সালাতের রুকন,ওয়াজিব ও সুন্নাত

দয়াময় মেহেরবান আল্লাহর নামে

সালাতকে সহিহ ও পূর্নতা আনতে হলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেভাবে সালাত আদায় করেছেন, সেভাবেই পড়তে হবে সকল নারী ও পুরুষকেই। নিচে দেয়া লিঙ্কের ভিডিও থেকে বিস্তারিত জানার অনুরোধ রইলো।

নামাযের শর্তাবলী

১। নামাযীকে প্রকৃত মুসলিম হতে হবে

২। জ্ঞানসম্পন্ন হতে হবে। (পাগল বা জ্ঞানশূন্য হবে না)

৩। বিবেকসম্পন্ন হতে হবে। (সাত বছরের নিম্ন বয়সী শিশু হবে না)

৪। (ওযু-গোসল করে) পবিত্র হতে হবে

৫। নামাযের সঠিক সময় হতে হবে

৬। শরীরের লজ্জাস্থান আবৃত হতে হবে(সতর ঢাকতে হবে)

৭। শরীর, পোশাক ও নামাযের স্থান থেকে নাপাকী দূর করতে হবে

৮। কিবলার দিকে মুখ করতে হবে

৯। মনে  মনে নিয়ত করতে হবে

 

নামাযের আরকানসমূহ(রুকন)

১। (ফরয নামাযে) সামর্থ্য হলে কিয়াম (দাঁড়ানোর সময় দাঁড়িয়ে নামায পড়া)

২। তাকবীরে তাহ্‌রীমা

৩। (প্রত্যেক রাকআতে) সূরা ফাতিহা

৪। রুকু

৫। রুকু থেকে উঠে খাড়া হওয়া

৬। (সাত অংগে) সিজদাহ

৭। সিজদাহ থেকে উঠে বসা

৮। দুই সিজদার মাঝে বৈঠক

৯। শেষ তাশাহহুদ

১০। তাশাহহুদের শেষ বৈঠক

১১। উক্ত তাশাহ্‌হুদে নবী (সাঃ) এর উপর দরুদ পাঠ(কেউ কেউ এটাকে ওয়াজিব বলেছেন, কেউ কেউ বলেছেন সুন্নাত)

১২। দুই সালাম

১৩। সমস্ত রুকনে ধীরতা ও স্থিরতা

১৪। আরকানের মাঝে তরতীব ও পর্যায়ক্রম।

নামাযের ওয়াজিবসমূহ

১। তাকবীরে তাহ্‌রীমা ছাড়া সমস্ত তাকবীর

২। রুকুর তাসবীহ্‌

৩। (ইমাম ও একাকী নামাযীর জন্য) ‘সামিআল্লাহু লিমানহামিদাহ্‌’ বলা

৪। (সকলের জন্য) ‘রাব্বানা ওয়া লাকালহাম্‌দ’ বলা

৫। সিজদার তাসবীহ্‌

৬। দুই সিজদার মাঝে দুআ

৭। প্রথম তাশাহহুদ

৮। তাশাহহুদের প্রথম বৈঠক।

রুকন ও ওয়াজিব এর মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে-

রুকন আদায় না করলে সালাত হয় না। যদি কোন মুসাল্লি­ ইচ্ছা করে কোন রুকন ছাড়ে তবে তার সালাত বাতিল হয়ে যায়, আর অনিচ্ছায় ছাড়লে তা স্মরণ করার পর আদায় করতে হবে এবং সালাতের বাকী কার্যাদি সম্পন্ন করে সেজদা সাহু করবে।

আর যদি মুসল্লি ইচ্ছা করে ওয়াজিব ছেড়ে দেয়, তার সালাত বাতিল হয়ে যাবে। আর যদি ভুলে ছেড়ে দেয় সেজদা সাহুর মাধ্যমে ক্ষতি পুরণ দিবে।

সুন্নাত দুই প্রকার :

এক: কথ্য সুন্নত

যেমন, সালাত শুরুর দুআ বা সানা পড়া, আমীন বলা। সকল সালাতে প্রথম দুই রাকাআতে সুরা ফাতেহার পর কুরআনের যে কোন স্থান হতে তিলাওয়াত করা, সালাতে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ কামনা করা, বিশেষ করে সেজদায় বেশী বেশী করে দুআ করা এবং শেষ বৈঠকে বেশী বেশী করে প্রার্থনা করা। মাগরিব, এশার প্রথম দুই রাকাআত ফরযে আর জুমুআ ও ঈদের সালাতে ইমামের জন্য ক্বিরাত উচ্চস্বরে পড়া আর মুক্তাদির জন্য সব সময় ক্বিরাত নিম্নস্বরে পড়া।

দুই: অঙ্গ প্রত্যঙ্গের কার্যাদি

১-তাকবীরে তাহরীমার সময় দুই হাত কাঁধ বরাবর উঠানো। এছাড়া রুকুতে যাওয়া, রুকু হতে উঠা এবং প্রথম তাশাহুদের পর তৃতীয় রাকাআতের জন্য উঠার সময় দুহাত উঠানো।

২-দাঁড়ানো অবস্থায় ডান হাতকে বাম হাতের পিঠের উপর মিলিয়ে রাখা।

৩-সেজদার জায়গায় দৃষ্টি রাখা।

৪-রুকুতে দুই কব্জিকে দুই হাঁটুর উপর রাখা।

৫-সেজদার সময় প্রথমে দুই হাঁটু, তারপর দুই হাত, তারপর চেহারা মাটিতে রাখা।

৬-দুই সেজদার মাঝে প্রথম তাশাহুদ ও শেষ তাশাহুদে বসা অবস্থায় দুই হাতকে দুই উরুর উপর রাখা।

৭-বৃদ্ধা আঙ্গুল ও মধ্যমা দ্বারা বৃত্ত বানানো এবং তাশাহুদে দুআর সময় আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করা।

৮-প্রথম সালামে ডান দিক আর দ্বিতীয় সালামে বাম দিক মাথা ঘুরানো।

৯- প্রথম রাকাআত ও তৃতীয় রাকাআত শেষ করার পর বিশ্রাম নেয়ার জন্য বসা।