প্রানবন্ত সালাত-৩ (সালাত পরিত্যাগকারীর শাস্তি)

সালাত পরিত্যাগকারীর শাস্তিঃ

১। প্রানবন্ত সালাতঃ১

 (১) বেনামাযীকে কবরে শাস্তি দেওয়া হবে

সহীহ বুখারীতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এক স্বপ্নের বর্ণনায় রয়েছে: “তিনি চিৎ অবস্থায় শায়িত এক ব্যক্তির নিকট আসলেন, এমতাবস্থায় একটি পাথর হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছে অন্য একজন, অতঃপর সে উক্ত পাথর দিয়ে তার (শায়িত ব্যক্তির) মাথায় আঘাত করছে, যার ফলে তার মাথা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাচ্ছে, পাথরটি ছিটকে দূরে চলে যাচ্ছে, পুনরায় সে দৌড়ে গিয়ে পাথরটি নিয়ে ফিরা মাত্র উক্ত ব্যক্তির মাথা পূর্বের ন্যায় ঠিক হয়ে যাচ্ছে। পুনরায় ঐ ব্যক্তি আপন স্থানে ফিরে তাকে ঐ ভাবেই (শাস্তি) দিচ্ছে যেভাবে প্রথমবার দিয়েছিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঐ ব্যক্তির ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেন তখন দুই ফিরিশতা তাঁকে অবহিত করেন যে, এতো ঐ ব্যক্তি যে কুরআন পড়ত, কিন্তু তার প্রতি আমল করত না এবং ফরয সালাত ছেড়ে ঘুমাত।

(২) কিয়ামতের দিন কাফির সরদার কারূন, ফির‘আউন, হামান ও উবাই ইবন খালফের সাথে বেনামাযীর হাশর হবে।

“যে ব্যক্তি সালাতের হিফাযত করলো, সালাত তার জন্য কিয়ামতের দিন জ্যোতি, প্রমাণ ও নাজাতের উসীলা হবে, আর যে সালাতের হিফাযত করলো না, তার জন্য সালাত কিয়ামতের দিন জ্যোতি, প্রমাণ ও নাজাতের উসীলা হবে না এবং কারূন, ফির‘আউন, হামান এবং উবাই ইবন খালফের সাথে তার হাশর হবে।” (মুসনাদে ইমাম আহমদ)

(৩) বেনামাযী জাহান্নামে যাবে,

﴿مَا سَلَكَكُمۡ فِي سَقَرَ ٤٢ قَالُواْ لَمۡ نَكُ مِنَ ٱلۡمُصَلِّينَ ٤٣﴾ [المدثر: ٤٢، ٤٣]

“তোমাদেরকে কিসে সাকার (জাহান্নাম)-এ নিক্ষেপ করেছে? তারা বলবে আমরা সালাত আদায়কারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না।” [সূরা আল-মুদ্দাসসির: ৪২-৪৩]

(৪) বেনামাযী স্বীয় পরিবার এবং ধন-সম্পদ নষ্ট করে দেওয়ার চেয়েও অধিক ক্ষতিগ্রস্ত।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«الذي تفوته صلاة العصر كأنما وتر أهله وماله»

“যে ব্যক্তির আসর সালাত ছুটে গেল, তার যেন পরিবার ও ধন সম্পদ নষ্ট হয়ে গেল।” (সহীহ মুসলিম)

(৫) বেনামাযীকে কিয়ামতের দিন জাহান্নামের এক খালে নিক্ষেপ করা হবে।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿فَخَلَفَ مِنۢ بَعۡدِهِمۡ خَلۡفٌ أَضَاعُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَٱتَّبَعُواْ ٱلشَّهَوَٰتِۖ فَسَوۡفَ يَلۡقَوۡنَ غَيًّا ٥٩ ﴾ [مريم: ٥٩]

