শিষ্ঠাচার সংক্রান্ত হাদীস—২৪ (মেহমানদের ব্যপারে-৯)

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সবচেয়ে মারাত্মক অপরাধ কি? তিনি উত্তরে বললেন,

“আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা, যে আল্লাহ তোমাকে সৃষ্টি করেছেন।” আমি বললাম, তারপর মারাত্মক অপরাধ কোনটি? তিনি বললেন, “তোমার সন্তান তোমার সাথে খাবে এ ভয়ে তুমি তাকে হত্যা করলে।” আমি বললাম, তারপর মারাত্মক অপরাধ কোনটি? তিনি বললেন, “তুমি তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে ব্যভিচার করলে।” [বুখারী, মুসলিম]

 

আজকের সমাজের চিত্রে দেখা যায়, প্রতিবেশী পরিবারের সাথে পর্দার নিয়ম না মানার কারনে এতো বেশী মেলামেশা হয়ে যায় যখন এক পরিবারের স্ত্রী বা স্বামী অন্য পরিবারের স্বা্মী বা স্ত্রীর সাথে অবৈ্ধ সম্পর্ক গড়ে উঠে। এর সাথে বর্তমান দেশীয় বা বিজাতীয় সিনেমা নাটকের পরকীয়া ও অবৈধ সম্পর্কের মহড়া দেখে দেখে আরো বেশী সমাজের নারী পুরুষ বয়সকে অতিক্রম করেই এই ধরনের হারাম কাজে লিপ্ত হয়ে যাচ্ছে। সহপাঠি, কলিগ ইত্যাদি বিভিন্ন সম্পর্কের অতিরিক্ত শরীয়াবিরোধী মেলামেশার কারনে বিভিন্ন ঘটনা ঘটে যাচ্ছে যা পরিবারগুলোকে ভেংগে দিচ্ছে, সাথে সাথে সন্তানরা হয়ে উঠছে একটি Broken familyএর সদস্য। সমাজ ব্যবস্থা ভেংগে যাচ্ছে। একদিকে স্বামী অন্য নারীর সাথে গল্প গুজব-বেড়ানো,বাইরে খাওয়া বা মুবাইলে চ্যাট করে যাচ্ছেন অন্যদিকে স্ত্রীও একই কাজ করে যাচ্ছেন-দুজন দুজনকে হারামে লিপ্ত থেকে প্রতারনা করে যাচ্ছেন, ফলে এক ছাঁদের নীচে অবস্থান করেও সুন্দর সম্পর্কের দাবী রক্ষা করতে পারছেন না। কোন ক্ষেত্রে একজন এই ধরনের কাজে লিপ্ত থেকে সংসারে অশান্তির পরিবেশ করে যাচ্ছেন।

হাদীসে প্রতিবেশীর সাথে এই ধরনের অবৈ্ধ সম্পর্ককে মারাত্মক গুনাহ হিসেবে বেশী জোর দেয়া হয়েছে যেহেতু হক আদায়ের লক্ষ্যে বেশী যোগাযোগ প্রতিবেশীর সাথে হয়। তাই এইক্ষেত্রে প্রতিবেশী সকল পুরুষ ও নারী সদস্যদের শরীয়ার পর্দা ব্যবস্থাকে মেনে চলতে হবে। বিপরীত লিংগের সাথে হাসি তামাশা করার কোন সুযোগ নেই এমনকি অপ্রয়োজনীয় কথা বলতে ও নিষেধ করা হয়েছে। প্রয়োজনে অন্য একজন নিজের মাহরাম ব্যক্তির উপস্থিতিতে প্রয়োজনীয় কথাটুকুই স্বাভাবিক ভাবে বলতে পারেন।

মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন। প্রতিটি শয়তান জীন ও মানুষ নর-নারী যারা অন্যের সংসার ভাঙ্গাতে ব্যস্ত তাদের থেকে থেকে মুসলিম পরিবারগুলোকে হেফাজত করুন