নারীর বিশেষ পবিত্রতা-২(নারীর প্রতি মাসে হায়েয অবস্থায় কি কি আমল করা যায়?)

 

আসসালামু’আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

মহান আল্লাহর অন্যতম একটি বিধানের মাঝে নারীর শারিরীক প্রয়োজনেই হায়েযের অবস্থান।এই হায়েয অবস্থায় নারীর সুস্থ্যতার জন্যই কিছু কাজকে সম্পূর্ণ নিষেধ করে দেয়া হয়েছে।

এই অবস্থায় সালাত ও সাওম ও স্বামীর সাথে মিলনকে হারাম করে দেয়া হয়েছে।শুধুমাত্র সাওমকে পরবর্তীতে কাজা আদায় করার কথা বলা হয়েছে।কিন্তু সালাতকে মাফ করে দেয়া হয়েছে।এই বিধানের আনুগত্য করাও প্রতিটি মুমিনার অবশ্য কর্তব্য।

এই সময় নারীর বিশ্রাম ও খাওয়া দাওয়া পুষ্টিকর ও পর্যাপ্ত হওয়া প্রয়োজন।

এই সময় যেহেতু সালাত মাফ তাই অনেকেই নিজেকে মহান রবের সান্নিধ্য থেকে দূরে রাখেন যা অন্য সময় প্রতি ওয়াক্তে হতো, এর ফলে শয়তানও সুযোগ পেয়ে যায় অনেকটা অলস ও গাফিল করে ফেলার জন্য।আবার অনেকেই মনে করেন কুর’আন পড়া যাবে না,ফলে খালিস্থানে জায়গা দখল করতে আসে মহান রব থেকে দূরে রাখার যত অপসংস্কৃতি। টিভিসেটের সামনে ও গানের জগতে হারিয়ে যায়, নখে নেইল পালিশ দিতে দিতে আরো আকর্ষনীয়ভাবে সাজগোজ করে বাইরে ঘুরে বেড়াতে যান নিশ্চিন্তে কারন সালাত নেই অযুর প্রয়োজন নেই ইত্যাদি। মহান আল্লাহ আমাদের মাফ করুন।

আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন এই সাময়িক বিরতি মহান রবেরই দেয়া। এখানেও যাচাই হচ্ছে নারী কি করে?মৃত্যর সময়কে কিন্তু এই সময় নিষেধ করা হয় নাই,এই অবস্থায়ও মৃত্যর ফেরেশতার মুকাবেলায় আসতে হতে পারে এবং যেতে হবে শেষ পরিনতিতে। তাই সর্বাবস্থায় মহান রবের যিকিরে থাকার সর্বাত্মক চেষ্টায় থাকা প্রয়োজন। মহান আল্লাহ আমাদের প্রচেষ্টাকে দেখবেন।

এবার আসি কি কি আমল করা যা বিষয়ে-

এককথায় বলতে গেলে সালাত ও সাওম ও স্বামীর সাথে মিলন ছাড়া আর সকল ভালো কাজই করার অনুমোদন আছে।

  • কুর’আন তেলাওয়াত,অধ্যয়ন, মুখস্ত করা যাবে-এই ক্ষেত্রে অধিকাংশ স্কলার্সদের মত হলো মুসহাফ(যা শুধুমাত্র আরবী সম্বলিত আসল কুর’আন)হায়েয বা অপবিত্র অবস্থায় ধরতে পারবে না। কিন্তু প্রয়োজনে কোন গ্লোভস বা কাপড় দিয়ে ধরতে পারবে।
  • এখন আমাদের এই ডিজিটাল যুগে মুবাইল কম্পিউটার টেব বা বিভিন্ন তাফসীর থেকে সহজেই ধরে কুর’আন অধ্য্যন করা যায়। যেহেতু সালাতের সময়টি নারীর জন্য একটি সুযোগ বেশী করে (প্রয়োজনে সালাতের ওয়াক্তের সময়ে )কুর’আন অধ্যয়ন করতে পারে।
  • এই সময়ে বিষয়ভিত্তিক কুর’আন ও হাদীসের বই নিয়ে নোট করতে সময় দিতে পারেন।
  • নির্দিষ্ট কোন দু’আ তা কুর’আন বা হাদীস থেকে হতে পারে মুখস্থ করার উদ্যোগ নেয়া।মুবাইলে সেটি বার বার শুনা।
  • যেকোন অবস্থায় সকাল ও বিকালের যিকিরসমূহ করা ও প্রতি সময়েই দু’আ দরুদে লিপ্ত থাকা।
  • যেকোন কুর’আনিক আলোচনা বা মজলিশে শরিক হওয়া
  • ইউটিউবে স্কলার্সদের লেকচার শুনা,প্রতিদিন ছোট একটি লেকচার শুনার সুযোগ করা।
  • দান সাদাকা করা।
  • নিজের পরিচ্ছন্নতার ব্যপারে সুনজর রাখা।
  • বিবাহীতারা স্বা্মী থেকে দূরে না থেকে কাছেই অবস্থান করার মন রাখা এবং যতটুকু অনুমোদন ততটুকু আনন্দ নিজে লাভ ও স্বা্মীকেও দেয়া,তবে সঙ্গযমের সামর্থ্যের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন হারামে লিপ্ত না হয়ে যায়,সেই অনুযায়ী হিকমাত অবলম্বন করা।
  • মন মেজাজ শান্ত ও স্থির থাকার জন্য বই পড়া পবিত্র ব্যক্তিদের।
  • মহান রবের কাছে বেশী বেশী ইস্তেগফার ও ক্ষমা প্রার্থনা করা ও সাহায্য চাওয়া।
  • পরিবারে অন্য সদস্যকে দিয়ে কুর’আন বা হাদীস বা সাহাবাদের জীবনী নিয়ে আলোচনা করানো।
  • মহান আল্লাহ আমাদের সচেতন হওয়ার তাওফিক দান করুন। হায়েয শেষ হওয়ার সময়টির ব্যপারে বিশেষ নজর রাখা যে কখন পবিত্র হয়ে যাচ্ছেন,সেই ওয়াক্তের সালাত আদায় করা যাবে কিনা!

যথাসময়ে পবিত্র হওয়ার জন্য ফরয গোসলের নিয়ম অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে অনুসরন করা।

মহান আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করে মুমিনা হিসেবে কবুল করে নিন।