রজব থেকে রামাদান ডায়েরী-৬ (তাকওয়া অর্জনের জন্য রোযা ফরয)

 

মহান আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীন বলেছেন:

হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে যেমন করে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরয করা হয়েছিল। সম্ভবত এর ফলে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারবে।   সূরা আল বাকারা: ১৮৩

মহান আল্লাহ ঈমানদারদের বলছেন রোযার উদ্দেশ্য সম্পর্কে। এখানে সবাই সেই উদ্দেশ্য লাভ করবে তা বলা হয় নাই, আল্লাহ বলছেন সম্ভবত লাভ করবে, আর সেটা হলো তাকওয়া বা আল্লাহভীতি। এই রোযা পূর্ববর্তীদের উপর ফরয ছিল। তবে ধরন ছিল অন্যরকম যেমন দু’দিন বা তিনদিন।

তাকওয়ার মূল ধাতুর অর্থ বাঁচা, মুক্তি বা নিষ্কৃতি।

তাকওয়ার আভিধানিক অর্থ হল ভয় করা, পরহেযগারী, বিরত থাকা।

শরিয়তের পরিভাষায়, আল্লাহর ভয়ে ভীত হয়ে আল্লাহ তা’লার সকল আদেশ মানা এবং নিষিদ্ধ কাজ থেকে দূরে থাকার নাম তাকওয়া।

যে কোনো ধরনের বাঁচার নাম তাকওয়া নয়। ইসলাম বা আল-কোরআনের আলোকে যেটা প্রকৃত মুক্তি, নিষ্কৃতি বা পরিত্রাণ নামে অভিহিত হওয়ার যোগ্য সেই মুক্তি/নিষ্কৃতিই তাকওয়ার আওতায় পড়বে। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন:

কাজেই তোমাদের মধ্যে যতটা সম্ভব হয় আল্লাহকে ভয় করতে থাকো। আর শুন ও অনুসরণ কর এবং নিজের ধন-মাল ব্যয় কর, এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। যে লোক স্বীয় মনের সংকীর্ণতা ও কৃপনতা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে পারবে তারাই সফলকাম হবে।  সূরা আত তাগাবুন: ১৬

হে মানুষ! আমরাই তোমাদেরকে একজন পুরুষ ও একজন স্ত্রী হতে সৃষ্টি করেছি। তারপর তোমাদের মধ্যে জাতি ও ভাতৃগোষ্ঠী বানিয়ে দিয়েছি, যেন তোমরা পরস্পরকে চিনতে পারো। নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে সর্বাধিক সম্মানিত সে, যে তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক আল্লাহভীরু। নিঃসন্দেহে আল্লাহ সবকিছু জানেন এবং সব বিষয়ে অবহিত।   সূরা আল হুজুরাত: ১৩

যেদিন মানুষ নিজে যা কিছু করেছে তা সব স্মরণ করবে এবং প্রত্যেক দর্শনকারীর সামনে জাহান্নাম খুলে ধরা হবে, তখন যে ব্যক্তি সীমালংঘন করেছিল এবং দুনিয়ার জীবনকে বেশী ভালো মনে করে বেছে নিয়েছিল, জাহান্নামই হবে তার ঠিকানা।

আর যে ব্যক্তি নিজের রবের সামনে এসে দাঁড়াবার ব্যাপারে ভীত ছিল এবং নফ্‌সকে খারাপ কামনা থেকে বিরত রেখেছিল তার ঠিকানা হবে জান্নাত।      সূরা আন নাযিয়াত: ৩৫-৪১

আর তাই  মহান আল্লাহ ঈমানদের সম্বোধন করে আহবান করেছেন:

হে ঈমানদারগণ! তোমরা যথাযথভাবে আল্লাহকে ভয় করো। মুসলিম থাকা অবস্থায় ছাড়া যেন তোমাদের মৃত্যু না হয়।     সূরা আলে ইমরান: ১০২