শিষ্ঠাচার সংক্রান্ত হাদীস-৫৭ (অহংকার-৪)

রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] অহংকারীদের দুনিয়াতে শাস্তির ঘোষণা দেন।

عن سلمة بن الأكوع قال:« قال رسول الله صلى الله عليه و سلم  لَا يَزَاُل الرَّجُلُ يَذْهَبُ بنِفْسِهِ حَتَّى يُكْتَبَ فِي الَّجَبارِينَ فَيُصيبُهُ مَا أَصَابَهُمْ»

অর্থ, একজন মানুষ সর্বদা অহংকার করতে থাকে। অত:পর একটি সময় আসে তখন তার নাম জাব্বারিনদের খাতায় লিপিবদ্ধ করা হয়, তখন তাকে এমন আযাব আক্রান্ত বা গ্রাস করে, যা অহংকারীদের গ্রাস করেছিল। তিরমিযি: ২০০০  হাদীসটি হাসান।

 

সালামাহ ইবনুল আকূ’ রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন এক লোক রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর দরবারে বাম হাত দিয়ে খাওয়া শুরু করলে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে বললেন, তুমি ডান হাত দিয়ে খাও। উত্তরে লোকটি বলল, আমি পারছিনা! তার কথার প্রেক্ষাপটে রাসূল সা. তাকে বলল, তুমি পারবে না?  মূলত: রাসূল সা. এর কথার অনুকরণ করা হতে তাকে তার অহংকারই বিরত রাখে। বর্ণনাকারী বলেন, লোকটি আর কখনোই তার হাতকে তার মুখ পর্যন্ত উঠাতে পারেনি। মুসলিম ২০২১

ইমাম নববী রহ. বলেন, এ হাদিসটি দ্বারা প্রমাণিত হয়, যে ব্যক্তি কোন প্রকার অপারগতা ও যুক্তি ছাড়া শরিয়তের বিধানের বিরোধিতা করে তার জন্য বদদোয়া করা জায়েয আছে। এ লোকটিকে তার অহংকার রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর অনুকরণ ও তার নির্দেশ মানা হতে বিরত রাখে, তার অহংকারের তড়িৎ শাস্তি হল, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার অক্ষমতার জন্য বদদোয়া করেন। আল্লাহ তা‘আলা তার নবীর বদদোয়া কবুল করেন এবং সাথে সাথে লোকটি আক্রান্ত হয়। ফলে সে আর কখনোই তার হাতকে তার মুখ পর্যন্ত উঠাতে সক্ষম হননি।

ঐ সব অহংকারী যাদেরকে তাদের অহংকার সত্যের অনুকরণ করা হতে নিষেধ করে, তারা কি ভয় করে না যে, আল্লাহ তা‘আলা তাদের সে সব নেয়ামতসমূহ ছিনিয়ে নেবেন যে সব নেয়ামতের তারা নাফরমানি করে এবং অহংকার করে।

যারা অন্যায়ভাবে যমীনে অহঙ্কার করে আমার আয়াতসমূহ থেকে তাদেরকে আমি অবশ্যই ফিরিয়ে রাখব। আর তারা সকল আয়াত দেখলেও তাতে ঈমান আনবে না এবং তারা সঠিক পথ দেখলেও তাকে পথ হিসাবে গ্রহণ করবে না। আর তারা ভ্রান্ত পথ দেখলে তা পথ হিসাবে গ্রহণ করবে। এটা এ জন্য যে, তারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে এবং সে সম্পর্কে তারা ছিল গাফেল। (সূরা আল-আরাফ: ১৪৬)