“তাদের পরে আসলো অপদার্থ পরবর্তীগণ, তারা সালাত নষ্ট করল ও প্রবৃত্তির অনুসরণ করল। সুতরাং তারা অচিরেই “গাইয়া” প্রত্যক্ষ করবে।” [সূরা মারইয়াম: ৫৯]

আপনি কি জানেন “গাইয়া” কী? গাইয়া হলো, জাহান্নামের একটি নদীর তলদেশ, যার গভীরতা অনেক, যেখানে রয়েছে রক্ত ও পুঁজের নিকৃষ্টতম আস্বাদ। (তাফসীর ইবন কাসীর)

গাইয়ার উক্ত তাফসীর আব্দুল্লাহ্ ইবন মাসউদ থেকে বর্ণিত হয়েছে, যেমন ইবনুল কাইয়্যেম রহ. কিতাবুস সালাতে উল্লেখ করেছেন।

৬। সালাত পরিত্যাগকারী হলো আল্লাহর যিকির (সালাত) বিমুখ, আর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর যিকির থেকে বিমুখদের জন্য তার জীবন-যাপন সংকুচিত করার ওয়াদা করেছেন।

আল্লাহ বলেন,

﴿وَمَنۡ أَعۡرَضَ عَن ذِكۡرِي فَإِنَّ لَهُۥ مَعِيشَةٗ ضَنكٗا وَنَحۡشُرُهُۥ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ أَعۡمَىٰ ١٢٤﴾ [طه: ١٢٤]

“যে আমার স্মরণে বিমুখ থাকবে, অবশ্য তার জীবন-যাপন হবে সংকুচিত এবং আমি তাকে কিয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করব।” [সুরা ত্বাহা: ১২৪]

কেমন ছিলো সাহাবা আযমাইনদের সালাতঃ

হযরত আবু বকর রা.-এর নামাযে দাঁড়ানো প্রসঙ্গে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর রা. বর্ণনা করেন যে, তিনি যখন নামাযে দাঁড়াতেন তখন এমন নিশ্চুপ ও নিশ্চল হয়ে থাকতেন, মনে হত, একটি কাঠ মাটিতে গেড়ে দেওয়া হয়েছে।

হযরত ওমর রা.কে যখন কুখ্যাত আবু লূলূ খঞ্জর দিয়ে আহত করে তখন তিনি বারবার বেহুশ হয়ে পড়ছিলেন। এ অবস্থায় কেউ তাঁকে নামাযের কথা স্মরণ করিয়ে দিলে তৎক্ষণাৎ নামায পড়ে নিলেন এবং বললেন, ‘আমি যদি নামায পড়তেই অক্ষম হয়ে যাই তবে বেঁচে থেকে আর লাভ কী?’

একবার এক যিহাদ থেকে ফেরার সময় এক স্থানে রাত যপন করার জন্য নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবাইকে নির্দেশ দিলেন এবং বললেন, আজ রাতে কে আমাদের পাহারা দিবে? একজন মুহাজির আম্মার ইবনে ইয়াসির (রাযিঃ) এবং একজন আনসারী আব্বাদ ইবনে বিশর (রাযিঃ) বললেন, আমরা পাহারা দিব। হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেই পথ দিয়ে শত্ৰুর আগমনের সম্ভাবনা ছিল সেই দিকের একটি পাহাড় দেখিয়ে বললেন, তােমরা উভয়ে এই স্থানে অবস্থান কর। দ্বায়িত্ব পেয়ে সাহাবি দুজন যথা সময়ে সেখানে চলে গেলেন। সেখানে যাওয়ার পর আনসারী সাহাবী মুহাজিরকে বললেন, চলুন, আমরা রাতকে দুই ভাগ করে একভাগে আপনি ঘুমাবেন আর আমি জাগ্রত থাকবো আরেকভাগে আপনি জাগ্রত থাকবেন আর আমি ঘুমাবো। এভাবে পলাক্রমে পাহাড়া দিলেই বোধ হয় উত্তম হবে।

