بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
মাসিক কুইজঃ ১ এর উত্তর
উত্তরঃ
১। শাফা‘আত-এর শাব্দিক অর্থ কি?
উত্তরঃ শাফা‘আত-এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে, সুপারিশ, মাধ্যম ও দো‘আ বা প্রার্থনা।
২। শাফায়াত কখন সংঘটিত হবে?
উত্তরঃ একমাত্র মালিক মহান আল্লাহ তা‘আলার অনুমতিক্রমে কিয়ামতের দিবসে শাফা‘আত অনুষ্ঠিত হবে।
৩। শাফায়াত কত প্রকার ও কি কি?
উত্তরঃ এক. শরী‘আত সম্মত শাফা‘আত, দুই. শির্কী শাফা‘আত
৪। শাফায়াতের মালিক কে? কুর’আনের একটি উদাহরন দিন?
উত্তরঃ একমাত্র মহান আল্লাহ তা’আলা।
قُل لِّلَّهِ ٱلشَّفَٰعَةُ جَمِيعٗا [الزمر: ٤٤
“হে নবী! বলে দিন, সকল শাফা‘আত একমাত্র আল্লাহ তা‘আলারই অধিকারে।” যুমার: ৪৪
مَن ذَا ٱلَّذِي يَشۡفَعُ عِندَهُۥٓ إِلَّا بِإِذۡنِهِ﴾ [البقرة: ٢٥٥]
“কে আছে এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া।” বাকারাহ: ২৫৫
৫। আল্লাহর অনুমতিক্রমে শাফায়াতকারী কারা হবেন?
উত্তরঃ নবীগণ, ফিরিশতাগণ, সিদ্দীকগণ, শহীদগণ, নেককার বান্দাগণ সকলেই শাফা‘আত করবেন, অবশ্য আল্লাহর অনুমতিক্রমে।
৬। সর্বপ্রথম শাফা’আতকারী কে হবেন?
উত্তরঃ ‘আশ-শাফা‘আতুল উজমা’ বা সর্ববৃহৎ শাফা‘আত যা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য খাস।
أَنَا أَوَّلُ شَافِعٍ وَ أَوَّلُ مُشَفَّعٍ»
“আমিই প্রথম সুপারিশকারী এবং আমার শাফা‘আতই প্রথম গ্রহণ করা হবে।” সহীহ বুখারী ও মুসলিম।
৭। শাফায়াতের কয়টি শর্ত ও কি কি? উদাহরন দিয়ে বলেন?
উত্তরঃ সুপারিশ অস্তিত্ব লাভ করবে দু’টি শর্তে:
প্রথম শর্ত: শাফা‘আতকারীকে শাফা‘আতের জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে অনুমতি প্রদান করা।
﴿مَا مِن شَفِيعٍ إِلَّا مِنۢ بَعۡدِ إِذۡنِهِ﴾ [يونس: ٣]
“তাঁর অনুমতি লাভ না করে সুপারিশ করার কেউ নেই।” [সূরা ইউনুসঃ ৩]
দ্বিতীয় শর্ত: যার জন্য সুপারিশ করা হবে তার প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্টি থাকা।
“আর আসমানসমূহে অনেক ফিরিশতা রয়েছে, তাদের সুপারিশ কোনোই কাজে আসবে না। তবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন এবং যার প্রতি তিনি সন্তুষ্ট, তার ব্যাপারে অনুমতি দেওয়ার পর। সূরা আন-নাজম: ২৬
৮। কারা শাফায়াত থেকে বঞ্চিত থাকবে?
উত্তরঃ ১। কিয়ামত দিবসে অনুষ্ঠিত শাফা‘আত থেকে বঞ্চিত হবে যারা প্রকাশ্য শির্ক ও কুফুরীর গুনাহে লিপ্ত ছিল এবং এরই ওপর মারা গেছে।
“যালিমদের জন্য কোনো বন্ধু নেই এবং এমন কোনো শাফা‘আতকারী নেই যার শাফা‘আত গ্রাহ্য হবে”। [সূরা গাফির: ১৮]
২। এ ছাড়া যারা আল্লাহর দীনের মধ্যে বিকৃতি এনেছে অথবা এর মধ্যে পরিবর্তন করেছে তাদের অবস্থাও সম্পূর্ণ আশংকাজনক।
শাফায়াত পাবে শুধুমাত্র—
هِيَ نَائِلَةٌ إِنْ شَاءَ اللهُ مَنْ مَاتَ مِنْ أُمَّتِيْ لاَيُشْرِكُ بِاللهِ شَيْئاَ»
“আমার উম্মতের মধ্যে এই শাফা‘আত ইনশাআল্লাহ সে ব্যক্তি লাভ করবে যে আল্লাহর সাথে কোনো কিছুকে শরীক না করা অবস্থায় মারা গেছে।”সহীহ বুখারী ও মুসলিম।
৯। কার কাছে শাফায়াতের দু’আ করতে হবে?
উত্তরঃ ﴿إِيَّاكَ نَعۡبُدُ وَإِيَّاكَ نَسۡتَعِينُ ٥﴾ [الفاتحة: ٥]
“আমরা একমাত্র আপনারই ইবাদত করি এবং আপনার নিকটই সাহায্য চাই।”আল-ফাতিহা: ৫]
রাসূলুল্লাহ সা বলেছেন,
«إِذَا سأَلْتَ فَاسْئَلِ اللَهَ وَإِذَا اسْتَعَنْتَ فَاسْتَعِنْ بِاللهِ»
“যখন তুমি কিছু চাইবে তখন আল্লাহর নিকট চাইবে। আর যখন সাহায্য চাইবে তখন আল্লাহর কাছেই চাইবে।” তিরমিযী ২/১৭৫।
১০। শাফায়াতের দু’আ কিভাবে করতে বলা হয়েছে?
يَارَبِّ اجْعَلْنِيْ مِمَّنْ تُشَفٍّعُ فِيْهِمْ نَبِيكَ
“হে আমার রব! আমাকে ঐ সকল লোকদের অন্তর্ভুক্ত করে দিন যাদের জন্য আপনি আপনার নবীর শাফা‘আত কবুল করবেন।
اَللهم شَفِّعْهُ فِيَّ»
“হে আল্লাহ! আপনি তাকে আমার জন্য শাফা‘আতকারী বানিয়ে দিন”। তিরমিযী।
«وَاجْعَلْهُ لَنَا شَافِعًا وَّ مُشَفَّعًا» “
হে আল্লাহ! এ শিশুকে আমাদের জন্য শাফা‘আতকারী ও মঞ্জুরযোগ্য শাফা‘আতকারীতে পরিণত করুন”। সহীহ মুসলিম।
রাসূল সা বলেন-
“তখন আমি বলব, হে আমার রব! যে ব্যক্তি “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলেছে তার ব্যাপারে আমাকে (শাফা‘আতের) অনুমতি দিন। প্রতি-উত্তরে আল্লাহ তা‘আলা বলবেন “আমার শ্রেষ্ঠত্ব, বড়ত্ব, মহত্ব, ও ইজ্জতের কসম করে বলছি আমিই সেখান থেকে এদেরকে বের করে নিয়ে আসব যারা বলেছে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”।সহীহ মুসলিম, শরহু আকীদাতুত্ তাহাবিয়া: ২৩০।
Power point presentation