প্রেক্ষাপটঃ ৩
শিক্ষক/শিক্ষিকা ও ছাত্র/ছাত্রীর অবস্থান
শিক্ষাদান করাটা চিকিৎসা প্রদানের মতোই আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মহৎ পেশা। সমাজের/ পরিবারের/রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, সুখ শান্তি, নৈতিকতার উৎকর্ষতায় শিক্ষা একটি অন্যতম উপাদান। কিন্তু আজ আমাদের সমাজের শিক্ষার উপাদান ও কিছু শিক্ষক শিক্ষিকাদের ত্রুটিযুক্ত ভূমিকার কারনে নতুন প্রজন্মের মাঝে এই সকল সুন্দর মৌলিক মানবীয় গুনাবলীর উৎকর্ষ অনেকাংশেই ব্যহত হচ্ছে।
মহান আল্লাহ যে শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন প্রতিটি নর নারীর জন্য, মানুষ আজ সেই শিক্ষাকে পাশ কাটিয়ে ভিন্নধর্মী শিক্ষাকেই একমাত্র অবলম্বন করে নিচ্ছে। ফলে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় বিপরীতমুখী অনেক শিক্ষাই চলে আসছে যা ওয়াহীর জ্ঞানকে ভুলে যেতে সাহায্য করছে।
এখানে উল্লেখ করবো হালাল একটি পেশা কিভাবে হারাম বা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায়। শিক্ষক শিক্ষিকারাও সরকারী বা প্রাইভেট যেখানেই চুক্তিবদ্ধ হোন না কেন, যে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে যতটুকু শিক্ষা দেয়ার কথা- কতজন সঠিকভাবে সেই শিক্ষা দান করছেন?
আজ অনেক শিক্ষক শিক্ষিকারাই শ্রেনীতে সুন্দর করে বিস্তারিত না বুঝিয়ে অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে বাসায় আলাদা পড়ান এবং তখন পড়াটা সুন্দর করে বুঝিয়ে দেন, তাহলে শ্রেনীতে না পড়ানোর জন্য বেতন কি হালাল হবে? প্রতিষ্ঠানে থাকা অবস্থায় বুঝিয়ে দেয়াটাই কর্তব্য ও চুক্তিবদ্ধ কাজ।
প্রাইভেট পড়ানোর সময় যেভাবে নোট করে দিয়ে সুন্দর করে পড়ান, শ্রেনীতে পড়ানোর সময় কি একই দায়িত্ব বর্তায় না? তাহলে মাসের শেষে কোন পরিশ্রমের জন্য বেতন নিচ্ছেন?
যে সময়ে ও যতটুকু সময় প্রতিষ্ঠানে থাকার কথা এবং শিক্ষা দেয়ার কথা সেটা অনেকেই না করে গল্পগুজব ও বিভিন্ন রকম নাস্তা খেয়ে কাটিয়ে দেন, তাহলে মাসের শেষে বেতন হালাল হবে কি?
অনেকে আবার প্রতিষ্ঠানের জিনিষকে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে থাকেন যা হালাল হবে কি? যেমন ব্যক্তিগ কোন সার্টিফিকেট ফটোকপি করতে হবে, সেক্ষেত্রে নিয়মের বাইরেই প্রতিষ্ঠানের মেসিন ব্যবহার করে যাচ্ছেন যা হালাল নয়।
আবার অনেক শিক্ষক শিক্ষিকারা ব্যক্তিগতভাবে কোচিং চালু করেন ছেলে মেয়ে একসাথে গ্রুপ করে যার পুরুটাই জবাবদিহী করতে হবে উদ্যোগকারীকেই। ইচ্ছে করলেই ছেলে মেয়েদের আলাদা ব্যবস্থায় পড়াতে পারেন, সেখানে ফ্রি মিক্সিং এর সুযোগ করে দিয়ে গুনাহের বোঝা নিয়ে যাচ্ছেন।
অনেকে প্রাইভেট পড়লে শ্রেনীতে নাম্বার বেশী পাবে কারন পরীক্ষার প্রশ্ন অনেকটাই জানিয়ে দেন এটাও সম্পূর্ন গুনাহের একটি কাজ।
একজন শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের কাছে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন কিন্তু সাধারনভাবে যেকোন শিক্ষিতব্যক্তির মহান রবের কাছে চুক্তি করা আছে যে, যে জানে না তাকে সঠিক শিক্ষা দিতে হবে কিন্তু এই দায়িত্ব কতজন পালন করছেন?
এখানেও শিক্ষক শিক্ষিকাদের একস্থানে বেপর্দা অবস্থান ও ফ্রি মিক্সিং এর গোনাহের বোঝা রয়ে যায়। যারা আখেরাত প্রত্যাশী তারা সচেতন হয়ে নিজেদের শরীয়ার মাঝে রাখেন।
এইভাবেই একটি হালাল পেশার উপার্জন হারাম বা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায় যা আমাদের অত্যন্ত সতর্ক থাকা প্রয়োজন।