কেননা, উভয়ই সারা রাত জেগে থাকলে হতে পারে কোন এক সময় উভয়েরই ঘুম চলে আসবে। জাগ্রত ব্যক্তি যদি কোন আশঙ্কা বােধ করে তবে অপর সঙ্গীকে জানাতেও পারবে।

রাত্রের প্রথম ভাগে আনসারী সাহাবীর পাহাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলো। তাই তিনি পাহড়ার জন্য প্রস্তুত হলে এবং মুহাজির সাহাবী ঘুমিয়ে পড়লেন। পাহাড়ার এক মুহূর্তে আনসারী সাহাবী ভাবলেন একটু এবাদত করে কাটানো যাক সময়টা। তাই তিনি নামাজে দাড়িয়ে গেলেন। এমন সময় শত্রুদের একটি টহল টিম দুর থেকে একজনকে একটি টিলার উপর দন্ডায়মান দেখতে পেল। তখন তারা সেখান থেকে তাকে লক্ষ করে তীর নিক্ষেপ করলো। কিন্তু কোনো প্রকার নড়াচড়া টের পেল না। তারা ভাবলো হয়তো তীর শরীরে আঘাত করেনি। তখন আবার নিক্ষেপ করলো। এবারো আগের মতোই নড়াচড়া টের পেল না। এইভাবে সে তৃতীয় তীর নিক্ষেপ করল। প্রতিটি তীর আনসারীর শরীরে বিদ্ধ হচ্ছিল আর তিনি তা হাত দ্বারা শরীর হতে বের করে নিচ্চিলেন। অতঃপর তিনি ধীরস্থিরভাবে রুকু সেজদা করলেন এবং নামায শেষ করে  সঙ্গীকে জাগালেন। শত্রুপক্ষের লোক একজনের স্থলে দুইজনকে দেখতে পেয়ে মনে করল নাজানি আরাে কি পরিমাণ লোক আছে।

তাই সে ওখান থেকে চলে গেল। মুহাজির সঙ্গী জাগ্রত হইয়া দেখলেন আনসারীর শরীরের তিন স্থান হতে প্রচুর পরিমাণে রক্ত ঝরছে। তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ! আপনি শুরুতেই আমাকে জাগালেন না কেন? আনসারী বললেন, আমি নামাযে একটি সূরা (সূরায়ে কাহ্ফ) শুরু করেছিলাম। সূরাটি শেষ না করে রুকুতে যেতর মনে চাইছিল না। পরে আমার এই ব্যাপারে ভয় হল যে, এমন না হয় যে, বারবার তীর বিদ্ধ হওয়ার কারণে আমি মৃত্যুবরণ করি আর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাহারার যে দায়িত্ব অর্পণ করেছেন তা অপূর্ণ রয়ে যায়। যদি আমার এই আশঙ্কা না হতো তবে আমি মৃত্যুবরণ করতাম কিন্তু সূরা শেষ না করে রুকু করতাম না। (বাইহাকী, আবু দাউদ)

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আবু বকর (রা) বলেন, হজরত আবু তালহা আনসারী (রা.) একবার তাঁর এক বাগানে নামায আদায় করতেছিলেন। ইতিমধ্যে একটি ছোট পাখি উড়তে শুরু করল, (বাগান এত ঘন ছিল যে এই ক্ষুদ্র পাখিটি পথ খুঁজে পাচ্ছিল না), তাই পাখিটি এদিক-সেদিক বের হওয়ার পথ খুঁজতে শুরু করল। এই দৃশ্য তার খুব ভাল লাগল। ফলে তিনি কিছুক্ষণ সেদিকে তাকিয়ে রইলেন। তারপর নামাযের দিকে মনোযোগ দিলেন। কিন্তু (অবস্থা এই দাঁড়াল) তিনি (তখন) স্মরণ করতে পারলেন না যে, নামায কত রাকআত আদায় করেছেন। তিনি বললেন, এই মাল আমাকে পরীক্ষায় ফেলেছে। অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সা.) এর খেদমতে উপস্থিত হলেন এবং বাগানে তাঁর সম্মুখে যে পরীক্ষা উপস্থিত হয়েছিল তা বর্ণনা করলেন। তারপর বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! এই মাল আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করছি। আপনি যেখানে পছন্দ করেন উহা সেখানে ব্যয় করুন। (মুয়াত্তা ইমাম মালিক: ২১৪)

