দাদের জন্য সবর একটি সহজ অনুশীলন হয়ে থাকে।
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পার্থিব জীবনের উদাহরণে বলেন :
“পার্থিব জীবন ঐ পথিকের ন্যায়, যে গ্রীষ্মে রৌদ্রজ্জ্বল তাপদগ্ধ দিনে যাত্রা আরম্ভ করল, অতঃপর দিনের ক্লান্তময় কিছু সময় একটি গাছের নীচে বিশ্রাম নিল, ক্ষণিক পরেই তা ত্যাগ করে পুনরায় যাত্রা আরম্ভ করল।” মুসনাদে ইমাম আহমাদ : ২৭৪৪
প্রিয় ব্যক্তির মৃত্যুতে ধৈর্য্যধারণকারীর জন্য নি’আমাত
রসূল সা. এরশাদ করেন :
“আল্লাহ তাআলা বলেছেন, আমি যখন আমার মুমিন বান্দার অকৃত্রিম ভালোবাসার পাত্রকে দুনিয়া থেকে উঠিয়ে নেই। এবং তাতে সে ধৈর্য্যধারণ করে, সওয়াবের আশা রাখে, আমার কাছে তার বিনিময় জান্নাত বৈ কি হতে পারে? “অর্থাৎ নিশ্চিত জান্নাত। বুখারী : ৫৯৪৪
সন্তান হারাদেরও আল্লাহ তা’আলা জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করেছেন। কারণ তিনি বান্দার প্রতি দয়ালু, তার শোক-দুঃখ জানেন। যেমন: রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন তিন সন্তান দাফনকারী মহিলাকে। তিনি তাকে বলেন- “তুমি জাহান্নামের আগুন প্রতিরোধকারী মজবুত ঢাল বেষ্টিত হয়ে গেছ।” ঘটনাটি নিম্নরূপ : সে একটি অসুস্থ বাচ্চা সাথে করে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসে, এবং বলে হে আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করুন। ইতিপূর্বে আমি তিন জন সন্তান দাফন করেছি। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুনে নির্বাক : “তিন জন দাফন করেছ!” সে বলল- হ্যাঁ। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন :
“তুমি জাহান্নামের আগুন প্রতিরোধকারী মজবুত প্রাচীর ঘেরা সংরক্ষিত দুর্গে প্রবেশ করেছ।” মুসলিম : ৪৭৭০
অন্য হাদীসে আছে :”সাবালকত্ব পাওয়ার আগে মৃত তিন সন্তান- তাদের মুসলিম পিতা-মাতার জন্য জাহান্নামের আগুন প্রতিরোধকারী মজবুত ঢালে পরিনত হবে।”
আবুযর রা. বলেন, হে আল্লাহর রসূল সা. আমার দু’জন মারা গেছে। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন “দুজন মারা গেলেও।” উস্তাদুল কুররা আবুল মুনজির উবাই রা. বলেন : হে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার একজন মারা গেছে, তিনি বললেন :
“একজন মারা গেলেও। তবে মুসিবতের শুরুতেই ধৈর্য্যধারণ করতে হবে।” মুসনাদ : ৪৩১৪
তাই শর্ত প্রথমেই সুন্দর করে মেনে নেয়া, এবং বলা যে আমরা আল্লাহর জন্য এবং আল্লাহর নিকটই ফিরে যেতে হবে।
মুমিন সব সময়ের জন্য নিজেকে সেইভাবেই প্রস্তুত রাখে যেভাবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল শিক্ষা দিয়েছেন। তাই যে কোন ক্রান্তিলগ্নে নিজের আবেগ সংযত করে বলতে হবে ও করতে হবে যা তা হলো–
ধৈর্যধারণ করা ও সালাতে মগ্ন হওয়া।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয় তা বিনয়ী ছাড়া অন্যদের ওপর কঠিন।’ সূরা বাকারা : ৪৫
আল্লাহ তাআলা বলেন,’হে মুমিনগণ, ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ সূরা বাকারা : ১৫৩
মুসনাদে আহমদ রয়েছে,
রাসূলুল্লাহ সা. কোন বিষয়ে দুশ্চিন্তায় পতিত হলে, সালাতের দিকে দৌড়ে ছুটতেন।
তাই নিজেকে চলুন যাচাই করি আমার নির্ভরতার জন্য কাকে অন্তরে স্থান দিয়েছি?
যদি সমস্যা এলেই কোর’আন ও হাদীসের আলোকে প্রথমেই অন্তরে মহান রবের কথাই স্মরন হয় ,অন্য কোন কিছুই নয় তাহলে আশা করা যায় নিজের অন্তরের ব্যাপারে ঠিক অবস্থানে আছি ইন শা আল্লাহ।