হাদীসের আলোকে সাওম-৯

রাসূল স. বলেছেন-

       আর সেই মহান সত্ত্বার শপথ, যাঁর মুঠিতে মুহাম্মাদের প্রাণ! আল্লাহর কাছে রোযাদারের মুখের গন্ধ কস্তরীর খোশবু থেকেও উত্তম। রোযাদারের খুশীর বিষয় দু’টি। যখন সে ইফতার করে তখন একবার খুশীর কারণ হয়। আরেকবার যখন সে তার রবের সাথে সাক্ষাত করে রোযার বিনিময় পেয়ে খুশী হবে। সহীহ আল বুখারী: ১৭৬৯

আরো এসেছে আল্লাহর রয়েছে প্রতি ফিতরে (ইফতারের সময় জাহান্নাম থেকে) মুক্তিপ্রাপ্ত বান্দারা। মুসনাদে আহমাদ: ৫/২৫৬

ইফতারের সময় পরিবারের সকলকে বুঝানো প্রয়োজন যে এটা অত্যন্ত আনন্দের সময় ও মহান রবের কাছে ক্ষমা নেয়ার ও জাহান্নাম থেকে নিজেকে মুক্ত করে নেয়ার সুযোগ। তাই আসরের পর থেকেই দু’আ দরুদ ও মহান রবের কাছে চাওয়ায় ব্যস্থ থাকাটা খুবই উপযুক্ত আমলের সময়। অন্তত একটি মাস এইভাবে নিজেদের আমলে যুক্ত করে পরিবারকেও সাথে নিয়ে মহান রবের কাছে চাওয়ার চেষ্টা করি। নিজেদের মহান রবের ক্ষমাপ্রাপ্ত ও রহমতের বান্দাদের মধ্যে সামিল করার সুযোগ নেই। নিজেদের মত করে ইফতারের সময় একা একাই হাত তুলে মহান রবের কাছে মুনাজাতে চাই আকুলভাবে

এমন বৃদ্ধ লোক যে সিয়াম পালন করলে তার স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে, সে কি সিয়াম পালন করবে?

জাওয়াব : যদি সিয়াম পালনে তার ক্ষতি হয়, তার জন্য সিয়াম পালন জায়েয নয়। কারণ, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন:

وَلَا تَقْتُلُوا أَنْفُسَكُمْ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِكُمْ رَحِيمًا ﴿২৯﴾ [ النساء:২৯]

“তোমরা নিজেদের হত্যা করনা। আল্লাহ অবশ্যই তোমাদের প্রতি দয়াশীল।” সূরা নিসা ২৯

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আরো বলেন :

وَلَا تُلْقُوا بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ [البقرة: ১৯৫]

“তোমরা নিজেদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিওনা।” সূরা বাকারা ১৯৫

তাই যে বৃদ্ধ ব্যক্তির স্বাস্থ্যের জন্য সিয়াম ক্ষতিকর তার জন্য সিয়াম পালন জায়েয নয়। এর সাথে ভবিষ্যতে সিয়াম পালনের সামর্থ্যবান হওয়ার সম্ভাবনা যদি না থাকে তাহলে, সে প্রত্যেকটি সাওমের পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাদ্য খাওয়াবে বা দান করবে।

এতেই সে সিয়ামের দায় থেকে মুক্ত হবে ,আল্লাহ তাআলাই সর্বাধিক জ্ঞাত।

 

          রাসূল সা. বলেছেন-

বেহেশতে ‘রাইয়ান’ নামক একটি দরজা আছে, কিয়ামতের দিন এটি দিয়ে রোযাদাররা (জান্নাতে) প্রবেশ করবে। রোযাদার ছাড়া আর কেউ এই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। (কিয়ামতের দিন রোযাদারকে ডেকে) বলা হবে, রোযাদাররা কোথায়? তখন তারা উঠে দাঁড়াবে। তারা ছাড়া আর একজন লোকও সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। তাদের প্রবেশের পরই তা বন্ধ করে দেয়া হবে যাতে ঐ দরজা দিয়ে আর কেউ প্রবেশ করতে না পারে।

সহীহ আল বুখারী: ১৭৬১

শুধুমাত্র সাওমের হক আদায় করে আমরা এই বিশেষ এক জান্নাতের মর্যাদা লাভ করতে পারি। মহান আল্লাহ তাওফিক দান করুন। মাত্র কয়েকটি দিনের এই জীবনে একটু সবর করেই না হয় চলি যেন স্থায়ী জীবনের অনন্ত সুখ লাভে ধন্য হতে পারি!