রাসূল সা শেষ সময়ে সালাতঃ

মৃত্যুর চারদিন পূর্বে বৃহস্পতিবার মাগরিবের ছালাতের ইমামতিই ছিল তাঁর জীবনের সর্বশেষ ইমামতি। অসুখ সত্ত্বেও তিনি এযাবত প্রতি ওয়াক্ত ছালাতে ইমামতি করেছেন। সর্বশেষ এই ইমামতিতে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) প্রথম দু’রাক‘আতে সূরা মুরসালাত পাঠ করেন’। যার সর্বশেষ আয়াত ছিলفَبِأَيِّ حَدِيْثٍ بَعْدَهُ يُؤْمِنُوْنَ ‘এর পরে কোন্ বাণীর উপরে তোমরা বিশ্বাস স্থাপন করবে’? (মুরসালাত ৭৭/৫০)। অর্থাৎ কুরআনের পরে আর কোন্ কালামের উপরে তোমরা ঈমান আনবে?

এর দ্বারা যেন তিনি ইঙ্গিত করলেন যে, আল্লাহ পাকের আহবানের সাথে সাথে উম্মতে মুহাম্মাদীর প্রতি আমার জীবনের সর্বশেষ আহবান হ’ল, সর্বাবস্থায় তোমরা কুরআনের বিধান মেনে চলবে। কোন অবস্থাতেই কুরআন ছেড়ে অন্য কিছু গ্রহণ করবে না। অথচ উম্মতে মুহাম্মাদী এখন কুরআন ছেড়ে জীবনের প্রায় সর্বক্ষেত্রে নিজেদের মনগড়া বিধান সমূহের অনুসরণ করছে। ফলে পদে পদে তারা লাঞ্ছিত ও অধঃপতিত হচ্ছে।

এশার ছালাতের জন্য আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) তিনবার ওযূ করেন ও তিনবার অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। অবশেষে ব্যর্থ হয়ে আবুবকরকে ইমামতি করার নির্দেশ পাঠান। এরপর থেকে রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যু পর্যন্ত আবুবকর (রাঃ) একটানা ১৭ ওয়াক্ত ছালাতের ইমামতি করেন। লোকেরা খারাপ ধারণা করবে মনে করে আয়েশা (রাঃ) তিন থেকে চারবার তার পিতার ইমামতির ব্যাপারে আপত্তি তুলে অন্যকে ইমামতির দায়িত্ব প্রদানের অনুরোধ করেন। কিন্তু আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) উক্ত অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে বলেন,إِنَّكُنَّ صَوَاحِبُ يُوْسُفَ، مُرُوْا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ ‘তোমরা ইউসুফের সহচরীদের মত হয়ে গেছ। আবুবকরকে বলে দাও যেন সে ছালাতে ইমামতি করে’।

সোমবার ফজরের জামা‘আত চলা অবস্থায় আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) ঘরের পর্দা উঠিয়ে একদৃষ্টে মসজিদে জামা‘আতের দিকে তাকিয়ে থাকেন। এতে তাঁর চেহারা খুশীতে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে এবং ঠোটে মুচকি হাসির রেখা ফুটে ওঠে। রাসূল (ছাঃ)-এর জামা‘আতে আসার আগ্রহ বুঝতে পেরে আবুবকর (রাঃ) পিছিয়ে আসতে চান। কিন্তু আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) ইশারায় তাঁকে থামিয়ে দেন এবং দরজার পর্দা ঝুলিয়ে দেন। রাবী আনাস বিন মালেক (রাঃ)-এর ভাষায় ‘ঐ সময় রাসূল (ছাঃ)-এর চেহারা ছিল যেন ‘কুরআনের পাতা’(كَأَنَّ وَجْهَهُ وَرَقَةُ مُصْحَفٍ)। অতঃপর এদিনই তিনি মৃত্যুবরণ করেন’। বুখারী হা/৬৮০ ‘আযান’ অধ্যায়-১০, অনুচ্ছেদ-৪৬।

শেষ সময়ে তিনি উপস্থিত সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেন,الصَّلاَةُ الصَّلاَةُ وَمَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ ‘ছালাত ছালাত এবং তোমাদের দাস-দাসী’ অর্থাৎ ছালাত ও স্ত্রীজাতির বিষয়ে তোমরা সর্বাধিক খেয়াল রেখো’। আয়েশা (রাঃ) বলেন, একথাটি তিনি বারবার পুনরাবৃত্তি করেন’। আনাস (রাঃ) বলেন, এটিই ছিল রাসূল (ছাঃ)-এর সর্বশেষ অছিয়ত’। ইবনু মাজাহ হা/২৬৯৭; আহমাদ হা/২৬৫২৬; বায়হাক্বী হা/১৫৫৭৮; মিশকাত হা/৩৩৫৬।

মুমিনের প্রতি আহবান

আবূল আওয়াম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন মানুষের আমলের মধ্যে সর্বপ্রথম সালাতের হিসাব-নিকাশ নেওয়া হবে। যদি সালাত পরিপূর্ণ রূপে পাওয়া যায়, তবে তা পরিপূর্ণ লেখা হবে। যদি কিছু কম পাওয়া যায়, তাহলে আল্লাহ্‌ বলবেন, তার নফল সালাত কিছু আছে কি না? (যদি থাকে) এগুলোর দ্বারা ফরয সালাতের ক্ষতিপূরণ করে দেওয়া হবে। তারপর অন্যান্য আমলের ক্ষেত্রেও এরূপ করা হবে। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)  বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)  পুনঃনিরীক্ষণঃ   সুনান আন-নাসায়ীঃ ৪৬৭ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)

‘হে আদম সন্তান! তুমি আমার ইবাদতের জন্য অন্তরকে খালি করে নাও। আমি তোমার হৃদয়কে সচ্ছলতা দ্বারা পূর্ণ করে দেব এবং তোমার অভাব দূর করে দেব। কিন্তু যদি তুমি সেটা না কর, তাহ’লে আমি তোমার দু’হাতকে (দুনিয়াবী) ব্যস্ততায় ভরে দেব এবং তোমার অভাব মিটাবো না’।

হাদীছে কুদসী; আহমাদ, তিরমিযী হা/২৪৬৬; ইবনু মাজাহ হা/৪১০৭; ঐ, মিশকাত হা/৫১৭২ ‘হৃদয় গলানো’ অধ্যায়-২৬, পরিচ্ছেদ-২; আলবানী, সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৩৫৯।

وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ لَئِن شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْ ۖ وَلَئِن كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ

‘যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর, তবে আমি তোমাদেরকে অবশ্যই বেশী করে দেব। আর যদি অকৃতজ্ঞ হও, তবে জেনে রেখ আমার শাস্তি অত্যন্ত কঠোর’। সূরা  ইবরাহীমঃ ৭।

মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহ ইবন বাযী‘ আল বাসরী (রহঃ) ….. আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে দীনের যে অবস্থায় আমরা ছিলাম বর্তমানে এর কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। আমি বললামঃ সালাতের অবস্থা কোন পর্যায়ে। রাবী আবূ ইমরান জাওনী (রহঃ) বলেনঃ সালাতের বিষয়টি তো আছে। তিনি বললেনঃ তোমরা তোমাদের সালাতে তা করনি যা তোমরা জান। সহীহ, বুখারি ৫২৯, ৫৩০, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ২৪৪৭ [আল মাদানী প্রকাশনী]

এ হাদীসটি হাসান, এ সূত্রে গারীব। এটি আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে অন্য সূত্রেও বর্ণিত আছে।